বাঁ দিকে, ছেলের চিকিৎসায় মুশকিলের কথা জানাচ্ছেন মহিলা। ডান দিকে, সভায় কর্তারা। নিজস্ব চিত্র।
স্কুলের জায়গা দখল থেকে থানা ভাঙচুরের ধুন্ধুমার— পরপর ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল আউশগ্রামের একাধিক গ্রামে। পুলিশ-প্রশাসনের তরফে মাইক নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার কথা বলা হলেও সরস্বতী পুজোর দিনের ফাঁকা স্কুল বুঝিয়েছিল আতঙ্ক রয়েই গিয়েছে। এ বার ভরসা দিতে আদিবাসী পাড়ায় এসে স্থানীয় মানুষজনের সমস্যা, অভিযোগ, দাবিদাওয়া শুনলেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা।
রবিবার আউশগ্রামের দোখলগঞ্জ আদিবাসী পাড়ায় কর্তাদের দেখে একে একে এগিয়ে আসেন ঈশা শেখ, সোম হাঁসদারা। কেউ পানীয় জলের অভাব, কেউ খাদ্য সুরক্ষায় কার্ড না পাওয়ার কথা জানান। সাবমার্সিবল পাম্প বসানোর ব্যবস্থা করার মতো যতটা সম্ভব পাশে দাঁড়ান প্রশাসনের কর্তারাও। জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডুর দাবি, ‘‘ মানুষের কাছে এসে তাঁরা কি অবস্থায় আছেন তা জানার চেষ্টা করছি আমরা। সমাজে সমস্যা হয়, কিন্তু আমরা সমাজের ভিতরে ঢুকে উন্নয়নের মাধ্যমে সেই সমস্যার সমাধান করছি।’’
দিন দশেক আগেই আউশগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার বেধেছিল। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান আদিবাসীরা। পরের দিন ভাঙচুর হয় আউশগ্রাম থানা। ধরপাকড়ে আতঙ্ক ছড়ায় আশপাশের গ্রামে। স্কুলে পড়ুয়াদের সংখ্যা কমে যায়। এমনকী, পোলিও সেন্টারেও খুব কম শিশু হাজির ছিল বলে স্বাস্থ্যকর্মীদের দাবি। পরে পুলিশ প্রশাসনের তরফে এলাকায় স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে মাইকে করে প্রচার চালানো হয়। বাড়ি বাড়ি কড়া নেড়ে দোকানপাট খোলার কথা বলা হয়। তবু একেবারে স্বাভাবিক হয়নি আউশগ্রামের ওই গ্রামগুলি।
এ দিন আউশগ্রামের বাসুদেব মেটেরা সরকারি প্রকল্পে বাড়ি না পাওয়ার অভিযোগ জানান। ব্যক্তিগত নানা সমস্যা তুলে ধরেন দোখলগঞ্জ আউশগ্রামের মুনি হেমব্রম, মুংলি বেসরারা। দোখলগঞ্জের মুনী হেমব্রম জানান, তাঁর ছেলের মাথায় জল হয়েছে। চিকিৎসার জন্য কলকাতা নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু টাকা নেই। তাঁকে সাহায্যের আশ্বাস দেন কর্তারা।
জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, ‘‘এলাকার পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক হয়, স্কুলে পড়াশোনার পরিবেশ দ্রুত ফিরে আসে তার জন্য প্রশাসন থেকে সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আউশগ্রাম ১-এর বিডিও চিত্তজিৎ বসু, মহকুমাশাসক মুফতি শামিম সওকত, আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার, সভাপতি আয়েশা খাতুন, জেলা পরিষদের সদস্য সেখ সালেক রহমান, সহ সভাপতি মৃণালকান্তি রায় প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy