জিটি রোডে সিসিটিভি ক্যামেরা। নিজস্ব চিত্র
মাত্র পাঁচশো মিটারের মধ্যে বর্ধমান শহরের ভিতরে দু’টি দুর্ঘটনায় দু’জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। এই পরিস্থিতিতে গোলাপবাগ, নবাবহাট মোড়-সহ জিটি রোড লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ, ওই সব জায়গায় একসময় ‘সিগন্যাল’ ব্যবস্থা থাকলেও এখন তা নেই। রাস্তা চওড়া হওয়ার ফলে যানবাহনের গতি বেড়েছে। বেড়েছে, ‘বেপরোয়া’ গাড়ি চলাচল। পুলিশ বা সিভিক ভলেন্টিয়ারদের পক্ষে সেগুলিকে আটকানো সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে ‘সিগন্যালিং’-সহ সুষ্ঠু ট্র্যাফিক-ব্যবস্থাপনের জন্য আর্জি জানাচ্ছেন শহরবাসী। এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছে জেলা পুলিশ।
নবাবহাট এলাকার শেখ সোলেমান, গোপাল মুদিদের বক্তব্য, “জিটি রোড থেকে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ওঠার মুখে সিগন্যালিং পোস্ট রয়েছে। তার পরেও যে ভাবে বীরভূমগামী গাড়িগুলি বাঁক নেয়, তাতে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। নবাবহাটের মোড়েও সিগন্যালিং পোস্ট তৈরি করা হোক।’’ একই দাবি গোলাপবাগের মহম্মদ সালেখ, ঋতম রায়দেরও। তাঁরা বলেন, “গোলাপবাগ মোড়ে সিগন্যালিং ব্যবস্থা ছিল। রাস্তা সংস্কার করার সময় পূর্ত দফতর ওই পোস্টটি উপড়ে ফেলে।’’ জেলার ডিএসপি (বর্ধমান সদর) শৌভিক পাত্র জানান, ওই এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। নতুন করে সিগন্যালিং পোস্ট লাগানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পূর্ত দফতরকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, শহর জুড়ে ট্র্যাফিক ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। গোটা শহরের ট্র্যাফিক পুলিশের দায়িত্বে ছিলেন একজন মাত্র অফিসার ইনচার্জ। এখন আরও একজনকে ওই পদে নিয়োগ করা হয়েছে। পারবীরহাটার, কেশবগঞ্জ চটিতে ট্র্যাফিক পোস্ট তৈরি করা হয়েছে। কেশবগঞ্জ চটি থেকে স্টেশন মোড়, গোলাপবাগ, নবাবহাট, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মতো এলাকায় বিশেষ নজর রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “শহরের ভিতর গাড়ির চাপ বাড়ছে। লোকজনও বাড়ছে। তাই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ট্র্যাফিক ব্যবস্থা মাঝে-মধ্যে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে। নতুন উড়ালপুল হওয়ার ফলে যান নিয়ন্ত্রণ আরও সুষ্ঠু ভাবে করা দরকার। তাই এ সব উদ্যোগ।’’ পাশাপাশি, ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য পর্যাপ্ত কর্মীও নিয়োগ করা হয়েছে বলে পুলিশকর্তাদের দাবি। তাঁরা জানান, প্রতিটি পোস্টে ছ’জন করে অফিসার, কনস্টেবল, হোমগার্ড, সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ মোট ১২০ জন করে রয়েছেন। জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, “অনেক থানাতেও এত সংখ্যায়পুলিশকর্মী নেই।’’
সেই সঙ্গে শহরে আরও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কথা জানিয়েছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই শহরের জিটি রোডের একটা বড় অংশে এবং তেলিপুকুর, বিবেকানন্দ কলেজ মোড়, সোনাপট্টির মতো এলাকায় তা রয়েছে। এর ফলে বেশ কিছু অপরাধেরও কিনারা করা সম্ভব হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোলাপবাগ, খাগড়ামোড়, লক্ষ্মীপুর, কলেজ মোড়, বাজেপ্রতাপপুর, রেল উড়ালপুলের মতো আরও ১০-১২টি জায়গায় নতুন করে ৬০টির মতো সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy