Advertisement
E-Paper

নার্সদের মোবাইল ব্যবহারে কড়া নজরদারি

সদ্য মায়েদের মৃত্যু ঠেকাতে বৃহস্পতিবারই চিকিৎসকদের সতর্ক করেছিল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ বার ওয়ার্ডের ভিতর নার্সদের মোবাইল ব্যবহারের উপর ‘লক্ষ্মণ রেখা’  টানতে চলেছে তারা।

নিজস্ব সং‌বাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:০৩

সদ্য মায়েদের মৃত্যু ঠেকাতে বৃহস্পতিবারই চিকিৎসকদের সতর্ক করেছিল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ বার ওয়ার্ডের ভিতর নার্সদের মোবাইল ব্যবহারের উপর ‘লক্ষ্মণ রেখা’ টানতে চলেছে তারা। শুক্রবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে শীঘ্রই বিজ্ঞপ্তি জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গত তিন মাসে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২৬ জন প্রসূতির মৃত্যুর রিপোর্টে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা। প্রাথমিক রিপোর্টে, প্রসূতিদের প্রতি চিকিৎসকদের নজরদারির অভাব যেমন উঠে এসেছে, তেমনি নার্সদের গাফিলতি রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। আর এই গাফিলতির বেশির ভাগটাই ধরা পড়েছে রাতে কর্তব্যরত নার্সদের ক্ষেত্রে। জানা গিয়েছে, রোগীরা ঘুমিয়ে পড়লে কর্তব্যরত নার্সদের একটা বড় অংশ মোবাইলে ব্যস্ত থাকেন। কেউ মোবাইলে নানা খেলা খেলেন, কেউ আবার দীর্ঘ কথোপকথনে ব্যস্ত থাকেন। এ ছা়ড়া সোশাল মিডিয়ায় ঘোরাফেরা তো রয়েইছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান শহরের কাঞ্চননগরের রিম্পা তালুকদার (২০) প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। যমজ কন্যাসন্তানের জন্মও দেন তিনি। তারপরের দিন আচমকা অসুস্থ বোধ করেন রিম্পাদেবী। তাঁর মা আলোদেবীর অভিযোগ, ওই রাতে মেয়ে যখন প্রসব পরবর্তী যন্ত্রণায় ছটফট করছেন, তখন বারবার নার্সদের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আলোদেবীর কথায় কান না নিয়ে নার্সরা মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত ছিল বলে অভিযোগ। তার জেরেই রিম্পা মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তাঁর স্বামী পঙ্কজবাবু।

গত বছর এই হাসপাতালে ৬৩ জন প্রসূতি মারা গিয়েছিল, তখনও বেশ কয়েক বার নার্সদের মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। হাসপতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রসূতিদের জন্য ১২ শয্যার সিসিইউ রয়েছে, ৬ শয্যার এইচডিইউ আছে। জরুরি ভিত্তিতে রক্তের জোগান রয়েছে। তারপরেও নার্সরা মোবাইলে ব্যস্ত থাকবে বলে রোগী বা প্রসূতি মারা যাবে, সেটা মেনে নেওয়া যায় না।

ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা বলেন, “ওয়ার্ডের ভিতর নার্সরা যেখানে বসেন সেই সব জায়গায় সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হবে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আমাদের মোবাইলেই দেখা যায়। যদি ধরা পড়ে, কোনও নার্স সোশাল মিডিয়া বা গেমে ব্যস্ত, কিংবা লম্বা সময় ধরে ফোন করছেন— তাহলে ওই সব নার্সদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ নিয়ে আমরা বিজ্ঞপ্তিও জারি করতে চলেছি।”

একই সঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষ চিকিৎসকদের নির্দেশ দিয়েছেন, দু’বেলাই রোগীকে দেখতে হবে। রোগী দেখার সময় নার্সদের সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক। তাঁরা আরও বলেছেন, একটি ওয়ার্ডে কত জন রোগী গুরুতর অসুস্থ তার তালিকা তৈরি করে একটি রিপোর্ট নার্সদের কাছে রাখতে হবে। একই সঙ্গে রাতে রোগী দেখার পরে সংশ্লিষ্ট আরএমওদের ওই রোগীদের সম্পর্কে জানানো বাধ্যতামূলক। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুকুমার বসাক বলেন, “পরিস্থিতি বদলাতে আমরা সব রকম চেষ্টা করছি।”

Mobile Phones Nurses Surveillance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy