Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Coal Mine

Rajmahal Coal: চাষ-জমিতে কয়লা খননের বিরোধিতা

ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, সংস্থার ১৪টি এরিয়ার মধ্যে অন্যতম প্রধান লাভজনক এরিয়া, ঝাড়খণ্ডের রাজমহল।

শীতলপুরে বেহাল আবাসন

শীতলপুরে বেহাল আবাসন

নিজস্ব সংবাদদাতা
রাজমহল শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২২ ০৭:২৮
Share: Save:

জমি অধিগ্রহণের সমস্যায় থমকে যেতে বসেছে রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা ইসিএলের রাজমহল খনির সম্প্রসারণ প্রকল্প। গ্রামবাসীর সঙ্গে খনি কর্তৃপক্ষ বার বার বৈঠক করার পরেও সমাধান সূত্র বেরোচ্ছে না বলে জানা গিয়েছে। রবিবার রাতে গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন আধিকারিকেরা। বাসিন্দাদের দাবি, চাষের জমিতে কয়লা খনন করতে দেওয়া হবে না। কোনও কারণে সম্প্রসারণ প্রকল্প রূপায়িত না হলে, ইসিএলের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে বলে ধারণা সংস্থার কর্তাদের একাংশের।

ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, সংস্থার ১৪টি এরিয়ার মধ্যে অন্যতম প্রধান লাভজনক এরিয়া, ঝাড়খণ্ডের রাজমহল। এর পরেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শোনপুর-বাজারি ও ঝাঁঝরা এরিয়া। সম্প্রতি রাজমহল খনি সম্প্রসারণের তোড়জোড় শুরু করেন কর্তৃপক্ষ। এ জন্যই খনি লাগোয়া তালঝাড়ি, ভেরেণ্ডা, বাবুপুর ও পাহাড়পুর গ্রামের ১২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা দরকার। এই মর্মে বাসিন্দাদের নোটিসও দেওয়া হয়েছে। এই গ্রামগুলি আদিবাসী অধ্যুষিত। ইসিএল কর্তৃপক্ষের দাবি, জমিদাতাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন বাবদ প্রায় ১০ কোটি টাকার প্রকল্প ঘোষণা করা হলেও জমির মালিকেরা জমি ছাড়তে রাজি হচ্ছেন না।

এই পরিস্থিতিতে রবিবার সন্ধ্যা ৬টায় বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে বৈঠক করতে যান ইসিএলের সিএমডি এপি পান্ডা, ডিরেক্টর (‌টেকনিক্যাল) জেপি গুপ্ত এবং রাজমহল খনির জেনারেল ম্যানেজার রমেশ চন্দ্র মহাপাত্র। কিন্তু তাঁদের দেখেই গ্রামবাসী বিক্ষোভ শুরু করেন। গ্রামবাসী জানান, চাষযোগ্য জমিতে কয়লা খনন করতে দেওয়া হবে না। জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা হলে, প্রয়োজনে প্রতিরোধ করা হবে।

রাত প্রায় ১০টায় পুলিশ সুপার (গোড্ডা) নাথুসিংহ মিনা বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আধিকারিকদের ঘেরাও-মুক্ত করেন। ইসিএলের জনসংযোগ দফতরের মুখ্য আধিকারিক পুণ্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার জন্য গিয়েছিলেন আধিকারিকেরা। স্থানীয়রা নিজেদের সমস্যার কথা জানিয়েছেন। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।” গোড্ডা জেলা পরিষদের সদস্য তথা স্থানীয় বাসিন্দা রামজি প্রসাদ বিক্ষোভকারীদের তরফে বলেন, “বাসিন্দারা চাষযোগ্য জমিতে কয়লা খনন করতে দিতে রাজি নন। তবে আলোচনা চলছে। সমাধানসূত্র মিলবে।”

এই ঘটনা থেকে কিছু আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে ইসিএলের অন্দরে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খনিকর্তা জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে জমি অধিগ্রহণ শেষ না করা গেলে, রাজমহল খনিকে বেশি দিন টেকানো যাবে না। ইসিএলেরও অস্তিত্ব-সঙ্কট হতে পারে। ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, সংস্থার প্রায় ৭৮টি খনি রয়েছে। মোট উত্তোলনের অর্ধেক আসে রাজমহল, শোনপুর বাজারি ও ঝাঁঝরা খোলামুখ খনি থেকে। বাকি অর্ধেক কয়লা উত্তোলন হয় ৭৫টি খনি থেকে। পুণ্যদীপ বলেন, “রাজমহল সংস্থার অন্যতম প্রধান লাভজনক ও স্বপ্নের খনি। সংস্থার স্বার্থে এই খনির সম্প্রসারণ জরুরি।” সংস্থার যৌথ উপদেষ্টা কমিটির সদস্য, আইএনটিইউসি-র চণ্ডী বন্দ্যোপাধ্যায়, সিটুর সুজিত ভট্টাচার্য ও এআইটিইউসির রামচন্দ্র সিংহেরা পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে গ্রামবাসীর সমস্যা মিটিয়ে খনি সম্প্রসারণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এ দিকে, কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, তালঝাড়ি, ভেরেণ্ডা, বাবুপুর, পাহাড়পুর গ্রাম এলাকায় ভূগর্ভে প্রায় ৬৪৯ টন কয়লা মজুত আছে। আগামী তিন দশক ধরে সেই কয়লা তোলা হবে। ভবিষ্যতেও লাগোয়া এলাকায় খনি সম্প্রসারণের পরিকল্পনা আছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coal Mine Bardhaman Rajmahal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE