Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
GST

তিন পুরসভায় টাকা তোলায় নিষেধাজ্ঞা জারি

জিএসটি দফতর থেকে জানা যায়, তিন পুরসভাতেই মাটির তলা দিয়ে ইন্টারনেট সংযোগের জন্য একটি বহুজাতিক সংস্থা ফাইবার তার নিয়ে গিয়েছে। পুরসভাকে ‘ইনস্টলেশন চার্জ’ দিয়েছে তারা।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:০৩
Share: Save:

‘সার্ভিস ট্যাক্স’ বকেয়া থাকায় বর্ধমান, কাটোয়া ও কালনা পুরসভার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলিকে চিঠি দিয়েছে বর্ধমানের বড়নীলপুরের জিএসটি দফতর। ব্যাঙ্কগুলিও ‘নিষেধাজ্ঞা’ জারি করে চিঠি দিয়েছে পুরসভাগুলিকে।

পূর্ব বর্ধমানের লিড ব্যাঙ্কের ম্যানেজার রঞ্জন গুহ বলেন, “জিএসটি সংক্রান্ত সমস্যার জন্য আইন মোতাবেক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করতে বলেছে সংশ্লিষ্ট দফতর। সে মতো ব্যাঙ্ক তা পালন করেছে।’’ তবে জিএসটি দফতরের বর্ধমান ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অভিজিৎ মণ্ডল বলেন, “আমি অফিসে নেই। সোমবার অফিসে গিয়ে নথি দেখে বিস্তারিত বলতে পারব।’’

জিএসটি দফতর থেকে জানা যায়, তিন পুরসভাতেই মাটির তলা দিয়ে ইন্টারনেট সংযোগের জন্য একটি বহুজাতিক সংস্থা ফাইবার তার নিয়ে গিয়েছে। পুরসভাকে ‘ইনস্টলেশন চার্জ’ দিয়েছে তারা। সে খবর পেয়ে জিএসটি বিভাগ বর্ধমান পুরসভাকে আনুমানিক ১৩ লক্ষ টাকা আর কাটোয়া পুরসভাকে প্রায় দু’লক্ষ টাকা ‘সার্ভিস ট্যাক্স’ ধার্য করে। বর্ধমান পুরসভার যদিও দাবি, ২০১৬ সাল নাগাদ ওই টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পরে ‘সার্ভিস ট্যাক্স’ উঠে গিয়ে জিএসটি আসে। তখন আবার জিএসটি বাবদ ১৮ লক্ষ ৯৯ হাজার ৪৩২ টাকা চেয়ে চিঠি দেয় কেন্দ্রের জিএসটি দফতর। সে টাকাও ২০১৮ সালের ১৮ জানুয়ারি শোধ করে দেওয়া হয়। ওই বহুজাতিক সংস্থা জিএসটির টাকা বর্ধমান পুরসভাকে দেবে বলেও জানায়, দাবি তাঁদের।

গত ১৮ সেপ্টেম্বরের একটি চিঠি অনুযায়ী কেন্দ্রের জিএসটি কর্তৃপক্ষের বর্ধমান পুরসভার কাছে ৪৯,৬৬,৪৬৭ টাকা পাওনা রয়েছে। যার মধ্যে বকেয়া টাকার সুদ ২৩,৪৩,৯১৩ টাকা। বর্ধমান পুরসভার এগ্‌জ়িকিউটিভ অফিসার অমিত গুহর মতে, “অন্যায় ভাবে টাকা চাওয়া হয়েছে। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলাতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে দু’-একটা শুনানির পরে, বিষয়টি মিটে যাবে বলে মনে হচ্ছে।’’

কাটোয়া পুরসভার দাবি, ২০১৭ সালে ‘সার্ভিস ট্যাক্স’ জমা দেওয়ার পরে ওই বহুজাতিক সংস্থার কাছে টাকার দাবি করা হলে তাঁরা একটি নির্দেশে দেখায়, কেন্দ্র সরকার তাদের সব রকম কর মকুব করেছে। সেই মতো সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হলেও তারা টাকা ফেরত দিতে অপারগ বলে জানিয়েছিল। কাটোয়া পুর প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রয়োজন ছাড়াই সার্ভিস ট্যাক্স জমা করা হয়েছিল। এখন আবার জিএসটি বাবদ পাঁচ লক্ষ টাকা চাওয়া হচ্ছে। হঠাৎ করে টাকা তোলা যাবে না বলে ব্যাঙ্কও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। আসলে বাংলার পুরসভাগুলিকে অচল করার মনোভাব নিয়ে এ সব করছে কেন্দ্র সরকার।’’ কালনার পুরপ্রশাসক দেবপ্রসাদ বাগও বলেন, “জিএসটি-সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদেরও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নিষেধাজ্ঞা এসেছে শুনেছি।’’

যদিও বিজেপির রাজ্য কমিটির নেতা সন্দীপ নন্দীর দাবি, “অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে কিছু বলার নেই। তবে তৃণমূল সবেই বিজেপির ভূত দেখছে বলে অহেতুক দোষারোপ করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

GST Service Tax
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE