ছবি: সংগৃহীত।
গৃহস্থের জন্য বরাদ্দ রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার বেআইনি ভাবে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার হচ্ছে। এই কারবারকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে দালাল-চক্রও। প্রশাসনের নজরদারির অভাবে আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে এমনই অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ। অভিযোগ তাঁরাও জানেন, দাবি প্রশাসনের আধিকারিকদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বহু পরিবারেই সদস্য সংখ্যা কম হওয়ায় বছরে বরাদ্দ ভর্তুকিযুক্ত ১২টি সিলিন্ডার লাগে না। বহু পরিবারেরই বছরে গড়ে ছ’টির মতো সিলিন্ডার লাগে। ফলে, বরাদ্দের বাকি সিলিন্ডারগুলির জন্য গৃহস্থের হাতে সামান্য কিছু টাকা ধরিয়ে তা চায়ের দোকানে, রাস্তার ধারের হোটেল, খাবারের দোকানে, কেটারিং সংস্থায় বাণিজ্যিক কাজে সরবরাহ করছে দালালেরা।
একটি রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস সংস্থা সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ভর্তুকিযুক্ত ১৪.২ কেজির সিলিন্ডারের দাম গড়ে প্রায় সাড়ে সাতশো টাকা। ১৯ কেজির বাণিজ্যিক সিলিন্ডারের দাম গড়ে প্রায় ১,৩০০ টাকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি হোটেল, রেস্তরাঁর কর্মচারীদের সূত্রে জানা যায়, গৃহস্থের গ্যাস ব্যবহার করলে তিনশো টাকা করে সিলিন্ডার পিছু ‘সাশ্রয়’ হয়।
গ্রাহকদের অভিযোগ, প্রশাসনের উপযুক্ত নজরদারির অভাবেই এই অবৈধ কারবার চলছে। ফলে, সরকার রাজস্বও হারাচ্ছে। তা ছাড়া, রাস্তার ধারে বিভিন্ন দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ম না মেনে যে ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, তাতে বিপদের আশঙ্কাও রয়েছে বলে অভিযোগ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গ্যাসের সিলিন্ডারের এই কালোবাজারির অভিযোগ মিলেছে। অনিয়ম রুখতে ইতিমধ্যেই একটি রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস সংস্থার সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে। আরও দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস সংস্থার সঙ্গেও বৈঠক হবে। পুলিশ, প্রশাসন, ব্যবসায়ীদের নিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস সংস্থাগুলিকে সচেতনতামূলক ওয়ার্কশপ আয়োজনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) শশাঙ্ক শেঠি বলেন, ‘‘কোনও গ্যাস সরবরাহকারী এজেন্সি যদি গৃহস্থের জন্য বরাদ্দ গ্যাস সিলিন্ডার বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের জন্য সরবরাহ করে, তা হলে সেই সংস্থার বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’ যদিও একটি রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস সংস্থার দাবি, গৃহস্থের জন্য বরাদ্দ গ্যাসের সিলিন্ডার শুধু গৃহস্থের নামেই সরবরাহ করা হয়। বাণিজ্যিক সিলিন্ডার দেওয়া হয় বাণিজ্যিক প্রয়োজনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy