Advertisement
E-Paper

Renu Khantun: জীবনের লড়াইয়ে রেণুই ‘গুরু’ ওঁদের

সরকারি নার্সিংয়ে নাম মনোনীত হওয়ার পরে, বছর চব্বিশের রেণুর ডান হাতের কব্জি কেটে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে স্বামী শের মহম্মদ ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২২ ০৭:০২
চাকরির প্রথম দিনে হবু নার্সদের সঙ্গে রেণু।

চাকরির প্রথম দিনে হবু নার্সদের সঙ্গে রেণু। নিজস্ব চিত্র।

রেণু ওঁদের প্রেরণা।

এত দিন সংবাদমাধ্যমে তাঁকে দেখে, কথা শুনে, তাঁর মনের জোরের পরিচয় পেয়েছেন তাঁরা। এবার সামনাসামনি রেণুকে দেখে আবেগে ভাসছেন পূর্ব বর্ধমানের জগৎবেড়ের নার্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মেয়েরা। শুক্রবার এখানেই কাজে যোগ দিয়েছেন কেতুগ্রামের রেণু খাতুন। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর থেকে আসা হবু নার্সদের কথায়, ‘‘খবরে দিদির (‌রেণু) লড়াইয়ের কথা পড়েছি। তাঁকে কাছ থেকে দেখতে পাব ভাবিনি। এ বার দিদি আমাদের বন্ধু হয়ে থাকবেন। জীবনে লড়াই করার জোর পাব ওঁর থেকেই।’’

বর্ধমান মুখ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে বর্ধমান ১ ব্লকের কুড়মুন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বৃহস্পতিবার কাজে যোগ দেন রেণু। সেখান থেকে জগৎবেড় নার্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তাঁকে বদলি করা হয়। সেখানকার সিনিয়র টিউটর রিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রেণু আমাদের এখানে মেন্টর হিসেবে থাকবেন। নিজের জীবনের লড়াইয়ের গল্প শুনিয়ে হবু নার্সদের উৎসাহিত করবেন তিনি।’’

রেণুও প্রশিক্ষিত নার্স। সরকারি নার্সিংয়ে নাম মনোনীত হওয়ার পরে, বছর চব্বিশের রেণুর ডান হাতের কব্জি গত ৪ জুন রাতে সন্দেহের বশে কেটে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে স্বামী শের মহম্মদ ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল, বর্ধমান মেডিক্যাল হয়ে দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন রেণু। অস্ত্রোপচারের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বাঁ হাতে লেখার অভ্যাস শুরু করেন। বাড়ি ফিরে ২১ জুন সিএমওএইচ দফতরে কাজে যোগ দেন।

প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কাজে যোগ দিতে যেতেই শুক্রবার দুপুরে হবু নার্সেরা রেণুকে ঘিরে ধরেন। তাঁরা বলেন, ‘‘পরিবারের থেকে দূরে থাকি আমরা। অনেক সময় একাকিত্ব গ্রাস করে। দিদির মতো মেন্টর থাকলে অনেক সুবিধা হবে।’’ রেণু বলেন, ‘‘এখানে এসে নার্সিংয়ের প্রশিক্ষণ নেওয়ার দিনগুলো মনে পড়ছে। এতজনকে নিজের কাছে পাব, এটা খুবই আনন্দের। শুধু একটা কথাই বলব, পুরনো ঘটনা মনে না রেখে, শিক্ষা নিতে হবে। তবেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে। লড়াই করার ইচ্ছে, মনের জোর হারালে চলবে না।’’

বুদবুদ থেকে আসা পাপিয়া দাসের কথায়, ‘‘দিদিকে দেখে আমাদের বন্ধু বলে মনে হচ্ছে। আমাদের জীবনেও কত রকমের ছোটখাটো ঘটনা ঘটে। সেগুলো কত বড় মন হয়। দিদিকে দেখে মনে হচ্ছে, যদি ইচ্ছাশক্তি থাকে তাহলে অনেক বাধা পেরনো যায়।’’ বাঁকুড়ার আহ্লাদি দাস, বালুরঘাটের পরিণীতা দাস, জলপাইগুড়ির রূপসুনা ইয়াসমিনদেরও দাবি, ‘‘নার্সদের জীবনে নানা ঘাত-প্রতিঘাত আসে। সে জন্য লড়াই করতে হয়। মনের জোর আর সাহস থাকলে যে কোনও লড়াই যে তুচ্ছ, তা দিদি দেখিয়ে দিয়েছেন। কী ভাবে দিদি এতটা মানসিক শক্তি পেলেন, জানতে চাইব।’’

ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেন সুবর্ধন ঘোষ। প্রাক্তন সেনাকর্মী তিনি। তিনিও বলেন, ‘‘এই মেয়ের (‌রেণু)লড়াইকে কুর্নিশ।’’

Renu Khatun Bardhaman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy