Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জলমগ্ন বহু জমি, নজর নানা বাঁধে

এ দিন কাটোয়ার শাঁখাই ঘাট ও কেতুগ্রামের আনখোনায় পরিদর্শনে যান মহকুমাশাসক সৌমেন পাল। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বিপ্লব সরকার ও বিডিও-রা। আনখোনায় রাস্তা দিয়ে জল বইলেও এখনও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে জানান মহকুমাশাসক।

লাকুরডিতে ফুঁসছে নদী। —নিজস্ব চিত্র।

লাকুরডিতে ফুঁসছে নদী। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান ও কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৭ ০৪:১৫
Share: Save:

তিন দিনের বৃষ্টির জেরে পূর্ব বর্ধমান জেলার হাজার হেক্টর বীজতলা-সহ তেইশ হাজার হেক্টর আমন ধানের চাষের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে, জানাল প্রশাসন। মঙ্গলবারও জেলা জুড়ে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির ফলে সমস্যায় পড়েছেন মানুষজন।

বর্ধমানের কাছে বেলকাশ পঞ্চায়েতের ঢোলনাতে ডিভিসি-র অন্যতম মূল ক্যানালের উপর স্লুইস গেটের পাশে ‘গার্ডওয়ালে’ বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই ‘গার্ডওয়াল’ ভেঙে গেলে ইউসুফাবাদ, বেলকাশ ও ফকিপুর মৌজার বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হবে। এমনকী, বর্ধমান লাগোয়া বাঁধের গা পর্যন্ত জল চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ দিন এলাকা দেখতে যান বর্ধমান জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য নুরুল হাসান। তিনি বলেন, “সেচ দফতরের কর্তাদের ওই গার্ডওয়াল সংস্কারের জন্য বলা হয়েছে।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলকাশ পঞ্চায়েতের ৯টি মৌজার ২০টি গ্রামের চাষের জমি ডুবে গিয়েছে। বর্ধমান ১ ব্লকের পালিতপুরে গৌড় নদীর জল ঢুকে ৬৫টি পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ওই এলাকা ঘুরে বর্ধমান ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ফাল্গুনী রজক বলেন, ‘‘এলাকায় আদিবাসী মানুষজনের বাস। চারদিকে জল জমে যাওয়ায় তাঁদের এলাকা কার্যত দ্বীপ হয়ে গিয়েছে। ত্রাণ পাঠানো হয়েছে।’’

এ দিন কাটোয়ার শাঁখাই ঘাট ও কেতুগ্রামের আনখোনায় পরিদর্শনে যান মহকুমাশাসক সৌমেন পাল। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বিপ্লব সরকার ও বিডিও-রা। আনখোনায় রাস্তা দিয়ে জল বইলেও এখনও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে জানান মহকুমাশাসক। ফি বছর কুয়ে নদীর জল ছাপিয়ে বন্যার আশঙ্কা থাকে আনখোনা সহ পাশের ৫-৬টি গ্রামে। এ দিন মঙ্গলকোটের মাঝিগ্রামে অজয়ের জমিদারি বাঁধও ঘুরে দেখেন কর্তারা। বাঁধ সংস্কারে স্থানীয় পঞ্চায়েতকে কিছু পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন তাঁরা। মহকুমাশাসক জানান, নিয়মিত নজরদারি চলবে।

জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানা যায়, জেলার মূল তিনটি নদী গঙ্গা, দামোদর ও অজয় এখনও পর্যন্ত প্রাথমিক বিপদসীমার নীচেই রয়েছে। তবে টানা বৃষ্টিতে জেলা জুড়ে কয়েকশো বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে ব্লক থেকে ত্রিপল দিতে বলা হয়েছে। বৃষ্টি কমার পরে সরেজমিন তদন্ত করে ক্ষয়ক্ষতির হিসেব দেবেন ব্লকের কর্মীরা। সেচ দফতরের বর্ধমানের উপ-অধিকর্তা (প্রশাসন) জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত খরিফের ২৩ হাজার হেক্টর জমি জলের তলায় রয়েছে। হাজার হেক্টর মতো বীজতলা জলমগ্ন।’ উদ্যানপালন দফতর জানিয়েছে, আনাজেরও ক্ষতি হয়েছে। তার হিসেব এখনও পর্যন্ত মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE