E-Paper

‘বাড়ি তৈরিতে অনুমতি নিতে হয় তৃণমূলের’

সভার অন্যতম আয়োজক তথা বড়তোড়িয়ার বাসিন্দা দীনবন্ধু মণ্ডল জানান, কয়েক মাস আগে নিজের জমিতে বাড়ি করতে গিয়েছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:৪৭
আসানসোলের ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে এক সভাকে ঘিরে উত্তেজনা।

আসানসোলের ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে এক সভাকে ঘিরে উত্তেজনা। নিজস্ব চিত্র।

বাড়ি করার জন্য তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকে অনুমতি নিতে হয় বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর একাংশের। আরও অভিযোগ, এলাকার বেহাল পরিকাঠামো এবং জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বন্ধে তৃণমূলের স্থানীয় পুরপ্রতিনিধিকে বার বার বলেও লাভ হচ্ছে না। এমন বিষয়গুলিকে সামনে রেখে রবিবার আসানসোলের ফতেপুরে বাসিন্দারা সভার আয়োজন করেছিলেন। অভিযোগ, তা ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও র‌্যাফ নামে।

৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা সভাটির আয়োজন করেন। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল তৃণমূলের স্থনীয় পুরপ্রতিনিধি সমিত মাজিকেও। সকাল ১১টা নাগাদ সমিত সভামঞ্চে আসেন। অভিযোগ, সভা শুরুর কিছুক্ষণ পরেই কয়েক জন সেই সভা বন্ধ করার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তবে, আয়োজকেরা সভার কাজ চালিয়ে যাওয়ার দাবিতে অনড় থাকেন।

সভার জন্য পুলিশের থেকে আগাম অনুমতি নেওয়া ছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই কমিশনারেটের এসিপি (সেন্ট্রাল) দেবরাজ দাসের নেতৃত্বে র‌্যাফের একটি দল ঘটনাস্থলে আসে। তার পরে, পুলিশের উপস্থিতিতেই সভার কাজ শেষ হয়।

এ দিকে, সভার আযোজকেরা অভিযোগ করতে থাকেন, ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে জমি মাফিয়াদের অবাধ দাপাদাপি চলছে। রয়েছে অনুন্নয়নের সমস্যাও। পুরপ্রতিনিধিকে বিষয়গুলি বার বার বলেও লাভহচ্ছে না।

সভার অন্যতম আয়োজক তথা বড়তোড়িয়ার বাসিন্দা দীনবন্ধু মণ্ডল জানান, কয়েক মাস আগে নিজের জমিতে বাড়ি করতে গিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, “জমি মাফিয়ারা বাধা দেয়। দেওয়া হয় খুনের হুমকিও। বলে, তাদের অনুমতি নিতে হবে। নির্মাণ সামগ্রীও নিতে হবে তাদের থেকেই। এমনকি, বাড়ি করার তোলার আগে তৃণমূলের স্থানীয় কার্যালয় থেকে অনুমতি নেওয়ার কথাও বলা হয়।” ফতেপুরের স্বরূপকুমার মাজির আবার অভিযোগ, নিজের জমি বিক্রি করতে গেলেও, এক দল লোক এসে, জমি তাদের দাবি করে বাধা দিচ্ছে।

পাশাপাশি, এলাকার পরিকাঠামোগত সমস্যা নিয়েও সরব হয়েছেন বাসিন্দাদের একাংশ। বরাচকের বাসিন্দা জয়ন্ত দত্ত জানান, হনুমান মন্দির থেকে বরাচক স্টেশন পর্যন্ত রাস্তাটি বেহাল। পথবাতি নেই। নিকাশি পরিস্থিতি বেহাল। তাঁর অভিযোগ, “বিষয়টি পুরপ্রতিনিধিকে জানানো হলেও লাভ হয়নি।”

তবে জমি মাফিয়ারা কারা, কারা বা এ দিন বাসিন্দাদের সভায় বাধা দিতে এসেছিলেন, তা অবশ্য ভাঙেননি সভার আয়োজকেরা। পুরপ্রতিনিধি সমিত বলেন, “কারও নাম উল্লেখ না করে জমি মাফিয়াদের বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। বিস্তারিত খোঁজখবর করব। বাসিন্দাদের নিজেদের জমি কেনাবেচার আগে বা বাড়ি তৈরি করার আগে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় না। কে বা কারা এই কাজ করছেন, তা-ও দেখা হবে।” পাশাপাশি, পরিকাঠামোগত উন্নয়নের বিষয়েও তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।

এ দিকে, বিষয়টিকে সামনে রেখে সরব হয়েছে বিজেপি। দলের আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “ওই এলাকায় জমি মাফিয়াদের বখরাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের অন্দরে দু’টি গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। তা নিয়েই গোলমাল।” গোষ্ঠীর কথা স্বীকার করেননি সমিত এবং তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন। শিবদাসনের সংযোজন: “বিজেপির কথার কোনও ভিত্তি নেই। এলাকাবাসী কী অভিযোগ করছেন, সে সম্পর্কে খোঁজখবরকরা হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Asansol

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy