তৃণমূলের বহু জনসভার সাক্ষী হওয়ায় পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার মাধব পাবলিক হাইস্কুলের মাঠ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে উৎসর্গ করার প্রস্তাব দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তা ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
শনিবার ওই মাঠে ব্লক তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী ও জেলার বিধায়কদের সংবর্ধনা দেওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল। ওই সভায় ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ও। সেখানে মন্ত্রী বলেন, ‘‘এই হাইস্কুলের মাঠ অনেক ইতিহাসের সাক্ষী। ১৯৯৮ সাল থেকে এই মাঠে আমাদের অনেক কর্মিসভা হয়েছে। এই মাঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সভা করেছেন। তাই এলাকার বিধায়কের মাধ্যমে ভাতার হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির কাছে এই মাঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে উৎসর্গ করার প্রস্তাব রাখছি। ভাতার ফুটবল মাঠ ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফুটবল মাঠ’ নামে পরিচিত হোক।’’
মন্ত্রীর এই প্রস্তাবকে ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ভাতারের প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য সুভাষ মণ্ডল তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে দাবি করেন, ‘‘এটি ‘ভাতার হাইস্কুলের মাঠ’ নামেই পরিচিত। সে নামে থাকাই বাঞ্ছনীয়। সিপিএমেরও অনেক বড় নেতা এখানে সভা করে গিয়েছেন। কিন্তু ভাতারের মানুষ এ ভাবে নাম পরিবর্তন মেনে নেবেন না।’’
প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিজেপির ভাতার বিধানসভার আহ্বায়ক স্বরূপ গোস্বামীও। তাঁর দাবি, ‘‘কোনও মহাপুরুষ অথবা স্বাধীনতা সংগ্রামীর নামে খেলার মাঠটির নামকরণ হলে আমরা মেনে নেব। অন্যথায় সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিবাদের রাস্তা বেছে নেওয়া হবে।’’
যুক্তি হিসেবে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ সভাতেই মন্তব্য করেন, ‘‘কালনায় এক সময়ে ইন্দিরা গাঁধী জনসভা করেছিলেন। সে জন্য সেই মাঠ এখন তাঁর সম্মানে ‘ইন্দিরা মাঠ’ নামে পরিচিত।’’ ভাতার কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী বলেন, ‘‘মন্ত্রী প্রস্তাব দিয়েছেন। তা স্কুলের পরিচালন সমিতির কাছে তুলে ধরা হবে। ভাতারের মানুষ মন্ত্রীর এই প্রস্তাব সাদরে গ্রহণ করবেন।’’ মাঠের নামের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর নাম জড়িয়ে থাকলে স্কুলও গর্বিত হবে বলে জানিয়েছেন ভাতার মাধব পাবলিক হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুব্রতকুমার সোমও। তিনি বলেন, ‘‘প্রস্তাব এলে তা খুবই গর্বের হবে।’’
তবে করোনার সংক্রমণ যখন বাড়ছে, সেখানে এ দিন মাঠ-ভরা ভিড় নিয়ে কটাক্ষ করছেন বিরোধীরা। অনেকের মুখেই মাস্ক ছিল না বলেও অভিযোগ।
যদিও এলাকার বাসিন্দা তথা রাজ্য যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক শান্তনু কোঙারের দাবি, ‘‘মাঠে প্রবেশের আগেই দলীয় কর্মীদের মাস্ক বিলি করা হয়েছে। কেউ কেউ হয়ত গরমে মাস্ক খুলেছিলেন। কোভিড-বিধি মেনেই সভা হয়েছে।’’