Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
বদলে গেল রেলের উদ্বোধনের দিন

ব্যারিকেডে টানাটানি, রেলসেতু সরগরমই 

এ দিনই আরভিএনএল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, রেলসেতুতে এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। সেতুর বহন ক্ষমতা, বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট দিতে হবে। সেতুতে ওঠার জন্য ছ’জায়গায় সিঁড়ি করা নির্মাণের কাজও বাকি।

সেতুপথে প্রথম দিেন ভ্রমণ হেলমেট ছাড়াই। নিজস্ব চিত্র

সেতুপথে প্রথম দিেন ভ্রমণ হেলমেট ছাড়াই। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৪৭
Share: Save:

রেলসেতু ঘিরে ঘটনার ঘনঘটা চলল বুধবারও।

মঙ্গলবার রাজ্যের তরফে ওই সেতুর উদ্বোধন হয়। কিন্তু সেতুতে ওঠার মুখ বন্ধ করে বসানো ছিল সেতু নির্মাণকারী সংস্থা রেলবিকাশ নিগমের (আরভিএনএল) লোহার ব্যারিকেড। রেলের তরফে সেতু উদ্বোধনের পৃথক দিনও ঘোষণা করা হয়। বুধবার বিকেলের দিকে অবশ্য তৃণমূলের কর্মী, সমর্থকদের একাংশ ওই ব্যারিকেড খুলে দেন বলে অভিযোগ। মোটরবাইক, গাড়ি নিয়ে সেতুতে ওঠেন অনেকে। একের পর এক স্কুলবাস, মিনিবাসও চলে। ঘণ্টাখানেক পরে অবশ্য ফের ব্যারিকেডগুলি ফের দেখা যায় যথাস্থানে। আরভিএনএল-এর তরফে কিছু বলতে চাওয়া হয়নি। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, ৩০ সেপ্টেম্বরের বদলে কাল, শুক্রবার ২৭ সেপ্টেম্বর রেল প্রতিমন্ত্রী সুরেশ অনগাদি ওই সেতু উদ্বোধন করবেন।

এ দিনই আরভিএনএল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, রেলসেতুতে এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। সেতুর বহন ক্ষমতা, বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট দিতে হবে। সেতুতে ওঠার জন্য ছ’জায়গায় সিঁড়ি করা নির্মাণের কাজও বাকি। এ ছাড়াও সিগন্যাল ব্যবস্থা, আলোর ব্যবস্থা এখনও অপ্রতুল। আরভিএনএল ওই চিঠিতে দাবি করেছে, ‘সেতুটি এখনও স্পর্শকাতর অবস্থায় রয়েছে’। বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার দাবি, “নির্মাণকারী সংস্থা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাচ্ছে, এখনও সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়নি। তার পরেও সেখানে গাড়ি চলাচল করে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে, তার দায় কে নেবে? যাঁদের আমলে একের পর এক সেতু ভেঙে পড়েছে, তাঁরাই নিয়ম ভেঙে সেতু খোলার জন্য গায়ের জোর দেখাচ্ছে!” সরাসরি এ প্রশ্নের জবাব না দিয়ে জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ শুধু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প আমরা উদ্বোধন করে দিয়েছি। সেতু খুলে গিয়েছে।’’

তৃণমূল সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ওই সেতু উদ্বোধনের পরেই জেলা তৃণমূলের তরফে বর্ধমান শহরের ৪,৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়, সেতুর সংযোগকারী রাস্তার উপরে থাকা লোহার ব্যারিকেড তুলে দিতে হবে। বুধবার বেলা পর্যন্ত কর্মীরা উদ্যোগী না হওয়ায় চাপ বাড়ে। আরভিএনএলের কর্তারাও ওয়ার্ড কমিটিকে রেলের নিয়ম মানার অনুরোধ করেন। বিকেল পর্যন্ত টানাপড়েনের চলার পরে সন্ধ্যার মুখে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলর মহম্মদ সেলিমের নেতৃত্ব একদল কর্মী-সমর্থক পুরসভার সামনে থেকে হাঁটতে হাঁটতে মূল সেতুর কাছে চলে যান। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে মোটরবাইক নিয়ে আরও এক দল সমর্থক জোটেন। তারা তিনটে দলে ভাগ হয়ে মেহেদিবাগান, কাটোয়া রোড ও জেলাশাসকের বাংলোর দিকের সংযোগকারী রাস্তায় থাকা ব্যারিকেডগুলি খুলে দেন, দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। মহম্মদ সেলিমের দাবি, “উদ্বোধন হয়ে গিয়েছে। সাধারণ মানুষের জন্য সেতু খুলে দিতে আমরা উদ্যোগী হয়েছি।’’ এর পরেই একের পর এক স্কুলবাস কাটোয়া রোড দিয়ে সেতুতে উঠে বর্ধমান শহরের দিকে চলে যায়। বেশ কিছু মিনি বাসও মেহেদিবাগানের দিকে যায়। চলতে শুরু করে মোটরবাইক, ছোট গাড়ি। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। পৌনে সাতটা নাগাদ খবর আসে ফের সেতুতে ওঠার রাস্তায় ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। কারা দিল এই ‘বাধা’, তা নিয়ে অবশ্য কোনও পক্ষই কিছু বলতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bridge TMC RVNL Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE