মাথা সামলে। নৌকা ছাড়লেই প্রতি বার এমনটা বলা যেন দায়িত্ব মাঝি-মল্লাদের। কারণ, একটু অসাবধান হলেই কাটোয়ার ফেরিঘাটে দীর্ঘদিনের অব্যবহৃত জেটিতে ঠোক্কর লেগে বিপত্তি ঘটতে পারে। অথচ ফি দিন, এই ঘাট দিয়ে পূর্ব বর্ধমান ও নদিয়ার বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, বারবার বলার পরেও জেটিটি সরানো বা চালু করা, কোনও বিষয়েই পদক্ষেপ করেনি প্রশাসন।
প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে রাজ্য পরিবহণ দফতর যাত্রী পারাপারের সুবিধার জন্য ভাগীরথী নদী থেকে মাত্র ছ’ফুটের মতো উচ্চতায় ওই একশো ফুট লম্বা জেটিটি চালু করে। উদ্বোধন করেন তৎকালীন ক্রীড়া, পরিবহণ ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী। কিন্তু তার পরেও নানা কারণে জেটিটি চালু হয়নি। বর্তমানে জেটির উপরের পাটাতনের কিছু অংশ ভেঙে গিয়েছে।
ফেরিঘাটের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা জানান, ফি দিন সকাল ৭টা থেকে রাত পর্যন্ত ফেরিঘাট দিয়ে কাটোয়া ও নদিয়ার বল্লভপাড়ায় প্রায় হাজার তিনেক যাত্রী পারাপার করেন। প্রতি ১৫ মিনিট অন্তর একটি করে নৌকা ছাড়ে ফেরিঘাট থেকে। ঘাটের ইজারাদার অশোক সরকার জানান, এক একটি নৌকায় ৫০ থেকে ৮০ জন যাত্রী যাতায়াত করেন। অনেক সময়েই জেটিতে ধাক্কা লাগে। ফলে যাত্রীদের গুরুতর চোট পাওয়া বা জলে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
যাত্রীদের দাবি, অবিলম্বে জেটিটি সংস্কার করে খোলনলচে বদলে ফেলা হোক। অথবা বিপদ এড়াতে বিকল্প কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘পূর্ত দফতর ও পুরসভাকে বিষয়টি বহুবার জানিয়েছি। কাজ হয়নি।’’ পুরপ্রধান অমর রাম অবশ্য বলেন, ‘‘সমস্যার কথা জানা নেই। খোঁজ নেব।’’
বর্ষায় নদীতে জল বাড়লে সমস্যা আরও বাড়ে। নৌকা ঘাটে দাঁড় করাতেও সমস্যা হয়। নিত্যযাত্রী মল্লিকা গুঁই, প্রদীপ মাহাতোদের দাবি, ‘‘প্রায় রোজই কেউ না কেউ ধাক্কা খাচ্ছেন। ব্যস্ত সময়ে তো সবসময় সতর্ক থাকা হয় না।’’ সতর্কতার জন্য ব্যস্ত সময়ে পরপর নৌকাও ছাড়া যায় না বলে জানান ঘাটের কর্মী মাধব চক্রবর্তী, দিলীপ মুখোপাধ্যায়দের।
জেলা পরিবহণ দফতরের আঞ্চলিক আধিকারিক আদরার আলমের দাবি, ‘‘বিষয়টি জানি। স্থানীয় প্রশাসন থেকে কিছু জানানো হলে ব্যবস্থা নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy