Advertisement
E-Paper

দেড় বছর ধরেও ভিত ছাড়ায়নি বাড়ি, ক্ষোভ

দেড় বছরেও কাগজ তৈরি হল না কেন, সে প্রশ্নে তুলেছে সিপিএম ও বিজেপি।

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:৪০
এমনই হাল বাড়িগুলির।

এমনই হাল বাড়িগুলির।

পুরসভার তত্ত্বাবধানে মাটির বাড়ি ভেঙে ইট গাঁথা শুরু হয়েছিল। স্ত্রী সাবিত্রীদেবী প্রতিদিন খোঁজ নিতেন পাকা বাড়ির কাজ কত দূর হল। কিন্তু দেড় বছরে ভিত গাঁথা ছাড়া আর কিছুই হয়নি। পাকাবাড়ির ইচ্ছেপূরণের আগেই স্ত্রী সাবিত্রীদেবীর মৃত্যু হয়। কথাগুলো বলছিলেন গোপাল মাহাতো। এখন পাশেই একটি মাটির ঝুপড়িতে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি। কাছেই কুন্দনলাল গুপ্ত প্রায় দেড় বছর ধরে প্লাস্টিকের ছাউনির তলায় পরিবার নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। পুরসভার দাবি, কিছু কাগজপত্র তৈরি এখনও বাকি! তাই এই হাল।

আসানসোল পুরসভার ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের কুমারপুরে এ ভাবেই দিন কাটছে মোট সাতটি পরিবারের। বিপিএল তালিকাভুক্তদের জন্য সরকারি পাকা আবাস নির্মাণের ‘হাউজ়িং ফর অল প্রকল্প’-এর আবেদনকারী ওই সাতটি পরিবার। প্রায় দেড় বছর ধরে বাড়িগুলি অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় ফেলে রাখার জন্য ক্ষুব্ধ তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও।

আসানসোল পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরকয়েক আগে রাজ্য সরকারের আর্থিক অনুদানে ‘হাউজ়িং ফর অল প্রকল্প’-এ পুর-এলাকায় বসবাসকারী বিপিএল তালিকাভুক্তদের জন্য পাকা বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এই প্রকল্পে বাড়ি পেতে গেলে উপভোক্তাদের নিজেদের নামে জমি থাকতে হবে। বৈধ কাগজ-সহ পুরসভায় আবেদন করার পরে, আধিকারিকেরা সব দিক বিবেচনা করে অনুমোদন করবেন। প্রতি উপভোক্তা তিন কিস্তিতে পাবেন প্রায় তিন লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা। আবেদন করার সময়ে উপভোক্তাদের দশ হাজার টাকা জমা করতে হবে।

প্রকল্পের উপভোক্তা গোপালবাবু সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে বলেন, ‘‘নিয়ম মেনে জমির দলিল-সহ ১০ হাজার টাকা জমা করেছি। মাটির বাড়ি ভেঙে ভিত পর্যন্ত তোলা হল। কিন্তু তার পরে, কাজ বন্ধ। গত দেড় বছরে অন্তত দশ বার পাঁচ নম্বর বরো কার্যালয়ে গিয়ে তদ্বির করেছি। কোনও লাভ হয়নি।’’ একই অভিযোগ উপভোক্তা কুন্দনলাল গুপ্ত, ও মহম্মদ ফিরোজ কুরেশি-সহ অন্য উপভোক্তাদেরও। সকলেই জানান, এ পর্যন্ত মিলেছে এক কিস্তির টাকা।

পুরসভার ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের উন্নয়ন কমিটির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা শঙ্কর চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে ওই সাত জন আবেদন করেছিলেন। ভিত পর্যন্ত ওঠার পরে কাজ বন্ধ হয়ে গেল কেন, বলতে পারব না। পাঁচ নম্বর বরো অফিসে এর প্রতিকারের জন্য দাবি জানিয়েছি।’’ কিন্তু কেন এই হাল? পাঁচ নম্বর বরোয় সংশ্লিষ্ট কাজের দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ার কাজল গোস্বামীর দাবি, কিছু বিভাগীয় কাগজপত্র তৈরি করতে হবে। সে কাজ শেষ হলে দ্রুত বাড়ি তৈরি শেষ হবে।

দেড় বছরেও কাগজ তৈরি হল না কেন, সে প্রশ্নে তুলেছে সিপিএম ও বিজেপি। পুরসভার বিদায়ী বিরোধী দলনেতা, সিপিএমের তাপস কবি বলেন, ‘‘গরিব মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে পুরসভা। এমন ঘটনা আরও বেশ কিছু ওয়ার্ডে পাওয়া যাবে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইও বলেন, ‘‘উন্নয়নের নামে তৃণমূল যে ফাঁকা বুলি আওড়ায়, এই ধরনের অভিযোগই সে কথা প্রমাণ করে।’’

যদিও তৃণমূল নেতা তথা আসানসোলের পুর-প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বিরোধীদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘বিপিএল তালিকাভুক্তদের জন্য বাড়ি আমরাই বানিয়েছি। এ নিয়ে বিরোধীদের কথা বলা সাজে না। দ্রুত কাজ শেষ করা হবে।’’ নিজস্ব চিত্র

BJP TMC CPM Asansol Housing for All
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy