Advertisement
২৯ মার্চ ২০২৩
sand smuggling

অভিযানে বারবার হামলা বেপরোয়া কারবারিদের

শনিবার আউশগ্রামে অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত হন তিন পুলিশকর্মী। অজয়ের বাঁধ লাগোয়া এলাকায় বালি পাচার আটকাতে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা আগেও ঘটেছে।

Illegal sand mining from river bank

চলছে বালি খোদাই। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আউশগ্রাম শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:১৮
Share: Save:

বেআইনি বালি কারবারিদের বেপরোয়া হয়ে ওঠার ঘটনা বারবারই ঘটছে জেলায়। কালনায় পরিবহণ দফতরের কর্মী-আধিকারিকদের উপরে হামলার পরে এ বার আউশগ্রামে আক্রান্ত হয়েছেন পুলিশকর্মীরা। বালি কারবারিরা এত বেপরোয়া হয়ে উঠছে কী ভাবে, তাদের পিছনে কাদের মদত রয়েছে, সে নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেক বাসিন্দাই।

Advertisement

শনিবার আউশগ্রামে অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত হন তিন পুলিশকর্মী। অজয়ের বাঁধ লাগোয়া এলাকায় বালি পাচার আটকাতে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা আগেও ঘটেছে। এর আগে ভেদিয়ায় পুলিশ আক্রান্ত হয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর একাংশের। বাসিন্দাদের অনেকের দাবি, বীরভূমের একটি অংশের কারবারিরা অজয় পেরিয়ে পূর্ব বর্ধমানে এসে বালি তুলে ট্রাক্টরে নিয়ে যাচ্ছে। এই চক্রে জড়িতদের পিছনে ‘প্রভাবশালীরা’ রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় অনেকের। তাঁদের দাবি, ওই সব লোকজনের কাছে আগ্নেয়াস্ত্রও থাকে। তাই সব দেখেও নীরব থাকতে হয়।

বাসিন্দাদের দাবি, অজয়ের বালি জমলে বাঁধ মজবুত থাকে। কিন্তু কখনও যন্ত্র দিয়ে, কখনও বেলচা-কোদাল দিয়ে তা কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পুলিশ অভিযান চালালে চোরেরা জল পেরিয়ে বীরভূমের দিকে চলে যায়। অজয়ের জল পেরিয়েই ট্রাক্টরে করে চলে বালি পাচার।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অজয়ের এই অংশে এখন কোনও বৈধ বালি খাদান নেই। এখান থেকে বালি তুলে পাচার করার জন্য কোনও রাজস্ব দিতে হয় না। ফলে, লাভের পরিমাণ বেশি। বাঁধের কাছেই বালি তোলার কাজ চলায় বিপদের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা আরও জানান, বাঁধের ভিতরে অনেকটা চাষযোগ্য জমি রয়েছে। বালি কেটে নিয়ে যাওয়ায় সেখানে ধস নামছে। জমি হারিয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

বালি তোলাকে কেন্দ্র করে আগে বোমাবাজি, সংঘর্ষ লেগে থাকত। এখন তা কমলেও, বালি কারবারিদের বাধা দিতে ভয় পান এলাকাবাসী। স্থানীয় সূত্রের দাবি, এ বিষয়ে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর, পুলিশের কাছে বারবার অভিযোগ করা হয়েছে। নামপ্রকাশ না করার শর্তে এক বাসিন্দার বক্তব্য, ‘‘জল পেরিয়ে এসে বালি কেটে ট্রাক্টরে নিয়ে চলে যাচ্ছে। কয়েক বছর ধরে এই ঘটনা ঘটছে। ক্ষমতার জোরেই এটা চলছে। দৈনিক শতাধিক ট্রাক্টরে বালি তোলা হয়। কিছু বলতে গেলে বোমাবাজি করতে পারে বলে আশঙ্কায় থাকি।’’

যদিও ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, এখন অজয় উত্তরে সরে যাওয়ায় একটি বড় অংশ বীরভূমের মধ্যে রয়েছে। কোথা থেকে বালি কাটা হচ্ছে, তা ঠিক ভাবে বোঝা যায় না।

তবে এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, সাঁতলা-সহ আউশগ্রাম এলাকা থেকেই এই বালি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পুলিশ অভিযানে এলে, সংখ্যায় কম পুলিশকর্মী থাকলে বালি কারবারিরা রুখে দাঁড়ায়। বড় বাহিনী দেখলে তারা অজয় পেরিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশের দাবি, অভিযোগ পেলেই অভিযান হয়। বালি পাচারের সঙ্গে জড়িতেরা জল পেরিয়েপালিয়ে যায়।

পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের দাবি, অনেক বালি খাদান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ওভারলোড আটকাতে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হচ্ছে। তাতেও কিছুটা মুশকিলে পড়ছে কারবারিরা। সে কারণেই ব্যবস্থা নিতে গেলে এখন মরিয়া হয়ে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.