মনের মতো কিছু দেখলেই এখন বেশির ভাগ মানুষ দাঁড়িয়ে পড়েন নিজস্বী তুলতে। কখনও তা করতে গিয়ে নিজের বিপদ হয়, আবার কখনও অন্যকে অসুবিধায় পড়তে হয়। সেই নিজস্বী তোলার জন্য মণ্ডপে থাকবে নির্দিষ্ট জায়গা। আবার কোথাও বাচ্চাদের পছন্দের অ্যানিমেশন চরিত্র উঠে এসেছে মণ্ডপে। এমনই সব ভাবনার নতুনত্বে সেজে উঠছে দুর্গাপুরের বিভিন্ন মণ্ডপ।
দুর্গাপুরের তপোবন আবাসনের পুজো ২৬ বছরে পা দিল। তাদের এ বারের থিম ‘সমুদ্রমন্থন’। গোটা মণ্ডপ জুড়ে থাকছে সমুদ্রমন্থন, দেবতা ও অসুরের যুদ্ধের দৃশ্য। তালপাতার মূর্তি, খড়ের মণ্ডপ আর পুজোর দিনে সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দর্শকদের টেনে আনবে বলে আশা উদ্যোক্তাদের। ইস্পাতনগরীর সি-জোন সর্বজনীনের পুজো ৩৫ বছরের পুরনো। তাদের থিম অ্যানিমেশন চরিত্র ‘মোটু-পাতলু’। উদ্যোক্তারা জানান, মণ্ডপে থাকা প্রতিটি চরিত্রই ঘুর্ণায়মান। তার জেরে কার্টুনে দেখা চরিত্রগুলি খুদেদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। দুর্গাপুরের স্টিলপার্ক মোড় লাগোয়া সংহতি সঙ্ঘের পুজোর থিম বিশ্ব উষ্ণায়ন। পুজো কমিটির তরফে শ্যামল চৌধুরী জানান, দূষণে জেরবার পৃথিবীকে কী ভাবে বাঁচানো যায়, তা তুলে ধরা হয়েছে মণ্ডপে। ইস্পাতনগরীর এডিসন রোডের আমরা ক’জন বয়েজ ক্লাবের পুজোর মণ্ডপ সাজছে যামিনী রায়ের চিত্র শিল্পের অনুকরণে। মণ্ডপ জুড়ে থাকছে কাঠের পুতুল-সহ বিভিন্ন সামগ্রী। বসবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আসর।
সেপকোর প্রয়াস সংস্থার পুজো ছ’বছরে পা দিল। এবারের মণ্ডপ তৈরি করা হচ্ছে ধানের মড়াইয়ের অনুকরণে। সেখানে থাকছে পাট, খড়ের কাজ। উদ্যোক্তাদের তরফে অনির্বাণ ভট্টাচার্য জানান, গ্রাম বাংলার নানা সামগ্রী দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। পুজোর ক’দিন থাকছে স্থানীয় ও বাইরের শিল্পীদের নিয়ে অনুষ্ঠান। এ-জোনের গুরুনানক নেতাজি সুভাষ চৈতন্য অ্যাভিনিউর পুজো ৩৯ বছরে পা দিয়েছে। লোহার কাঠামোর উপর তৈরি হয়েছে মণ্ডপ ও প্রতিমা। ইস্পাতনগরীর বি-জোনের নিউটন ইয়ংস কর্ণারের পুজো ৪০ বছর পার করল। এবারের থিম ‘হাটে বাজারে’। গোটা মণ্ডপ জুড়েই তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম বাজার। আশিস মার্কেট সব্জি বাজার সর্বজনীনের পুজো ৪১ বছরে পড়ল। তাদের থিম ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’। স্টিল মার্কেট দিশারী সঙ্ঘের পুজো মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে আমেরিকার একটি হিন্দু মন্দিরের আদলে। বিসি রায় অ্যাভিনিউর অআকখ কালচারাল ক্লাবের থিম ‘পল্লীবাংলা’। থাকবে দশ হাতের প্রতিমা। সেলফি প্রিয় মানুষদের জন্য এখানে একটি নির্দিষ্ট জায়গা করা হয়েছে বলে জানান উদ্যোক্তারা। বীরভানপুর বিধান স্পোর্টিংয়ের চামুন্ডা পুজোর প্রস্তুতিও এলাকার মানুষের নজর কাড়ছে।
থিমের পুজোর পাশে জায়গা করে নিয়েছে গলসির মনোহর-সুজাপুর গ্রামের মিত্রদের পুজো। ৫০ বছরের পুরনো এই পুজোয় দেবী পূজিতা হন পটে। থাকে ভোগ বিতরণের ব্যবস্থা।