Advertisement
E-Paper

ত্রাণ শিবির থেকে বাড়ি ফেরার আর্জি

মঙ্গলবার রাতে মেমারি ২ ব্লকের একটি স্কুলের শিবির থেকে দু’জন পালিয়ে গিয়েছেন বলেও প্রশাসন সূত্রের খবর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২০ ০০:২৪
ত্রাণ শিবিরে ধৈর্যও হারাচ্ছেন অনেক শ্রমিক।—ছবি এএফপি।

ত্রাণ শিবিরে ধৈর্যও হারাচ্ছেন অনেক শ্রমিক।—ছবি এএফপি।

সপ্তাহ তিনেক ধরে আটকে রয়েছেন তাঁরা। ঠাঁই হয়েছে ত্রাণ শিবিরে। যত সময় যাচ্ছে, ধৈর্যও হারাচ্ছেন তাঁদের অনেকে। পূর্ব বর্ধমানের ত্রাণ শিবিরগুলিতে থাকা ভিন্ রাজ্য বা ভিন্ জেলার কিছু বাসিন্দার নানা রকম দাবি নিয়ে কর্মী-আধিকারিকেরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন বলে অভিযোগ নানা ব্লক প্রশাসনের। মঙ্গলবার রাতে মেমারি ২ ব্লকের একটি স্কুলের শিবির থেকে দু’জন পালিয়ে গিয়েছেন বলেও প্রশাসন সূত্রের খবর। এই আবাসিকদের নিয়ে কী করণীয়, জেলা প্রশাসনের কর্তাদের কাছে তা জানতে চেয়েছেন বিডিও-দের অনেকে।

এ রাজ্যে কাজ করতে আসার পরে, ‘লকডাউন’ শুরু হয়ে যাওয়ায় বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছিলেন অনেক শ্রমিক। কিন্তু রাজ্য ও জেলার সীমানা ‘সিল’ হয়ে যাওয়ায় আটকে পড়েন তাঁরা। অনেককে প্রথমে ‘কোয়রান্টিন’ বা নিভৃতবাস কেন্দ্রে পাঠানো হয়। সেখানে নির্দিষ্ট সময় থাকার পরে ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে তাঁদের। বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়ের মতো রাজ্য ছাড়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, মালদহ জেলা থেকে আসা অনেক শ্রমিক রয়েছেন এই সব শিবিরে। জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘ওঁদের দু’বেলা স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হয়। এখন আর অনেকে থাকতে চাইছেন না। তাঁদের কী ভাবে নিয়ম মেনে বাড়ি পৌঁছনো যায়, সে বিষয়ে রাজ্যের কাছে নির্দেশিকা চাইব।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন আগে পুলিশের কর্তারা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে নিভৃতবাসে থাকা মানুষজনের অনেকের আচরণ নিয়ে অনুযোগ করেন। তাঁরা দাবি করেন, ওই শ্রমিকেরা ত্রাণ শিবিরে যে ভাবে নানা সমস্যা তৈরি করছেন, তাতে যে কোনও সময়ে বিপত্তি তৈরি হতে পারে। বিভিন্ন ব্লক প্রশাসন এবং পুলিশের তরফে জেলার আধিকারিকদের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে, ওই সব শ্রমিকদের অনেকে নানা রকম অজুহাত তৈরি করে পালানোর পথ খুঁজছেন।

এক বিডিও-র কথায়, ‘‘খাবার খারাপ, এই অজুহাতে কেউ-কেউ খেতে চাইছেন না।’’ আর এক বিডিওর অভিযোগ, ‘‘স্কুলের ছাদ খুলে না দিলে পালিয়ে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছেন।’’ আবার অনেকে গ্রাম ঘুরে দেখার আবদারও করছেন বলে জানান তাঁরা। তবে প্রশাসনের কর্তারা জানান, আটকে থাকা শ্রমিকদের তরফে সবচেয়ে বেশি আবেদন করা হচ্ছে, তাঁদের বাড়িতে খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে। তাঁরা টাকাও পাঠাতে পারছেন না। এই অবস্থায় কত দিন বসে থাকতে হবে, প্রশ্ন করছেন তাঁরা। বাড়ি যেতে পারলে মানসিক অস্থিরতা দূর হবে বলে দাবি করছেন অনেকে। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, রায়না ২, খণ্ডঘোষ-সহ বেশ কয়েকটি ব্লকে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন শ্রমিকদের একাংশ। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

জেলা প্রশাসন সূত্রের দাবি, সমস্ত আবেদনই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আবেদন ঠিক হলে মানবিকতার খাতিরে শ্রমিকদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘কাটোয়ায় ১৪৮ জন পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বিহারের ভাগলপুরের এক জনের মেয়ের মৃত্যুর খবর আসার পরে আমরা গাড়ি করে পৌঁছে দিয়ে এসেছি।’’ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফে নির্দেশ পেলেই এই শ্রমিকদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে, জানান জেলা প্রশাসনের কর্তারা।

Coronavirus Bardhaman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy