Advertisement
E-Paper

সাপের ছোবলে মৃত দম্পতি, মেয়ে

ঘুমোনোর কিছুক্ষণ পরেই ঘাড়ে-হাতে জ্বালা নিয়ে উঠে পড়েছিলেন মহিলা। কিছুক্ষণ পরে বমি শুরু হয় স্বামী-মেয়ের। সাপের ছোবলের দাগ দেখেই বিপদ আঁচ করেন তাঁরা। কিন্তু হাসপাতাল নয়, গাড়ি ভাড়া করে যান বাঁকুড়ার এক ওঝার কাছে। সাড়ে তিন ঘণ্টা টানাপড়েনের পরে হাসপাতাল নিয়ে যেতে গিয়ে মৃত্যু হয় তিন জনের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৬ ০০:১৫
সাপের খোঁজে খোঁড়াখুঁড়ি। নিজস্ব চিত্র।

সাপের খোঁজে খোঁড়াখুঁড়ি। নিজস্ব চিত্র।

ঘুমোনোর কিছুক্ষণ পরেই ঘাড়ে-হাতে জ্বালা নিয়ে উঠে পড়েছিলেন মহিলা। কিছুক্ষণ পরে বমি শুরু হয় স্বামী-মেয়ের। সাপের ছোবলের দাগ দেখেই বিপদ আঁচ করেন তাঁরা। কিন্তু হাসপাতাল নয়, গাড়ি ভাড়া করে যান বাঁকুড়ার এক ওঝার কাছে। সাড়ে তিন ঘণ্টা টানাপড়েনের পরে হাসপাতাল নিয়ে যেতে গিয়ে মৃত্যু হয় তিন জনের।

মঙ্গলবার রাতে খণ্ডঘোষের অমরপুর গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম রাজু খাঁড়াইত (২৭), ভাদু খাঁড়াইত (২৬) ও তাঁদের সাড়ে চার বছরের মেয়ে মনীষা। ঘটনার খবর পেয়ে বুধবার সকালে খণ্ডঘোষ থানার ওসি দীপঙ্কর সরকার মৃতদের বাড়িতে যান। তাঁর সামনেই ভাদুদেবীর কাকা বিশ্বনাথ বাগ ও রাজুর কাকা হাবুচন্দ্র খাঁড়াইত বলে ফেলেন, ঘরের ভিতর সাপে কাটার পরে তাঁরা বাঁকুড়ার ইন্দাস ব্লক হাসপাতালের কাছে এক ওঝার কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ থাকার পর ওঝা বিষ ঝাড়তে না পারায় পাশের হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই মারা যায় ওই শিশুকন্যা। পরে বর্ধমান মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় দম্পতিরও।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পেশায় খেতমজুর পরিবারটি ওই রাতে মাটির ঘরে ছোট মেয়েকে নিয়ে শুয়েছিলেন। আরেকটি ঘরে ওই দম্পতির বাবা-মা ও তাঁদের বড় মেয়ে ন’বছরের সুতারা ছিলেন। রাত ১১টা নাগাদ ভাদুদেবী ঘাড়ে যন্ত্রণা টের পান। কিছুক্ষণ পরে বমি শুরু হয় তাঁর স্বামী রাজুবাবু ও মেয়ের। ওই দম্পতির বাবা পিরুবাবু ও মা কামিনীদেবীর দাবি, “চিৎকার শুনে আমরা উঠে পড়ি। আলো জ্বেলে দেখি হাতে-ঘাড়ে সাপের কামড়। বৌমা বলে, তার বাপের বাড়ি ইন্দাসে বড় ওঝা রয়েছে। সেই মতো গাড়ি করে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়।” জানা যায়, সাপে কামড়ানোর পরে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা কোনও চিকিৎসাই হয়নি। ওসির কাছে ওঝার কাছে যাওয়ার ভুল স্বীকারও করেন তাঁরা। দীপঙ্করবাবু বলেন, “এখানকার ভিলেজ পুলিশ, সিভিক ভলেন্টিয়ার্সদের জানালে আমরাই চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারতাম। তাতে প্রাণগুলো বাঁচত।”

এ দিন দুপুরে ওই গ্রামের বড় পুকুর পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, দু’কামরার ঘরে কয়েকজন মিলে শাবল-কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়ছেন। তাঁদের কথায়, “ওই ঘরের নীচে সাপ রয়েছে। মাঝে-মধ্যেই ঘরের ভিতর সাপ দেখা গিয়েছে। সাপের খোঁজেই মাটি খোঁড়া হচ্ছে।” মৃত দম্পতির বাবা-মা শুধু বলেন, ‘‘সাপ মিলবে কি না জানি না। কিন্তু যে বড় ভুল করলাম, তার থেকে মুক্তি পাব না।”

এ দিনই আবেদা বিবি (৬১) নামে খণ্ডঘোষের দইচান্দা গ্রামের এক মহিলাও সাপের ছোবলে মারা যান। পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় বাঁ পায়ের আঙুলে সাপে ছোবল মারে তাঁকে। রাতেই বর্ধমান মেডিক্যালে তাঁর মৃত্যু হয়।

Snake bite
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy