E-Paper

২৪ ঘণ্টা পার, আঁধারে বহু এলাকা

গত কয়েকদিন ধরে দেখা যাচ্ছে, বিকেল হলেই শুরু হচ্ছে ঝড়ের তাণ্ডব। ভেঙে পড়ছে একের পর এক গাছ। হেলে পড়ছে বিদ্যুতের খুঁটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৩ ০৮:৫৬
হেলে পড়েছে ট্রান্সফর্মার। ডিপিএল কলোনিতে। নিজস্ব চিত্র

হেলে পড়েছে ট্রান্সফর্মার। ডিপিএল কলোনিতে। নিজস্ব চিত্র

বৃহস্পতিবার প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে জেলায়। এর পরে প্রায় ২৪ ঘন্টা কেটে গিয়েছে। এখনও বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি দুর্গাপুর শহরের বিভিন্ন অংশে। দিনভর কাজ করতে দেখা গিয়েছে পুরসভা ও বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের। দুর্গাপুরের পুরপ্রশাসক অনিন্দিতা বলেন, “পুরসভার তরফে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কর্মীরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে চলেছেন।” প্রায় একই চিত্র আসানসোল, রানিগঞ্জ, কাঁকসা-সহ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায়।

গত কয়েকদিন ধরে দেখা যাচ্ছে, বিকেল হলেই শুরু হচ্ছে ঝড়ের তাণ্ডব। ভেঙে পড়ছে একের পর এক গাছ। হেলে পড়ছে বিদ্যুতের খুঁটি। তার ছিড়ে যাচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অন্ধকারে ডুবে থাকছে সিটি সেন্টার, বিধাননগর, ডিএসপি টাউনশিপ, বেনাচিতি, সগড়ভাঙা-সহ দুর্গাপুর শহরের অধিকাংশ জায়গা। বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা তৎপরতার সঙ্গে কাজ করলেও, শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ ফিরতে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা লেগে যায়। তবে বেনাচিতির একাংশে ২০ থেকে ২২ ঘণ্টা পরেও বিদ্যুৎ ফেরেনি। এমএএমসি টাউনশিপের একাংশে আবার শুক্রবার রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসেনি। দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বড় বড় গাছ বিদ্যুতের তারে পড়ে যাওয়ায়, খুঁটি হেলে পড়ে বা ভেঙে পড়ে। গাছ সরিয়ে তৎপরতার সঙ্গে মেরামতির কাজ চলছে।

ঝড়ের জেরে বেশকিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, নডিহাতে হাইস্কুলের সীমানা পাঁচিল ভেঙে যায়। পুরসভার তরফে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে প্রয়োজনীয় সাহায্য করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “প্রশাসনের সঙ্গে মিলে পুরসভা সাধ্যমতো দুর্গতদের পাশে রয়েছে। ১২টি বাড়ি আপাতত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। ৯, ১১, ৪১, ৪২, ৪৩ প্রভৃতি ওয়ার্ড থেকে অনেকে ত্রিপলের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। পুরসভা ব্যবস্থা নিচ্ছে।” তিনি জানান, পাঁচটি বাড়ি একেবারে ভেঙে পড়েছে। সেগুলি নতুন করে নির্মাণ করতে হবে।

শুক্রবার সিপিএম ও বিজেপির তরফেও ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকতে দেখা গিয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের দাবি, “রাজ্য সরকার বা পুরসভা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে নেই। অনেকেই আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন। আমরা সাধ্যমতো তাঁদের সাহায্য করছি।” দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইও দাবি করেন, “সকাল থেকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে ত্রিপল বিলি করছি। পুরসভার তরফে কেউ আসেননি। মানুষ খেতে পাচ্ছেন না। পানীয় জল পাচ্ছেন না।” যদিও পুরপ্রশাসক অনিন্দিতা বলেন, “এখন রাজনীতি করার সময় নয়। দুর্যোগে বহু মানুষ বিপাকে পড়েছেন। মানুষের পাশে থাকাটাই আসল। যে যে ভাবে পারবেন, তিনি সে ভাবেই এগিয়ে আসুন।”

এ দিকে, বৃহস্পতিবার প্রবল ঝড়ে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। তেঁতুলতলা কলোনির বাসিন্দা রবীন বিশাই জানান, তাঁর ভাগ্নি শতাব্দী এক্সপ্রেসে দুর্গাপুর আসেন। অন্তত ঘণ্টাখানেক দেরিতে ট্রেনটি ঢোকে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রবল দুর্যোগে লোকাল ট্রেন চলাচলও ব্যাহত হয়। হাওড়াগামী ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেসকে সে জন্য বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়, যাতে যাত্রীরা বিপাকে না পড়েন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Power Outage Durgapur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy