Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

রায়নায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পড়ল পোস্টার

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ জমা পড়েছে শিক্ষা দফতর এবং ব্লক প্রশাসনের কাছে।

এই সেই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র

এই সেই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়না শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৬
Share: Save:

স্কুলের সম্পত্তি বিক্রি করে দেওয়ার ‘চক্রান্ত’ করছেন প্রধান শিক্ষক। এমনই অভিযোগে গত রবিবার থেকে রায়নার একটি স্কুলের আশপাশে পোস্টার দেখা যাচ্ছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। পোস্টারের তলায় লেখা, ‘প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী’রা। যদিও প্রধান শিক্ষক পুরো বিষয়টিকেই ‘চক্রান্ত’ বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ জমা পড়েছে শিক্ষা দফতর এবং ব্লক প্রশাসনের কাছে। সেখানে স্কুল পরিচালন থেকে আর্থিক অনিয়মের নানা অভিযোগ রয়েছে। ওই অভিযোগেই বলা হয়েছে, স্কুলের জমি বিক্রি করার জন্য একটি ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। আপাতত স্কুলের ‘দায়িত্বে’ থাকা শিক্ষক মৃণালকান্তি নন্দী বলেন, ‘‘ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপন প্রকাশ্যে আসার পরেই প্রধান শিক্ষককে নিয়ে ওই সব পোস্টার পড়েছে বলে মনে হয়।’’ ওই পোস্টারে রায়নার ‘শুভবুদ্ধিসম্পন্ন’, ‘স্কুলপ্রেমী’ মানুষদের প্রধান শিক্ষকের সম্পত্তি বিক্রির চক্রান্তের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার ডাক দেওয়া হয়েছে। যদিও প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, ‘‘পুরোটাই চক্রান্ত। প্রধান শিক্ষক স্কুলের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারেন না কি? বিষয়টি নিয়ে যথাযথ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই স্কুলে এর আগে দু’টি অশান্তির ঘটনা সামনে আসে। স্কুল লাগোয়া পাড়ার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, গত ১৯ অগস্ট স্কুল লাগোয়া একটি খড়ের পালুইয়ের পাশে কয়েক জন পড়ুয়া নেশা করছিল। তা থেকে পালুইয়ে আগুন ধরে। পালুই পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সে দিনই একদল লোক প্রধান শিক্ষককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বলে জানা গিয়েছে। পরদিন ৩৫ হাজার টাকা দাবি করে প্রধান শিক্ষককে স্কুলের ভিতরে তাড়াও করেন ওই সব লোকজন, জানা যায় স্কুল সূত্রেই। ২১ অগস্ট থেকে নিরাপত্তার ‘অভাবের’ কথা প্রশাসনকে জানিয়ে স্কুলেও যাচ্ছেন না ওই প্রধান শিক্ষক।

ওই স্কুলেরই প্রাক্তন এক শিক্ষিকা হস্টেলে থাকতেন। স্কুল সূত্রে জানা যায়, হস্টেলে থাকলেও ভাড়া না দেওয়ায় ওই শিক্ষিকার অবসরকালীন সুবিধা আটকে রেখে ভাড়া বাবদ ২ লক্ষ ১৩ হাজার ১২৬ টাকা দাবি করেন প্রধান শিক্ষক। আইনজীবীরা জানান, বিষয়টি নিয়ে মামলায় হাইকোর্ট শিক্ষিকার পক্ষে রায় দেয়। স্কুল ফের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করে। প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ, “পোস্টারগুলি মারার সময়ে ওই শিক্ষিকার আত্মীয়েরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন বলে খবর পেয়েছি।’’ এই দুই ঘটনার সঙ্গে পোস্টার সাঁটানোর কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা নিয়েও চর্চা রয়েছে এলাকায়। তবে ওই শিক্ষিকার ঘনিষ্ঠ জনদের দাবি, আদালতের রায়ে স্কুল হেরে গিয়েছে। ফলে, শিক্ষিকার অবসরকালীন প্রাপ্যের টাকা মেটাতে স্কুলের সম্পত্তি বিক্রির ‘চক্রান্ত’ করা হচ্ছিল।

পোস্টারের বিষয় নিয়ে স্কুল পরিদর্শক (রায়না ১) অতনু হাজরা জানান, ওয়েবসাইটে এমন বিজ্ঞাপন দেখা গিয়েছে। কিন্তু কে বা কারা দিয়েছেন, কেন দিয়েছেন, তা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। এসআই-এর পাঠানো তথ্য খতিয়ে দেখে বিষয়টি নিয়ে বলতে পারবেন বলে জানান জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শ্রীধর প্রামাণিক। বিডিও (রায়না ১) সৌমেন বণিক অবশ্য বলেন, “আগামী সপ্তাহে সব পক্ষকে ডেকে সত্য উদ্‌ঘাটন করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Raina Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE