Advertisement
২৬ অক্টোবর ২০২৪
মিষ্টি নিয়ে আক্ষেপ ক্রেতা, বিক্রেতা দু’তরফেরই
Sweet Sellers

‘দামে পোষাতে পারছি না’

কালনা শহর এবং তার আশপাশের এলাকায় অন্তত ৫০টি মিষ্টির দোকান রয়েছে। মিষ্টি ব্যবসায়ীদের ছানার যোগান দেয় শহরের তেঁতুলতলা এবং চকবাজার এলাকার দুটি আড়ত।

কাটোয়ার একটি দোকানে ভাইফোঁটার আগে মিষ্টি তৈরি। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

কাটোয়ার একটি দোকানে ভাইফোঁটার আগে মিষ্টি তৈরি। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২২ ০৯:৪২
Share: Save:

মহালয়ার পর থেকেই মিষ্টির মরসুম শুরু। ভাইফোঁটায় চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। মিষ্টি ব্যবসায়ীদের দাবি, একদিকে কাঁচামালের দাম ক্রমাগত বেড়ে চলা, তার সঙ্গে দাম না বাড়িয়ে মিষ্টির বৈচিত্র্য, গুণমান বজায় রাখা— দুইয়ের চাপে নাজেহাল তাঁরা।

কালনা শহর এবং তার আশপাশের এলাকায় অন্তত ৫০টি মিষ্টির দোকান রয়েছে। মিষ্টি ব্যবসায়ীদের ছানার যোগান দেয় শহরের তেঁতুলতলা এবং চকবাজার এলাকার দুটি আড়ত। ব্যবসায়ীরা জানান, কালনার মাখা সন্দেশের চাহিদা রয়েছে রাজ্য জুড়ে। ছানা, চিনি-সহ নানা উপকরণ দিয়ে তৈরি হয় সেই মিষ্টি। সারা বছর কেজি প্রতি মাখা সন্দেশ বিক্রি হয়েছে ২৫০ টাকা দরে। এখন তার দাম সাড়ে তিনশো টাকা কেজি। দোকানিরা বলেন, ‘‘২৫০ টাকা কেজির কমে ভাল ছানা মেলে না। মিষ্টির দাম এর থেকে কম কী করে হবে?’’

যে কোনও সন্দেশেই চিনির ভাগ কমিয়ে মিহি করে বেঁটে নানা সুগন্ধি মিশিয়ে ছাঁচে ফেলা হয়। কাঁচামালের মান ভাল হলে সার্থক হয় কারিগরদের পরিশ্রম। তবে মফস্‌সলের বাজারে এখনও পাঁচ থেকে ১০ টাকার মধ্যে মিষ্টির চাহিদা বেশি। ফলে মান এক রেখে ওই দামে মিষ্টি বানাতে হয় বিক্রেতাদের। এই সময়ে আট থেকে ২৫ টাকা দরেরও মিষ্টি তৈরি করেন তাঁরা। চকবাজার এলাকার মিষ্টি ব্যবসায়ী রণজিৎ মোদক বলেন, ‘‘করোনা পর্ব পেরিয়ে উৎসবের মরসুমে ভাল বিক্রির আশা করেছিলাম। কিন্তু তেমন কিছু বিক্রি বাড়েনি। মিষ্টির দাম বাড়াতে পারছি না, অথচ জিনিসপত্রের দাম ক্রমাগত বাড়ছে।’’ তিনি জানান, মাস চারেক আগে যে গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম ছিল ১১০০ টাকা। এখন তা হয়েছে ১৯০০ টাকা। পাম তেলের দাম প্রতি ১৫ কেজির টিনে ছ’শো টাকা বেড়েছে। চিনিও কুইন্টাল প্রতি ৩০০ টাকা এবং কারিগরদের মজুরি ১০ শতাংশ বেড়েছে। গত বছর পুজোয় লঙ্কা, কফির মতো স্বাদে রসগোল্লা তৈরি করে ক্রেতাদের মন কেড়েছিল শহরের ছোটদেউড়ি এলাকার একটি দোকান। মালিকদের তরফে অনির্বাণ দাস বলেন, ‘‘ক্রেতাদের ভিড় তেমন নেই। ভাইফোঁটার দিনটাই ভরসা।’’

শহর ছাড়িয়ে নিভুজি মোড় এলাকার একটি বড় মিষ্টির দোকানের মালিক দেবরাজ বারুই জানান, ভাইফোঁটায় কাঁচামালের বাজার আরও চড়েছে। গরুর দুধ ৬০-৭০ টাকা লিটার, মোষের দুধ ১২০ টাকা লিটারে বিক্রি হচ্ছে। ছানার দাম ২০০-২৫০ টাকা কেজি। অথচ মাস দুয়েক আগেও ৫০-৭০ টাকা কেজিতে দুধ মিলেছে। বেড়েছে কেরোসিন, জ্বালানি কাঠের দাম। ফলে মিষ্টি খানিক কড়া তাঁদের কাছে।

আবার ক্রেতাদেরও দাবি, সব জিনিসের দাম বাড়ছে। কিন্তু রোজগার সে ভাবে বাড়ছে না। করোনা-পর্বে কাজও হারিয়েছেন বহু মানুষ। ফলে দাম বাড়লে উৎসবে, আনন্দে মিষ্টিমুখ করাটাও মুশকিল হয়ে যাবে অনেকেরই।

অন্য বিষয়গুলি:

Sweet Sellers Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE