বালি, পাথর, কয়লা খাদানে যে ‘লুঠ’ চলছে তা মেনে নিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী, পুলিশের কেউ যে তাতে জড়িত থাকতে পারে সে আশঙ্কাও জানালেন বৃহস্পতিবারের প্রশাসনিক বৈঠকে। একই সঙ্গে ওই সব প্রাকৃতিক সম্পদের লুঠ আটকাতে প্রশাসনের কী কী করা উচিত তার নিদানও দিলেন।
এ দিন বর্ধমান শহরে সংস্কৃত লোকমঞ্চে প্রশাসনিক বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে পুলিশকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় মুখ্যমন্ত্রী বলে ওঠেন, “বালি আর কয়লা খাদানে যত টাকা তোলা আর ঘুষ খাওয়া নিয়ে সমস্যা। এতে সরকারের কোনও লাভ হয় না। দলও এ সব চায় না। ব্যক্তিগত ভাবে কেউ কেউ এ সব করে বেড়ায়। স্থানীয় কেউ কেউ এর মধ্যে যুক্ত থাকতে পারে।” এর সঙ্গেই পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “বালি খাদানে ১০টি লরি ঢোকে, কিন্তু বেরোয় ২০টি লরি। এই ব্যাপারটা আপনারা দেখেন না।”
বালি চুরি আটকাতে রাজ্য সরকার কম চেষ্টা করছে না। গত বছর থেকে বালি খাদানগুলি অনলাইনে নিলাম শুরু করেছে। একই সঙ্গে বেআইনি বালি খাদানগুলিকে ‘বৈধ’ করার জন্য নিলামে তুলছে রাজ্য সরকার। প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, এক দিকে, যথেচ্ছ হারে বালি লুঠের প্রবণতা আটকানো গিয়েছে পাশাপাশি সরকারের ঘরে এক বছরেই সাড়ে পাঁচশো কোটি টাকার রাজস্ব ঢুকেছে। সেই কারণেই খাদানে লুঠ ঠেকাতে মুখ্যমন্ত্রী অনড় অবস্থান নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার মধ্যে ২৫ জুন থেকে বর্ষায় বালি তোলা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। অথচ কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোটের একাধিক বালি ঘাট থেকে বেআইনি ভাবে বালি পাচারের অভিযোগ মিলেছে। এ দিন তাতেও কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “খাদানের ঢোকার ও বাইরের রাস্তায় সিসিটিভি লাগাতে হবে। নজর মিনার তৈরি করে দূর থেকে নজর রাখতে হবে। পুলিশকে সবসময় নজর রাখতে হবে। খুব গুরুত্ব দিয়ে বর্ধমান-বীরভূম ও বাঁকুড়াকে দেখতে হবে।” তাঁর দাবি, “পুলিশের কেউ যুক্ত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মনে রাখতে হবে, ডিজির নেতৃত্বে গঠিত ‘অ্যান্টি কোরাপশন ব্যুরো’ কিন্তু খুবই শক্তিশালী।”