বৃষ্টির অভাবে শক্ত হয়ে যাচ্ছিল জমি। শুকিয়ে যেতে বসেছিল বীজতলা। ফলে ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছিল আমন ধানের চাষ। রবিবার, সোমবার দফায় দফায় বৃষ্টিতে কিছুটা হলেও সঙ্কট কাটল। কৃষি দফতরের যদিও দাবি, ধান ও পাটের জন্য আরও জল প্রয়োজন।
কৃষি দফতরের হিসাবে জেলায় ৩ লক্ষ ৬০ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে প্রতি মরসুমে আমন ধান চাষ হয়। ফলন মেলে প্রায় ১৭ লক্ষ মেট্রিক টন। তবে গত দুই মরসুমেই জলসঙ্কটে ভুগতে হয়েছে চাষিদের। ২০১৫ সালে আমন চাষের শেষ দিকে জলের অভাব দেখা দেয়। বোরো মরসুমে সঙ্কট আরও বাড়ে। ডিভিসি কর্তৃপক্ষও চাষের জন্য জল দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয় এ বছর। ফলে জেলার সব মহকুমাতেই কম বেশি মার খায় বোরো চাষ। চাষিদের দাবি, ফলন কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। এরপরে জুন মাসের শেষ থেকেই চাষিরা আমন ধানের জমি তৈরি করার প্রস্তুতি শুরু করে দেন। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় কাজ শুরু করা যাচ্ছিল না। একই সঙ্গে জমি থেকে পাট কাটার পরে পাট পচানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন চাষিরা। তবে এই দু’দিনের বৃষ্টিতে সমস্যা কিছুটা কমবে বলে আশা চাষিদের। কৃষি দফতরের হিসেবে কালনা মহকুমা কৃষি খামারে ৩৮ মিলিমিটার, মন্তেশ্বরে ২৯ মিলিমিটার, পূর্বস্থলী ২ ব্লকে ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর ফলে বহু জমিতেই জমেছে জল। চাষিরাও নেমে পড়েছেন মাঠে।
মেমারি, আউশগ্রাম, ভাতার, গলসির মতো ব্লকগুলিতে চাষিরা ট্রাক্টর দিয়ে জমি তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন। কোনও জায়গায় মাঠে নেমে পড়েছে হাল বলদ। মন্তেশ্বরের ধান চাষি মুকুন্দ মণ্ডলের কথায়, ‘‘ধান চাষের জন্য জমি তৈরির বৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। তাই আর দেরি না করে শুরু করে দিয়েছি প্রস্তুতি। আশা করছি আরও বৃষ্টি পাব খুব শীঘ্রই।’’ কালনার পাট চাষি সমীর দত্ত জানান, দিন দশকের মধ্যে ৭০ শতাংশ জমিতে পাট কাটা শেষ হয়ে যাবে। অনেকে ওই জমিতে ধান চাষ করবেন। ভারী বৃষ্টির অভাবে কিছুটা চিন্তা ছিল কোথায় পাট পচানো হবে। দু’দিনের বৃষ্টিতে পরিস্থিতি অনেকটাই উন্নতি হয়েছে।
কৃষি দফতর জানিয়েছে, প্রতিটি ব্লকেই বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। তবে সপ্তাহ খানেক ধরে ২০ থেকে ৩০ মিলিমিটার করে বৃষ্টিপাত মিললে ঘাটতি অনেকটাই মিটবে বলে আশা জেলার এক সহ কৃষি অধিকর্তা সুব্রত ঘোষের। আর এক সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ জানান, দু‘দিনের বৃষ্টি সব্জি চাষেও ব্যাপক কাজে আসবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy