E-Paper

দুর্ঘটনা কমেও বেড়েছে মৃত্যু

হেলমেটবিহীন মোটরবাইক আরোহীদের সচেতন করতে গোলাপ উপহার দেওয়া হয়। ঘুম তাড়াতে ভোরে রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে চালকদের চা খাওয়ায় পুলিশ। তবু পথে প্রাণহানি চলতেই থাকে।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৫৫
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

পাঁচ বছর আগে জেলায় পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন ৩৬৩ জন। মাঝে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটা কমেছিল। করোনা-পর্বে দু’বছরে দুর্ঘটনার সংখ্যাও কমে গিয়েছিল। কিন্তু ২০২৪-র রিপোর্ট বেশ চিন্তায় ফেলেছে জেলা প্রশাসন ও ট্র্যাফিক পুলিশকে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩-র থেকে গত বছর দুর্ঘটনা ১৭% কমলেও মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। এ নিয়ে সম্প্রতি জেলার রোড-সেফটি বৈঠকে সবিস্তারে আলোচনা হয়েছে।

সোমবার থেকে পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ শুরু হয়েছে। তার আগে প্রকাশিত ট্র্যাফিক পুলিশের রিপোর্ট বলছে, পূর্ব বর্ধমান দুর্ঘটনার নিরিখে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ জেলা। রিপোর্ট অনুযায়ী, জেলায় ২০১৯-এ পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন ৩৬৩ জন। ২০২০-এ ২৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। করোনা-পরবর্তী সময়ে ২০২১-এ পথ দুর্ঘটনা সংক্রান্ত কোনও রিপোর্ট সরকারি স্তরে পাওয়া যায়নি। পুলিশের দাবি, করোনার জন্য সে সময় দুর্ঘটনা খুবই কম ঘটেছিল। ২০২২-এ পথ দুর্ঘটনায় ২৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

জেলা ট্র্যাফিক পুলিশের রিপোর্ট বলছে, ২০২৩-এ জেলায় মোট দুর্ঘটনা ঘটেছে ৮৭৮টি। তারমধ্যে অভিঘাতের নিরিখে ‘মারাত্মক’ ২৭০টি। সেগুলিতে ১০৮১ জন জখম হয়েছেন। আর মারা গিয়েছেন ২৯৫ জন। ২০২৪-এ মোট দুর্ঘটনা ঘটেছে ৭০৮টি। এর মধ্যে ‘মারাত্মক’ ২৭০টি। তাতে জখম হয়েছেন ৭৬৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩৪৫ জনেন। অর্থ্যাৎ, ২০২৩-র তুলনায় গত বছর পথ দুর্ঘটনায় ৪৯ জনের বেশি মৃত্যু হয়েছে। ওই রিপোর্ট আরও বলছে, ২০২৪-র নভেম্বর মাস পর্যন্ত মোট দুর্ঘটনার ২৩.৫৫% ঘটেছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে। এই জাতীয় সড়কে গত এক বছরে ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্য সড়কে ঘটেছে ২৩৬টি (৩৭.৮২%) দুর্ঘটনা। তাতে মারা গিয়েছেন ১২৯ জন। গ্রামীণ বা শহরের রাস্তাতে ৩৫.০৯% দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১১১ জন। দুর্ঘটনার ৩.৫২% ঘটেছে বর্ধমান-বোলপুর (এনএইচ ১১৪) রোডে।

ট্র্যাফিক পুলিশের মাথাব্যথা, রাজ্য সড়ক ও গ্রামীণ রাস্তা। জেলার মধ্য দিয়ে দু’টি জাতীয় সড়ক ছাড়াও গিয়েছে পাঁচটি রাজ্য সড়ক (৬, ৭,৮,১৩ ও ১৫)। এ ছাড়া, কাটোয়া-বর্ধমান, কালনা-বর্ধমান, বাদশাহী রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাও রয়েছে। ট্র্যাফিক পুলিশের বক্তব্য, দুর্ঘটনার সংখ্যা কমানো গেলেও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে। কড়াকড়ির মধ্যেও ‘ফাঁক’ গলে বেপরোয়া ভাবে যাতায়াতের কারণে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটছে। চার চাকার গাড়ি ও মোটরবাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা অত্যাধিক। সে কারণে জেলা প্রশাসন ও ট্র্যাফিক পুলিশ পর্যালোচনা শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই পথ-সুরক্ষা বিধি তৈরি করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা ট্র্যাফিক পুলিশ গলসির সিমনোর, নাদনঘাটের হেমাতপুর, রায়নার শ্যামসুন্দর ও জামালপুরের আঝাপুরে নতুন করে ট্র্যাফিক
গার্ড করেছে। (চলবে)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

bike accident Bardhaman

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy