Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
পুর-পরিষেবায় ক্ষোভ

নামেই শহর, অভিযোগ দুই ওয়ার্ডে

দুর্গাপুর পুরসভার ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁরা যা নাগরিক পরিষেবা পান, তাতে নিজেদের পুর এলাকার বাসিন্দা বলে বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৭ ০১:১৭
Share: Save:

সন্ধের পরে এলাকা জুড়ে ঘুটঘুটে অন্ধকার। রাস্তায় এত খানাখন্দ যে তা পাকা বলে বিশ্বাস করা মুশকিল। নিকাশি থেকে পানীয় জল— সমস্যার অন্ত নেই। দুর্গাপুর পুরসভার ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁরা যা নাগরিক পরিষেবা পান, তাতে নিজেদের পুর এলাকার বাসিন্দা বলে বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়।

দুর্গাপুর পুরসভা গঠনের সময় থেকেই ১ নম্বর ওয়ার্ডে জিতে এসেছে সিপিএম। দেড় দশক কাউন্সিলর ছিলেন সিপিএমের কণিকা দাস। ২০১২ সালে কাউন্সিলর হন সিপিএমের রীনা চৌধুরী। সদ্য তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু এলাকার পরিষেবা নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ এলাকার তৃণমূল কর্মীরাও। তাঁদের দাবি, ভোটে জেতার পরে আর এলাকার সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে খোঁজ নেননি কাউন্সিলর।

বাসিন্দারা জানান, ওয়ার্ডে সবচেয়ে উন্নত জায়গা কমলপুর। অথচ, সেখানকার পশ্চিমপাড়ায় গেলে কোনও প্রত্যন্ত এলাকা বলে মনে হয়। নুড়ি-পাথরের খনির পাশ দিয়ে মোরামের এবড়ো-খেবড়ো রাস্তা ধরে বেশ কিছুটা এগোলে ঘর-বাড়ি। দুরবস্থার ছাপ স্পষ্ট। রাস্তায় আলো নেই। সন্ধ্যা নামলে আঁধার নামে এলাকায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নানা তৃণমূল নেতা-কর্মীর অভিযোগ, এলাকার উন্নয়ন নিয়ে বাসিন্দারা বহু বার দরবার করেছেন কাউন্সিলরের কাছে। বিদায়ী কাউন্সিলরের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘অনেক কাজ হয়েছে। কিছু বাকি আছে।’’

স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের একাংশ এ বার দলের নেতা নিখিল নায়েককে প্রার্থী হিসেবে চেয়েছিলেন। তাঁদের দাবি, নিখিলবাবু পাড়ার বাসিন্দা। সব সময় মানুষের পাশে থাকেন। কিন্তু তৃণমূল বাইরের এক জনকে প্রার্থী করেছে ওই ওয়ার্ডে। যদিও এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ নিখিলবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘দল যা ভাল মনে করেছে, তাই করেছে। আমি দলের নির্দেশ মেনেই কাজ করি।’’

২ নম্বর ওয়ার্ড শুরু বিজড়া গ্রাম দিয়ে। এ ছাড়া শোভাপুর, মহুয়াবাগান, হাজরাপাড়া পড়ছে এর মধ্যে। শহরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র সরু পাকা রাস্তা খানাখন্দে ভরা। শেষ কবে আমূল সংস্কার হয়েছে, মনে করতে পারেন না বাসিন্দারা। অথচ, এই রাস্তার ধারেই বেসরকারি আধুনিক হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। অবিলম্বে রাস্তার সংস্কার ও সম্প্রসারণ জরুরি বলে জানান বাসিন্দারা। বিজড়া গ্রামে পাঁচটি কমিউনিটি শৌচাগার তৈরি হলেও চালু হয়নি। তিন বছর পড়ে থেকে থেকে ছাদের মাথার ট্যাঙ্ক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সমস্যা নিকাশি, পানীয় জলেরও।

একই ছবি ওয়ার্ডের বাকি এলাকাগুলিতেও। এই ওয়ার্ডও এত দিন ছিল সিপিএমের দখলে। বিদায়ী কাউন্সিলর নিজাম মণ্ডল তৃণমূলে যোগ দিয়ে ফের আবার এই ওয়ার্ডেরই প্রার্থী হয়ে বিড়ম্বনায় ফেলেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। তাঁদের দাবি, এলাকায় ন্যূনতম পরিষেবার বালাই নেই। এত দিন কাউন্সিলরের কাছে দরবার করে ফল হয়নি। এখন তাঁকেই ভোট দেওয়ার জন্য আবেদন জানাতে হচ্ছে। বাসিন্দাদে অনেকেই সে জন্য কটাক্ষ করছেন বলেও তাঁদের দাবি। নিজাম অবশ্য বলেন, ‘‘বিরোধী দলের কাউন্সিলর ছিলাম বলেই কিছু করে উঠতে পারিনি। এ বার জিতে এলাকার ভোল বদলে দেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE