—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কর্মীর অভাবে কাটোয়া মহকুমা-সহ জেলার নানা প্রান্তে সরকার পোষিত গ্রন্থাগারগুলি সপ্তাহের বেশির ভাগ দিনই বন্ধ থাকে বলে অভিযোগ। এই অচলাবস্থা কাটাতে দ্রুত কর্মী নিয়োগের দাবি তুলেছেন বইপ্রেমীরা। তাঁদের অভিযোগ, এক জন কর্মীর উপরে অলিখিত ভাবে তিন থেকে চারটি গ্রন্থাগারের দায়িত্ব থাকে। তাই এই অবস্থা। কর্মীর আকাল দ্রুত মিটবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী।
জেলা গ্রন্থাগার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষার বিস্তারে গোটা রাজ্যের নানা প্রান্তে সরকারের তরফে কয়েক হাজার গ্রন্থাগার খোলা হয়েছিল কয়েক দশক আগে। শুধুমাত্র কাটোয়া মহকুমাতেই ৩০টি গ্রন্থাগার রয়েছে। গোটা জেলায় গ্রন্থাগারের সংখ্যা ১৫০। ওই সমস্ত সরকারি গ্রন্থাগারে আসেন কয়েক হাজার পাঠক। সেখান থেকে প্রচুর মানুষ নানা ধরনের বই সংগ্রহ করেন। কেউ গ্রন্থাগারে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বই পড়েন। কেউ আবার সদস্য কার্ড দেখিয়ে নিয়ম মেনে বাড়িতে বই নিয়ে গিয়ে পড়েন। নিদিষ্ট দিনে পাঠ করা বই ফেরত দিয়ে ফের পছন্দের নতুন বই নিয়ে আসেন। কিন্তু, মহকুমা তথা জেলার নানা প্রান্তে থাকা গ্রন্থাগারগুলি নিয়মিত খোলা না থাকায় সমস্যা দেখা দিয়েছে।
জেলা গ্রন্থাগার সূত্রের খবর, গ্রন্থাগারিক না থাকায় কেতুগ্রামের সীতাহাটি গ্রামীণ গ্রন্থাগার প্রায় এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। বইপ্রেমী প্রণবেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গ্রন্থাগার বন্ধ থাকায় আংমাদের মতো অনেক পাঠক সমস্যায় পড়েছেন। প্রশাসনের কাছে গ্রন্থাগার খোলীার দাবি জানানো হয়েছে। বন্ধ থাকায় গ্রন্থাগারের অনেক বই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’’
কাটোয়ার সিঙি গ্রামে কাশীরাম দাস স্মৃতি পাঠাগারটিও অনিয়মিত ভাবে খোলা হয় বলে অভিযোগ। ওই গ্রামের বাসিন্দা সিন্টু পাল বলেন, ‘‘গ্রন্থাগারটি বহু পুরনো। স্থায়ী গ্রন্থাগারিক না থাকায় মাসে কয়েক দিন গ্রন্থাগার খোলা হয়। অস্থায়ী গ্রন্থাগারিক একাধিক গ্রন্থাগারের দায়িত্বে রয়েছেন।’’
জানা গিয়েছে, বাম জমানার শেষ দিকে এবং তৃণমূল সরকারের আমলে দীর্ঘ সময় ধরে রাজ্যের গ্রন্থাগারগুলিতে কর্মী নিয়োগ হয়নি। এক জন গ্রন্থাগারিককে দু’টি থেকে চারটি গ্রন্থাগার চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে গোটা রাজ্যে কম-বেশি ৪০০ গ্রন্থাগার কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। কিছু সমস্যা কাটিয়ে আরও প্রায় ২০০ জন কর্মী নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে। কাটোয়া মহকুমা গ্রন্থাগারের পরিচালন সমিতির সদস্য তুষার পণ্ডিত বলেন, “এখনও প্রচুর পাঠক গ্রন্থাগারে আসেন। আমাদের গ্রন্থাগার নিয়মিত খোলা থাকে বলে সকাল থেকে পাঠকদের আনাগোনা লেগেই থাকে। তবে গ্রামাঞ্চলে অনেক গ্রন্থাগারই কর্মীর অভাবে ধুঁকছে। সরকারের উচিত দ্রুত কর্মী নিয়োগ করে গ্রন্থাগারগুলির স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনা।” গ্রন্থাগারমন্ত্রী বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই ৪০০ কর্মী নিয়োগ করে সমস্যা অনেকটাই মিটিয়েছি। আরও ২০০ কর্মী নিয়োগের ব্যবস্থা হচ্ছে। গ্রন্থাগারগুলির উন্নতির জন্য সরকার সব রকমের পদক্ষেপ করেছে।”
মোবাইল-আসক্তির যুগে বই পড়ার এই নেশা ধরে রাখাটা জরুরি বলছেন শিক্ষাপ্রেমীরা। ব্যবস্থাটাও দ্রুত হলেই ভাল, দাবি তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy