Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

গরমে সুনসান রাস্তাঘাট, সতর্কতা

ঘড়ির কাঁটা ১০টার ঘরে যেতে না যেতেই রাস্তাঘাটা ফাঁকা। গাছতলায় জড়ো হয়েছে গরু, কুকুরের দল। সাইকেল বা মোটরবাইকে যে ক’জনকে যেতে দেখা যাচ্ছে, রোদ চশমা, টুপি, কাপড়ে মুখ ঢাকা।

বাঁ দিকে, পুকুরে জল শুকোতে শুরু করেছে। সেই সুযোগে চলছে মাছ ধরা। খান্দরা এলাকায়।

বাঁ দিকে, পুকুরে জল শুকোতে শুরু করেছে। সেই সুযোগে চলছে মাছ ধরা। খান্দরা এলাকায়।

নিজস্ব সংবাদাদাতা
দুর্গাপুর ও আসানসোল শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ০১:০৬
Share: Save:

ঘড়ির কাঁটা ১০টার ঘরে যেতে না যেতেই রাস্তাঘাটা ফাঁকা। গাছতলায় জড়ো হয়েছে গরু, কুকুরের দল। সাইকেল বা মোটরবাইকে যে ক’জনকে যেতে দেখা যাচ্ছে, রোদ চশমা, টুপি, কাপড়ে মুখ ঢাকা। অনেকে আবার মাথায় জড়িয়েছেন ভিজে তোয়ালে। তাপপ্রবাহের মধ্যে গত তিন-চার দিন ধরে আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের ছবিটা এই রকম।

সপ্তাহখানেক ধরেই দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় তাপপ্রবাহ চলছে। রবিবার থেকে তা শুরু হয়েছে কলকাতাতেও। এ দিন খনি-শিল্পাঞ্চলে তাপমাত্রা ছিল ৪৪ ডিগ্রির আশপাশে। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ইতিমধ্যে গরমে সুস্থ থাকার জন্য নানা উপায়-সহ নির্দেশিকা ছড়ানো হয়েছে।

সরকারি স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের জন্য ছুটি ঘোষণা হলেও বেসরকারি অধিকাংশ স্কুলেই চলছে পঠনপাঠন। সকালে স্কুল যাওয়ার সময়ে তেমন সমস্যা নেই। কিন্তু বেলায় ছুটি হওয়ার পরে বাড়ি ফেরার সময়ে নেতিয়ে পড়ছে কচিকাঁচারা। রাস্তার মোড়ে-মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের নাভিশ্বাস। নিতান্ত দরকার না পড়লে কেউ বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছেন না। দুপুরের পরে রাস্তাঘাট সুনসান। দোকানপাটও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তাড়াতাড়ি। বেনাচিতি, চণ্ডীদাস, স্টেশন বাজারে ঘুরে দেখা গিয়েছে, সন্ধের আগে সে ভাবে বিক্রিবাটা হচ্ছে না। তবে সিটি সেন্টার বা বেনাচিতির শপিংমলগুলিতে বাতানুকূল পরিবেশে প্রয়োজনের থেকেও খানিকটা সময় বেশি কাটাতে অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন। ভিড় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র, ফ্যান, কুলারের দোকানেও।


কাল্লাতে জলের জন্য লাইন। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ ও শৈলেন সরকার।

চিকিৎসকেরা জানান, খুব প্রয়োজন ছাড়া বেলার দিকে না বেরোনোই ভাল। শশা, দই জাতীয় খাবার খেতে হবে। জল খেতে হবে বারবার। আসানসোল জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস হালদার জানান, বেশ কিছু নিয়মাবলীর কথা প্রচার করা হচ্ছে এলাকায়। নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্যে একাধিক অঞ্চলে ঠান্ডা পানীয় জলের ব্যাবস্থা করা হয়েছে। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক থেকে বিডিও এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে সচেতনামূলক প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেবাশিসবাবু আরও জানান, বিভিন্ন হাসপাতালের প্রধানদের নির্দেশ পাঠানো হয়েছে, পর্যাপ্ত ওআরএস এবং নর্মাল স্যালাইন মজুত রাখতে হবে। পর্যাপ্ত বরফও রাখতে বলা হয়েছে। হিট স্ট্রোক, হিট হাইপারটেনশন ও হিট ক্র্যাম্পে আক্রান্ত হয়ে কেউ এলেই সঙ্গে সঙ্গে ভর্তি করে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘এই ধরনের কোনও রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলে তাঁদের সাপ্তাহিক রিপোর্ট স্বাস্থ্য দফতরকে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস মঙ্গলবার বিকেলে জানান, এখনও পর্যন্ত গরমে অসুস্থ হয়ে কেউ হাসপাতালে আসেননি। তবে অন্য বারের থেকে জ্বর ও ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেক রোগী এ বার বেশি ভর্তি হচ্ছেন। দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, যেসব জায়গায় পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে সেগুলি চিহ্নিত করে ট্যাঙ্কে করে পানীয় জল পাঠানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা জানান, পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

summer hot weather AC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE