কাটোয়ার রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র।
গত ২৪ ঘণ্টার বৃষ্টির জেরে জল ছপছপ জেলার বিভিন্ন রাস্তা। কোথাও জমেছে কাদা, কোনও গ্রামে আবার এখনও জলই নামেনি। কিন্তু এ সব কিছুকে উপেক্ষা করেই শনিবার রথযাত্রায় মেতে উঠলেন জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। রথযাত্রা উপলক্ষে বেশ কয়েকটি জায়গায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেলারও আয়োজন করা হয়েছে। রথের দড়িতে টান মারার জন্য মানুষের উৎসাহ ছিল নজরে পড়ার মতো।
বর্ধমানে এ দিন বৃষ্টি পড়েনি। তাই রথযাত্রা ঘিরে উৎসাহ ছিল দেখার মতো। রথতলায় মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় সূচনা করেন রথযাত্রার। এ ছাড়াও ব্যাপক ভিড় হয় বর্ধমান রাজবাড়ির দু’টি রথ ঘিরেও। কালনার বিভিন্ন এলাকাতেও রথাযত্রাকে কেন্দ্র করে মানুষের ভিড় সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে। লালজী ও জগন্নাথবাড়ির রথকে ঘিরে প্রতিবারের মতো এ বারেও উৎসাহ ছিল। এ ছাড়া মন্তেশ্বরে এ বারই প্রথম শুরু করা হল রথযাত্রার। কাটোয়ার শতাব্দীপ্রাচীন মাধাইতলার রথ এ বারেও নজর কাড়া। কম যায় না ঘোষহাটের রথের জাঁকজমকও। রথাযাত্রাকে কেন্দ্র করে বারোয়ারিতলায় বসেছে মেলা।
শিল্পাঞ্চলেও রথযাত্রাকে প্রচুর জন সমাগম হয়। রানিগঞ্জের সিহারশোল রাজবাড়ির রথে ভিড় হয়েছিল ভালই। জামুড়িয়ার বোগড়ায় জাতীয় সড়কেই বের করা হয় রথের শোভাযাত্রা। আসানসোলের গরাই রোডে ইস্কনের রথে দড়ি টানার জন্য প্রচুর মানুষকে এ দিন দেখা যায় রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে আছেন। ১৮০ বছরের পুরনো কুলটির বেলরুইয়ে রায়বাড়ির রথ দেখতেও বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর মানুষ আসেন। উখড়ার জমিদারবাড়ির রথযাত্রাও ছিল নজরকাড়া।
দুর্গাপুরের রথযাত্রা উৎসব ও সমাজকল্যাণ সমিতির রথযাত্রা এ বার ৩৩ বছরে পড়ল। রাজেন্দ্রপ্রসাদ অ্যাভিনিউয়ের জগন্নাথ মন্দির থেকে রাজীব গাঁধী মেলা ময়দান পর্যন্ত রথ টানা হয়। দুর্গাপুর ছাড়িয়ে শহর সংলগ্ন বিভিন্ন অঞ্চল থেকেও মানুষ আসেন এই রথযাত্রা দেখতে। কাঁকসার দেবাশিস রায়, শুভদীপ সাহারা বলেন, ‘‘ফি বছর রথযাত্রায় যোগ না দিতে পারলে মনখারাপ লাগে।’’ রথযাত্রা উপলক্ষে রাজীব গাঁধী মেলা ময়দানে একটি মেলাও বসেছে। উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে, এ বছর ৩ জুলাই পর্যন্ত মেলা থাকবে। মেলা ছাড়াও প্রতিদিন থাকছে ভক্তিগীতি, পালাকীর্তন, বাউলগান, যাত্রাপালার আসর।
এ দিন ইস্কনের দুর্গাপুরের শাখার তরফে রথযাত্রার আয়োজন করা হয়। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু রোডে ইস্কন মন্দির থেকে দড়ি টেনে রথযাত্রার সূচনা করেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক ও দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার সিইও পিকে সিংহ। যোগ দেন এলাকার বাসিন্দারাও। ইস্পাতনগরীর বিভিন্ন এলাকা পরিক্রমা করে ইস্কনের রথের যাত্রা শেষ হয় চতুরঙ্গ ময়দানে। আপাতত সেখানেই রাখা হবে রথটিকে। ২৬ জুলাই উল্টোরথের দিন অনুষ্ঠানের শেষ।
শহরের সাধুডাঙা-সহ বিভিন্ন এলাকাতেও ছোটবড় বিভিন্ন রথ বের করা হয়। কাঁকসা, বুদবুদেও রথযাত্রা পালিত হয়েছে ধুমধামের সঙ্গে। কাঁকসার রথতলা ও বিরুডিহাতে রথযাত্রা উপলক্ষে বসেছে মেলা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy