রাতের আঁধারে আনমনে রাস্তায় ঘুরছিল মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবক। পুলিশের এক এএসআই তাঁকে অন্যায় ভাবে মারধর করেছে অভিযোগ তুলে ঘণ্টা দেড়েক রাস্তা অবরোধ করলেন বাসিন্দারা। মঙ্গলবার রাতে বর্ধমান-মুথাভাঙা রাস্তায় রায়না থানার পলাশনের কাছে ঘটনাটি ঘটে। পরে রায়না থানার ওসি সঞ্জয় রায় খেদ প্রকাশ করায় অভিযোগ ওঠে। যদিও বর্ধমানের এসডিপিও কার্তিকচন্দ্র মণ্ডলের দাবি, ‘‘একটা ছোট ঘটনা ঘটেছিল। ওসি যেতেই বিষয়টি মিটে গিয়েছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পলাশনের সাঁওতাল পাড়ার বাসিন্দা, বছর পঁচিশের উপেনলাল বেশরা নামে ওই যুবক দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক ভারসাম্যহীন। এমনকী তাঁর বাবা-মা কাজে গেলেও তাঁকে সঙ্গে নিয়ে যান। অন্য সময়ে বাড়ির লোকেরা তাঁর হাতে-পায়ে লোহার বেড়ি বেঁধে রাখেন বলেও পড়শিদের দাবি। উপেনের বাবা সুকুমার বেশরার অভিযোগ, ‘‘এই অবস্থাতেও সোমবার রাত ৯টা নাগাদ ছেলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে শুনতে পাই, শ্যামসুন্দর হল্টের কাছে রাতের অন্ধকারে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। সেই অপরাধেই রাস্তায় ফেলে আমার ছেলেকে পিটিয়েছে পুলিশ। পরে রায়না থানায় আটকেও রাখে।” পরে মঙ্গলবার পলাশন গ্রামের আদিবাসীরা একজোট হয়ে থানায় গিয়ে উপেনলালকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। তারপর স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাও করানো হয়।
বিকেল হতেই কাজ থেকে ফিরে গ্রামের অন্য বাসিন্দারাও ঘটনার কথা জানতে পারেন। তারপরেই সিদ্ধান্ত হয়, ওই আদিবাসী যুবককে অন্যায় ভাবে মারধরের প্রতিবাদে বর্ধমান-মুথাভাঙা রোড অবরোধ করা হবে। সেইমতো সন্ধ্যা থেকে শিশু ও মহিলাদের সামনে রেখে পথ অবরোধ শুরু করে দেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই যুবকের উপর অমানবিক মারধর করায় ওই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রায় দু’শো জন আদিবাসী পথ অবরোধে সামিল হন। তাঁদের মধ্যে মহেন্দ্র বেশরা, রামু মুর্মু, লক্ষ্মী বেশরারা বলেন, ‘‘অমানবিক পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন ছিল। ওই পুলিশ অফিসারের শাস্তির দাবি চেয়েছি।”
সোমবার রাতে ঘটনাস্থল থেকে ফোনে রায়নার তৃণমূল নেতা শৈলেন্দ্রনাথ সাঁই বলেন, “খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাই। কিছুক্ষণ পরে রায়নার ওসি আসেন। সোমবারের রাতের ঘটনায় তিনি অনুতপ্ত বলে অবরোধকারীদের জানান। তারপরেই অবরোধ তুলে নেন ওই আদিবাসীরা।” তবে রায়না থানার ওসি সঞ্জয় রায়ের সঙ্গে কোনও ভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy