Advertisement
E-Paper

ওয়ার্ড বৃদ্ধির প্রস্তাবে শাসক-বিরোধী তরজা

পুর কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন, কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করেই ওয়ার্ড সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, তাদের কোনও বৈঠকে ডাকাই হয়নি। পুরসভার ওয়ার্ড সংখ্যা ৪৩ থেকে ৭৫ করার প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে এমনই চাপান-উতোর শুরু হয়েছে দুর্গাপুরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:১৫

পুর কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন, কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করেই ওয়ার্ড সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, তাদের কোনও বৈঠকে ডাকাই হয়নি। পুরসভার ওয়ার্ড সংখ্যা ৪৩ থেকে ৭৫ করার প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে এমনই চাপান-উতোর শুরু হয়েছে দুর্গাপুরে।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের ৪৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ বাকিদের তুলনায় আয়তনে বড়, জনঘনত্বেও বেশি। ফলে, সেই ওয়ার্ডগুলিতে পরিষেবা দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে পুরসভা। তাই ওয়ার্ডের সীমানা পুনর্বিন্যাস জরুরি বলে মনে করেন মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়। তা করা হলে এখনকার পুর এলাকার ওয়ার্ড সংখ্যা বেড়ে হবে ৫৮টি। এ ছাড়া জেমুয়া, গোপালপুর, বামুনাড়া, বাঁশকোপা, বিহারপুর, আমলাজোড়া, নাচন, অন্ডাল গ্রাম, বিমাননগরী, দুবচুরুলিয়া-সহ লাগোয়া বিভিন্ন এলাকা রয়েছে। এখানকার বাসিন্দারা পুর পরিষেবার দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘ দিন। বহু জায়গায় পানীয় জল, স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে থাকে দুর্গাপুর পুরসভাই। তাই এই সব এলাকাকে পুরসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হলে মানুষজন পুর পরিষেবা পাবেন, তাঁদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হবে।

জেমুয়া পঞ্চায়েতের কালীগঞ্জ, শঙ্করপুর, টেটিখোলা, সপ্তর্ষি পার্ক, গোল্ডেন পার্ক, ইন্দো-আমেরিকান পার্ক ইত্যাদি এলাকাগুলি একেবারে পুরসভা ঘেঁষা। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল রোডের ডান পাশে দুর্গাপুরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ড, বাঁ দিকে ওই সব এলাকা। কিছু এলাকা পুরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের লাগোয়া। এই ধরনের এলাকাগুলি পুরসভায় ঢুকলে আরও ১৭টি নতুন ওয়ার্ড তৈরি হবে। সব মিলিয়ে, পুরসভার মোট ওয়ার্ড সংখ্যা বাড়িয়ে ৭৫টি করার পক্ষে বর্তমান তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড।

পুরসভার ওয়ার্ড বৃদ্ধির প্রস্তাব ২০০৮ সালে প্রথম তোলে তখন বামেদের হাতে থাকা পুরবোর্ড। পুরসভায় ওয়ার্ড বাড়াতে গেলে বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করাতে হয়, রাষ্ট্রপতির সই দরকার হয়। বাম বোর্ড ৫০টি করার অনুমোদন জোগাড় করেছিল। তবে তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। ২০১৪ সালে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাসের জন্য একটি কমিটি গড়ে। সেই কমিটি বছরের শেষ দিকে রিপোর্ট দেয়। এলাকাভিত্তিক ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস বা কোন-কোন গ্রামীণ এলাকা পুর এলাকায় ঢুকবে তা খতিয়ে দেখতে কমিটির রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা হয় মেয়র পারিষদদের বৈঠকে। তবে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেনি পুরসভা।

পুরসভা সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি মেয়র অপূর্ববাবু ওয়ার্ড সংখ্যা ৭৫ করার প্রস্তাব দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, পুরমন্ত্রী, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী এবং জেলাশাসককে। চিঠিতে জানানো হয়েছে, এই প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে কাউন্সিলরদের বৈঠকে। এখানেই আপত্তি বিরোধীদের। পুরসভার বিরোধী দলনেতা শিবশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেন, কাউন্সিলরদের বৈঠক হয়নি। তাহলে তাঁরাও ডাক পেতেন। তবে শুধু শাসক দলের কাউন্সিলররা বৈঠক করে থাকতে পারেন। সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকারের অভিযোগ, ‘‘এখনকার পুর এলাকাতেই পরিষেবা দিতে চূড়ান্ত ব্যর্থ পুরবোর্ড। ন্যূনতম নাগরিক স্বাচ্ছন্দ পান না বাসিন্দারা। এর পরে এলাকা বাড়লে তারা সামাল দেবে কী ভাবে?’’

মেয়র অপূর্ববাবু অবশ্য বলেন, ‘‘সব দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাউন্সিলররা সবাই জানেন। বিরোধীরা ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে।’’

Durgapur municipality ward extention
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy