Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Memari

মেমারিতে ফের ‘দ্বন্দ্ব’ তৃণমূলে, সংঘর্ষে ধৃত ৯

তৃণমূল সূত্রের দাবি, মেমারি শহর তৃণমূল সভাপতি স্বপন ঘোষালেরসঙ্গে পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ীর অনুগামীদের দ্বন্দ্ব বেশ পুরনো। মাঝে স্বপন ঘোষাল রাজনৈতিক ভাবে খানিক ‘কোণঠাসা’ ছিলেন।

আহত। নিজস্ব চিত্র

আহত। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেমারি শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২২ ০৯:৫৪
Share: Save:

শহরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর ‘দূরত্ব’ প্রকাশ্যে এসেছিল বিজয়া সম্মিলনীর দিনই। বুধবার রাতে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ, দোকান ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল মেমারিতে। দু'পক্ষের বেশ কয়েক জন আহত হন। পরস্পরের বিরুদ্ধে মেমারি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ দু’পক্ষের ন’জনকে গ্রেফতার করেছে।

তৃণমূলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডু অবশ্য বলেন, ‘‘এখন তো সবাই তৃণমূলের কর্মী বা সমর্থক। সে কারণে বিজয়া সম্মিলনীর পরে পাড়া, ব্যক্তিগত, ক্লাব সংক্রান্ত অশান্তিকেও তৃণমূলের দ্বন্দ্ব বলে দেখাতে চাওযা হচ্ছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘কোথাও কোনও গোলমাল থাকলে দল নজরে রাখছে। দল বিরোধী কাজ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

তৃণমূল সূত্রের দাবি, মেমারি শহর তৃণমূল সভাপতি স্বপন ঘোষালেরসঙ্গে পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ীর অনুগামীদের দ্বন্দ্ব বেশ পুরনো। মাঝে স্বপন ঘোষাল রাজনৈতিক ভাবে খানিক ‘কোণঠাসা’ ছিলেন। সম্প্রতি দল তাঁকে শহর সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ার পরে, পুরনো দ্বন্দ্ব ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে বলে শাসক দলের স্থানীয় একাংশের দাবি। তাঁরা জানান, শহরের বাসস্ট্যান্ডের দখল নিয়ে এক বার অশান্তি হয়েছে। তার পরে শহর সভাপতির ডাকা বিজয়া সম্মিলনীতে পুরপ্রধান ও তাঁর অনুগামী কাউন্সিলরেরা অনুপস্থিত ছিলেন। দলের দুই গোষ্ঠীর ‘দূরত্ব’ তা স্পষ্টকরে দিয়েছিল।

শহর সভাপতির অনুগামী বলে পরিচিত, ছানাপট্টির বাসিন্দা বিজয় পণ্ডিতের অভিযোগ, বুধবার চেকপোস্টের কাছে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে তাঁর দাদা সুভাষকে রাস্তায় ফেলে সুকান্ত ওরফে বাবু হাজরার নেতৃত্বে কয়েক জন মারধর করে। দাদাকে উদ্ধার করতে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। বাড়িতেও হামলা চালানো হয়। সুভাষকে মেমারি গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে বর্ধমান মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়েছিল। পুলিশ জানায়, সেখান থেকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শহর সভাপতির অনুগামীদের দাবি, আইএনটিটিইউসি নেতা বাবু পুরপ্রধানের ‘কাছের লোক’। তিনি পুরপ্রধানের হয়ে মেমারি বাসস্ট্যান্ডের কর্মী ইউনিয়নের নেতৃত্ব দেন। শহরের বিভিন্ন জায়গায় পুরপ্রধানের অনুগামীরা গোলমাল পাকাচ্ছেন, সংগঠন করতে বাধা দিচ্ছেন বলেও দাবি তাঁদের।

পুরপ্রধানের অনুগামী বলে পরিচিত প্রসূন দাস মেমারি থানায় অভিযোগ করেছেন, তিনি-সহ তিন জন দোকানে বসেছিলেন। তখন কয়েক জন দোকানে হামলা চালায়, ভাঙচুর করে। তাঁদের মারধর করে। দু'জন গুরুতর জখম হন। পুরপ্রধানের অনুগামীদের দাবি, দোকানে হামলা-ভাঙচুর চালানো লোকজন এলাকায় দলের শহর সভাপতির অনুগামী বলে পরিচিত। আগেও তারা বাসস্ট্যান্ডের ইউনিয়ন দখলের জন্য অশান্তি পাকিয়েছিল।

এ দিন পুরপ্রধানকে বারবার ফোন করা হলেও, তিনি ধরেননি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত উপ-পুরপ্রধান সুপ্রিয় সামন্তের অভিযোগ, ‘‘জয়হিন্দ বাহিনীর সভাপতিকেও মারধর করা হয়েছে। যাঁরা মেরেছেন, তাঁরাও তৃণমূল করেন।’’ যদিও শহর সভাপতির দাবি, ‘‘বিষয়টি পারিবারিক গোলমাল বলেই জেনেছি। যে কোনও বিষয়কে কেউ কেউ রাজনৈতিক গোলমালের রূপ দিতে চাইছেন। প্রসূনের বন্ধু বাবু গোলমাল পাকাতে এসেছিলেন বলে তাঁর নাম জড়িয়েছে।’’ বাবুর অবশ্য দাবি, চক্রান্ত করে তাঁর নামজড়ানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Memari TMC Internal clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE