Advertisement
E-Paper

‘জাল’ মার্কশিটে ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে

বিশ্ববিদ্যালয় এবং পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কমার্সের স্নাতকোত্তর বিভাগের ওই ছাত্রের বাড়ি বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে। তাঁর বাবা মুদির দোকানের কর্মচারী। ২০১৭-১৯ শিক্ষাবর্ষে ওই ছাত্র প্রথম সিমেস্টারে ‘নট ক্লিয়ার্ড’ ছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২০ ০৭:০৯
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

উচ্চশিক্ষার জন্য বৃত্তির টাকা পেতে মার্কশিটে ভুয়ো নম্বর বসানোর অভিযোগ উঠেছিল এক ছাত্রের বিরুদ্ধে। স্নাতকোত্তর স্তরের ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মাসখানেক আগে পুলিশ এই মামলায় আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে। তবে ঘটনার পরেও অভিযুক্ত ছাত্র পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাদেরই একাংশের দাবি। এ রকম ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সে বিষয়েও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও নির্দেশিকা জারি করেননি বলে অভিযোগ।

বিশ্ববিদ্যালয় এবং পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কমার্সের স্নাতকোত্তর বিভাগের ওই ছাত্রের বাড়ি বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে। তাঁর বাবা মুদির দোকানের কর্মচারী। ২০১৭-১৯ শিক্ষাবর্ষে ওই ছাত্র প্রথম সিমেস্টারে ‘নট ক্লিয়ার্ড’ ছিলেন। অভিযোগ, রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষার বৃত্তি পেতে তিনটি বিষয়ে ‘ভুয়ো’ নম্বর বসিয়ে অনলাইনে ফর্ম জমা দেন তিনি। তথ্য পরীক্ষার সময়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগ ‘ভুয়ো’ বিষয়টি ধরতে না পারায় ওই ছাত্র বৃত্তি পেয়ে যান। এর পরেই কয়েকজন পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ জানান। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের দাবি, তখন বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গিয়ে বোঝা যায়, মার্কশিটে তিনটি বিষয়ে ‘ক্রেডিট ভ্যালু’ বাড়িয়ে লেখা হয়েছে। গত বছর ২ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতি (ইসি) এ নিয়ে আলোচনা করে। তার ভিত্তিতে সে বছর ১৬ মে ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়।

পুলিশের দাবি, ছাত্রটি তাদের কাছে ‘দোষ’ স্বীকার করে দাবি করেছেন, পড়া চালাতে ওই বৃত্তি তাঁর খুব প্রয়োজন ছিল। সে জন্যই এই ‘ভুল’ করে ফেলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ক্লাস করা ও পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিয়েছিল। সব সিমেস্টারের পরীক্ষা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণও হয়ে গিয়েছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রের দাবি, যে পদ্ধতিতে মার্কশিটটি ‘জাল’ করা হয়েছিল, তা খালি চোখে ধরা মুশকিল। যে ধরনের কাগজ, কালি ও স্ট্যাম্প ব্যবহার করে মার্কশিট ছাপা হয়, ‘জাল’ মার্কশিটেও তেমনই ছিল।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ডিন রমেন সরের বক্তব্য, ‘‘অভিযুক্ত ছাত্রের মার্কশিট আটকে রাখা উচিত ছিল। পরীক্ষা নিয়ামককে বারবার বলা হয়েছিল। আমরা প্রতিটি ইসি বৈঠকে এ নিয়ে প্রশ্ন করেছি। পরবর্তী ইসি বৈঠকেও এ নিয়ে আলোচনা করা হবে।’’ বিজ্ঞান বিভাগের ডিন পবিত্র চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘এ রকম উদাহরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ভাল নয়। আমরা বহু বার খোঁজ নিয়েছি। বিষয়টি ছাড়ছি না।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন রেজিস্ট্রার তাফাজল হোসেন দাবি করেন, ‘‘পরীক্ষা নিয়ামককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল।’’ কমার্স বিভাগের তৎকালীন প্রধান দেবাশিস সুরও বিষয়টি পরীক্ষা নিয়ামকের এক্তিয়ারভুক্ত বলে দাবি করেছেন।

পরীক্ষা নিয়ামক অনিন্দ্যজ্যোতি পালের অবশ্য দাবি, ‘‘গোটা ঘটনাটাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের। আমাদের নজরে আসায় পুলিশকে জানিয়েছি। এর বাইরে কী করতে পারি!’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘মার্কশিট দেওয়া হল কেন, এ প্রশ্ন অবান্তর। আমাকে লিখিত ভাবে কেউ কিছু জানাননি। ওই ছাত্রকে ক্লাস করার ও পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল কেন, সে প্রশ্নও তোলা যেতে পারে।’’

গোটা বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিমাই সাহা শুধু বলেন, ‘‘যা করা হয়েছে বা হচ্ছে, সবই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম এবং আইন মেনেই।’’

Education Marksheet Bardhaman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy