Advertisement
E-Paper

গাফিলতির জেরে ক্ষতি, কোপে কর্মীরা

বটলিং প্ল্যান্টে ঠিকাকর্মীর সংখ্যা ১১২। প্ল্যান্টের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির পরে জানুয়ারি পর্যন্ত গড়ে দিনে ১৬০ ট্রাক সিলিন্ডার বোঝাই করার কাজ হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে যা ১৮০ ট্রাকে পৌঁছনোর কথা ছিল। একটি ট্রাকে ৩০৬টি সিলিন্ডার থাকে। তা বোঝাই করতে ট্রাক পিছু ৯২৫ টাকা দিয়ে থাকেন পরিবহণকারীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৭ ০১:৫৯

ট্রাকে সিলিন্ডার তোলা-নামানোর কাজে এক শ্রেণির ঠিকাকর্মী অসহযোগিতা করায় দিনে গড়ে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতি হচ্ছে, অভিযোগ করেছিলেন রাষ্ট্রায়ত্ত তেল ও গ্যাস সংস্থার বটলিং প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষ। প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকেও জট কাটেনি। শেষে বুধবার থেকে ওই কর্মীদের গেট পাস বাতিল করে দেওয়া হয়। কাজে যোগ দিতে না পেরে প্ল্যান্টের সামনে বিক্ষোভ দেখান কর্মীরা। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে পুলিশ।

সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, বটলিং প্ল্যান্টে ঠিকাকর্মীর সংখ্যা ১১২। প্ল্যান্টের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির পরে জানুয়ারি পর্যন্ত গড়ে দিনে ১৬০ ট্রাক সিলিন্ডার বোঝাই করার কাজ হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে যা ১৮০ ট্রাকে পৌঁছনোর কথা ছিল। একটি ট্রাকে ৩০৬টি সিলিন্ডার থাকে। তা বোঝাই করতে ট্রাক পিছু ৯২৫ টাকা দিয়ে থাকেন পরিবহণকারীরা। অভিযোগ, তা আরও ৩০ শতাংশ বাড়ানোর দাবিতে ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ঠিকাকর্মীদের একাংশ অসহযোগিতা শুরু করেন। তাতে গড়ে দৈনিক ৭০ ট্রাক কম সিলিন্ডার বোঝাই করা হচ্ছে। বটলিং প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, এর ফলে সরাসরি দৈনিক গড়ে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা লোকসান হচ্ছে। তাছাড়া সিলিন্ডারের জোগান স্বাভাবিক রাখতে অন্য বটলিং প্ল্যান্ট থেকে বেশি ব্যয় করে সরবরাহ করতে হচ্ছে।

সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার (এলপিজি অপারেশন) উজ্জ্বলপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় জানান, দুর্গাপুরের এই প্ল্যান্ট থেকে দক্ষিণবঙ্গের সাতটি জেলায় সিলিন্ডার সরবরাহ করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘ঠিকাকর্মীদের অসহযোগিতায় এক দিকে সংস্থার ক্ষতি হচ্ছে, অন্য দিকে বিপাকে পড়ছেন গ্রাহকেরা। তাঁদের সিলিন্ডার পেতে দেরি হচ্ছে। নতুন সংযোগ, বিশেষ করে বিপিএল গ্রাহকদের বিনামূল্যে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কেন্দ্রীয় প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’’

টেন্ডারের মাধ্যমে ২৮ জন পরিবহণকারীর মোট ২২৯টি ট্রাক চলে প্ল্যান্টে। পরিবহণকারীদের পক্ষে অভিজিৎ কোনার জানান, সিলিন্ডার তোলা-নামানোর বেশির ভাগটাই যান্ত্রিক পদ্ধতিতে হয়। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ঠিকাকর্মী রয়েছেন। দুর্গাপুরেরই অন্য তেল ও গ্যাস সংস্থায় ট্রাক পিছু ৩০০-৫০০ টাকা দেওয়া হয়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই প্ল্যান্টে কম পরিশ্রমে বেশি রোজগারের ব্যবস্থা রয়েছে। সমস্যা মেটাতে ঠিকাকর্মীদের আমরা অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু সমস্যা মেটেনি।’’ জেনারেল ম্যানেজার উজ্জ্বলপ্রসাদবাবু বলেন, ‘‘দুর্গাপুরের প্ল্যান্টটিতে সবচেয়ে বেশি খরচ করে সব থেকে কম উৎপাদন হয়ে থাকে। এই পরিস্থিতির জন্য প্রায় দু’শো কোটি টাকা ব্যয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্প আটকে গিয়েছে। সংস্থার তরফে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে সব জানানো হয়েছে।’’

১০ মার্চ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) শঙ্খ সাঁতরার ডাকা বৈঠকে ঠিক হয়, ১১ মার্চ থেকে অসহযোগিতা বন্ধের ব্যবস্থা করবেন পরিবহণকারীরা। ঠিকাকর্মীদের দাবি খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গড়া হয়। পরিবহণকারীদের দাবি, পরিস্থিতি না পাল্টানোয় বাধ্য হয়ে তাঁরা পঞ্চাশোর্ধ প্রায় ৯০ জনের গেট পাস বাতিল করেছেন। তৃণমূলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ ভাবে হঠাৎ করে কর্মীদের বসানো বেআইনি।’’ মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘প্রশাসনকে না জানিয়ে একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

Bottling plant Durgapur LPG
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy