Advertisement
E-Paper

কর্তার ওয়ার্ডে কি জিতবেন গিন্নি, প্রশ্ন

শাসকদলের একাংশই বলছেন, দুর্গাপুর পুরভোটে তাঁদের লড়াইটা বিরোধীদের সঙ্গে যতটা, তার চেয়ে বেশি নিজেদের সঙ্গেই। ৪৩-এর মধ্যে ৩১টি ওয়ার্ড তৃণমূলের দখলে।

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৭ ০২:০৫
দুর্গাপুর পৌরসভা।

দুর্গাপুর পৌরসভা।

বছর দেড়েক আগেও শিল্পশহরে তাঁর প্রভাব ও দাপট নিয়ে প্রশ্ন তোলার কেউ ছিলেন না। তিনি তখন একাধারে দুর্গাপুরের মেয়র ও বিধায়ক। দুর্গাপুরে পুরভোটের আগে সেই তৃণমূল নেতা অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের সেই দাপট আগের মতো নেই। ৪৪ হাজারেরও বেশি ভোটে হেরে বিধায়ক পদ গিয়েছে গত বছর। পুরভোটেও তিনি প্রার্থী নন।

বিধানসভা ভোটের আগে অপূর্ববাবুর বিরুদ্ধে বিরোধীদের প্রধান অভিযোগ ছিল, তিনি পার্টটাইম মেয়র। ভোট প্রচারে শহরে এসে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই অভিযোগকে স্বীকৃতি দিয়ে বলে যান, ‘অভিমান হলে অপুকে চড় মারুন! কিন্তু ভোটে জেতান’। নিন্দুকদের মতে, সেদিনই অপূর্ববাবুর হার নিশ্চিত হয়ে যায়। তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রে থাকা ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৫টিতেই হারেন তিনি। তবু, দুর্গাপুর শহরের ভোটে তিনি না থেকেও আছেন।

অথচ, বিধানসভায় হারের পরে প্রবীণ ওই নেতাকে ব্রাত্য করে দল। কিন্তু, পুরভোটে যে ভাবে তাঁর ঘনিষ্ঠেরা নির্দল হিসাবে মনোনয়ন তুলতে শুরু করেন, তাতে প্রমাদ গোনে তৃণমূল। ড্যামেজ কন্ট্রোলে পাঠানো হয় মন্ত্রী স্বপন দেবনাথকে। অপূর্ববাবুর সঙ্গে তাঁর বৈঠকে বরফ গলে। প্রচারে বেরোন বিদায়ী মেয়র। জল্পনার অন্য কারণ, অপূর্ববাবুর ওয়ার্ডে এ বার প্রার্থী তাঁরই স্ত্রী অনিন্দিতাদেবী। বিধানসভা ভোটে সেই ২২ নম্বর ওয়ার্ডে হাজারের বেশি ভোটে পিছিয়ে ছিলেন অপূর্ববাবু। কর্তার ওয়ার্ড পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে গিন্নি কি সফল হবেন, চর্চা শহরে।

শাসকদলের একাংশই বলছেন, দুর্গাপুর পুরভোটে তাঁদের লড়াইটা বিরোধীদের সঙ্গে যতটা, তার চেয়ে বেশি নিজেদের সঙ্গেই। ৪৩-এর মধ্যে ৩১টি ওয়ার্ড তৃণমূলের দখলে। এ বার পরিস্থিতি শাসকদলের পক্ষে বিধানসভা ভোটের চেয়েও অনুকূল। বাম-কংগ্রেস যে সমঝোতা গত বছর এই শিল্পনগরীতে তৃণমূলের ভোটে ধস নামিয়েছিল, সেই সমঝোতাও এ বার জমাট বাঁধেনি! অপূর্ববাবু হেরেছিলেন যাঁর কাছে, সেই কংগ্রেস বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের স্ত্রী তৃণমূলে নাম লিখিয়ে পুরভোটে প্রার্থী হয়েছেন। বিশ্বনাথবাবুর তৃণমূলে যোগ দেওয়াকে ঘিরেও জল্পনা শহরে। শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-ও তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়েছে।

তার উপরে রয়েছে বিরোধীদের দুর্বল সংগঠন ও প্রচার। অনেকে নিজের ওয়ার্ডের সিপিএম বা কংগ্রেস প্রার্থীর নামও জানেন না! এত কিছুর পরেও কিন্তু রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলায় দলের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস প্রচারে বলেন, ‘‘তৃণমূলকে ফের জয়ী করুন। মডেল শহর হিসাবে দুর্গাপুরকে গড়ে তুলবই।’’ শহরবাসী ও বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন, তা হলে গত পাঁচ বছরে কী কাজ হল? জবাব কিন্তু শাসকদলের কাছে নেই। সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের দাবি, সবাই নিজের ভোট নিজে দেওয়ার সুযোগ পেলে তৃণমূলের হার নিশ্চিত। আর বিজেপি? সে দলের একমাত্র কাউন্সিলর বছর দুয়েক আগে তৃণমূলে গিয়েছেন। বিধানসভা ভোটে সব ওয়ার্ডেই তৃতীয় হয়েছিল বিজেপি। পুরভোটে অপ্রিয় প্রশ্নের মুখেও পড়তে হচ্ছে তাদের। এএসপি কারখানার বিলগ্নিকরণ ঠেকাতে বা বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানাগুলি খোলার ব্যাপারে উদ্যোগী হননি পাশের আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়— অভিযোগ বাম-তৃণমূলের। বাবুলকে সে প্রশ্ন করতেই তিনি জানতে চাইলেন, আপনাকে কি তৃণমূল পাঠিয়েছে?

Durgapur Municipal Election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy