Advertisement
E-Paper

TMC: ‘বিদায়ী কাউন্সিলরদের বাড়িতেই জিনিসপত্র’

উজ্জ্বলবাবুর এই মন্তব্যের কথা জানাজানি হতেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিরোধীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২১ ০৬:২৮
রবীন্দ্র ভবনে বৈঠক।

রবীন্দ্র ভবনে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র

সাধারণ মানুষের জন্য নির্ধারিত জিনিসপত্র ব্যবহার করছেন বিদায়ী কাউন্সিলরদের একাংশ। শনিবার আসানসোলের রবীন্দ্র ভবনের দলীয় বৈঠকে কার্যত এই ভাষাতেই তোপ দাগলেন তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। বিরোধীদের দাবি, উজ্জ্বলবাবু আসলে এই মন্তব্য করে দলেরই বিদায়ী কাউন্সিলরদের ‘দুর্নীতির
কথা’ বললেন।

তৃণমূল সূত্রে খবর, এ দিন আসানসোল মহকুমার দলের বিভিন্ন স্তরের কার্যনির্বাহী সদস্য এবং নেতৃত্বদের নিয়ে মূলত আসানসোল পুর-ভোটের দিকে তাকিয়ে বৈঠক করেন জেলা নেতৃত্ব। দলীয় নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি, উজ্জ্বলবাবু সেখানেই বলেন, ‘‘বহু বিদায়ী কাউন্সিলর পুরসভা থেকে সাধারণ মানুষের জন্য নির্ধারিত জিনিসপত্র তুলে এনে নিজের বাড়িতেই রাখছেন। বাসিন্দাদের মধ্যে তা বিতরণ না করে নিজেরা ব্যবহার করছেন।’’ সংশ্লিষ্ট এলাকার তালিকাও তিনি দিতে পারেন বলে দাবি করেন। তবে পরে, নির্দিষ্ট করে কোন-কোন বিদায়ী কাউন্সিলরদের দিকে তিনি আঙুল তুলেছেন, তা জানতে চাওয়া হলে উজ্জ্বলবাবু মন্তব্য করতে চাননি।

এ দিকে, বিষয়টি নিয়ে সরাসরি মন্তব্য না করলেও বৈঠকে থাকা মন্ত্রী তথা আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটকের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দুর্নীতিতে জড়িত লোকজনকে দল থেকে শত যোজন দূরে রাখতে হবে।’’

ঘটনাচক্রে, গত বিধানসভা ভোটে পুরসভার ১০৬টি ওয়ার্ডের ৬৬টিতে বিজেপির কাছে হেরেছিল তৃণমূল। ভোটের রণকৌশল, অভ্যন্তরীণ কর্মসূচির বাস্তবায়ন এবং টিকিট বণ্টন— এই তিনটি বিষয় নিয়েই এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর, বৈঠকে গত বিধানসভা ভোটের প্রচার, দলের ফল, বিদায়ী কাউন্সিলরদের ভূমিকা— এ সব প্রসঙ্গ বার বার উঠে আসে আলোচনায়। আগামী পুর-ভোটে টিকিট বণ্টনের বিষয়টি নিয়েও চর্চা হয়। আসানসোল পুর-এলাকার দলের আহ্বায়ক ভি শিবদাসন প্রকাশ্যেই বলেন, ‘‘পুর-ভোট এলেই কয়েকজন নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ হয়ে টিকিট পাওয়ার চেষ্টা করেন। অনেকে তাতে সফলও হন। কিন্তু জেতার পরে দল নয়, বরং নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করেন। এ বার সে সুযোগ নেই। সব দিক দেখে ও কাজ খতিয়ে দেখে টিকিট দেবেন রাজ্য নেতৃত্ব।’’ এর পরেই উজ্জ্বলবাবু বিদায়ী কাউন্সিলরদের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। গত বিধানসভা ভোটে পুর-এলাকায় তৃণমূলের ‘ফল’ প্রসঙ্গেও তিনি বক্তব্য রাখেন। তাঁর বিশ্লেষণ: ‘‘বিধানসভা ভোটে পুর-এলাকায় খারাপ ফলের জন্য কাউন্সিলরদের একাংশ দায়ী। ভোট-প্রচারে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই কাউন্সিলরদের নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন।’’ এর পরেই সাধারণ মানুষের জন্য নির্ধারিত জিনিসপত্র সংক্রান্ত ওই মন্তব্য করেন উজ্জ্বলবাবু।

উজ্জ্বলবাবুর এই মন্তব্যের কথা জানাজানি হতেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিরোধীরা। বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘তৃণমূলের কাউন্সিলর এবং ওঁদের পুর-বোর্ড যে দুর্নীতিগ্রস্ত, তা ওঁদের নেতাই স্বীকার করে নিলেন।’’ একই কথা বলছেন সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরীও। যদিও, বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিধান উপাধ্যায়, দলের নেতা তথা বিদায়ী কাউন্সিলর অভিজিৎ ঘটকেরা বলেন, ‘‘আমাদের কোথাও ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকলে, তা আমরা স্বীকার করি। সংশোধন করে নিই। দুর্নীতির বিষয়ে বিজেপি, সিপিএমের কিছু না বলাই ভাল।’’

এ দিকে, ২০২৪-র লোকসভা ভোটে ‘বিপুল সাফল্য’ মিলবে বলেও দাবি করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। মলয়বাবু বলেন, ‘‘২০২৪-এ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেশের প্রধানমন্ত্রী করার লক্ষ্যে আমাদের লড়তে হবে।’’ যদিও, বিজেপি নেতা শিবরাম বর্মণের প্রতিক্রিয়া, ‘‘তৃণমূল দিবাস্বপ্ন দেখছে। বাস্তবের সঙ্গে এ সব দাবির কোনও যোগ নেই।’’

TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy