চলছে রেশন ডিলারদের বিক্ষোভ। মঙ্গলবার দুর্গাপুরে সিটি সেন্টারে। ছবি: বিকাশ মশান ।
নানা দাবিতে দেশ ও রাজ্য জুড়ে অনির্দিষ্টকাল রেশন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। তার আঁচ পড়ল পশ্চিম বর্ধমানেও। দুর্গাপুর ও আসানসোলের বেশির ভাগ রেশন দোকান বন্ধ ছিল বলে দাবি করা হয়েছে। এর ফলে, গ্রাহকেরা ভোগান্তির মুখে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের।
মঙ্গলবার রেশন ডিলারদের সংগঠন ‘দুর্গাপুর সাবডিভিশন ইস্ট অ্যান্ড ওয়েস্ট ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর নেতৃত্বে সিটি সেন্টারে একটি রেশন দোকানের সামনে জড়ো হন রেশন ডিলারেরা। তাঁরা ব্যানার হাতে দাবিদাওয়ার সমর্থনে স্লোগান দিতে থাকেন। রেশন ডিলারদের অভিযোগ, ২০২১-এর ডিসেম্বর থেকে ২০২২-এর মার্চ পর্যন্ত খাদ্য দফতর অনলাইনে যে রেশন সামগ্রী ডিলারদের জন্য বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেছিল, তা আদতে দেওয়া হয়নি। অনেক কম সামগ্রী দেওয়া হয়েছিল। অথচ, ‘ই-পস মেশিনে’ অনলাইনে যে পরিমাণ বরাদ্দের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল, সেই পরিমাণ সামগ্রীর তথ্য ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ফলে, বাস্তব ও যন্ত্রের তথ্যে ফারাক থেকে যায়। সেই ঘাটতি রেশন ডিলারদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। খাদ্য দফতরে বার বার লিখিত ভাবে জানানোর পরেও কোনও সুরাহা হয়নি বলে দাবি তাঁদের।
এ দিকে, রেশন ডিলারদের রাজ্য স্তরের সংগঠন ‘অল বেঙ্গল ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর পশ্চিম বর্ধমান জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তনয়কুমার মণ্ডল বলেন, “কমিশনের হার বাড়ানো, ন্যূনতম মাসিক আয় ৫০ হাজার টাকা রোজগার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হচ্ছে। ২০১৬-র জানুয়ারি থেকে ২০১৯-এর নভেম্বর, ৪৭ মাসের কুইন্টাল পিছু ১৬ টাকা হারে বকেয়া রয়েছে। সেই টাকা মিটিয়ে দেওয়ার দাবিও জানাচ্ছি আমরা।”
সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে, রাজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ রেশন ডিলার এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। আসানসোল মহকুমার রেশন ডিলারেরাও এ দিন দোকান বন্ধ রেখে খাদ্য দফতরে স্মারকলিপি দেন। ‘আসানসোল সাবডিভিশনাল ফেয়ার প্রাইস শপ ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক মহেশকুমার শর্মা জানিয়েছেন, কমিশন বৃদ্ধি-সহ নানা দাবিতে তাঁরা বহু দিন ধরে সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু সরকারের হেলদোল নেই। মহেশ জানিয়েছেন, আসানসোল, বার্নপুর ও কুলটির ৭৪ জন রেশন ডিলার খাদ্য সরবরাহ করেননি। জেলা খাদ্য নিয়ামক অমিত গঙ্গোপাধ্যায়ের অবশ্য বক্তব্য, “বেশির ভাগ দোকানই খোলা ছিল। ধর্মঘট হয়েছে বলে জানা নেই।”
এই আন্দোলনের জেরে গ্রাহকদের ভোগান্তির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে ওয়াকিবহাল মহলের দাবি। তনয় অবশ্য বলেন, “করোনা অতিমারির সময় গ্রাহকদের কথা ভেবে সবাই মিলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রেশন বণ্টন ব্যবস্থা চালু রেখেছিলাম। এই বারেও কোনও সমস্যা হবে না। এখন দোকান বন্ধ আছে। তবে দরকার হলে সারা মাসের সামগ্রী একেবারে গ্রাহকের হাতে তুলে দেওয়ারব্যবস্থা করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy