Advertisement
E-Paper

আত্মহত্যায় প্ররোচনা,  ধৃত শিক্ষক

‘ঘনিষ্ঠ’ মূহুর্তের ছবি ও ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাঁর মেয়েকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছেন মেমারি কলেজের ‘সাসপেন্ড’ হওয়া আংশিক সময়ের এক শিক্ষক। ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ায় আত্মঘাতী হয়েছেন ওই তরুণী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৮ ০৮:১০
আদালতে তোলার পথে অভিযুক্ত রবীন মজুমদার। নিজস্ব চিত্র

আদালতে তোলার পথে অভিযুক্ত রবীন মজুমদার। নিজস্ব চিত্র

‘ঘনিষ্ঠ’ মূহুর্তের ছবি ও ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাঁর মেয়েকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছেন মেমারি কলেজের ‘সাসপেন্ড’ হওয়া আংশিক সময়ের এক শিক্ষক। ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ায় আত্মঘাতী হয়েছেন ওই তরুণী— সোমবার রাতে মেমারি থানায় এমনই অভিযোগ জানান মায়েরকোল পাড়ার বাসিন্দা ওই তরুণীর বাবা। তাঁর অভিযোগ, মেয়ের মৃত্যুর জন্য সোমেশ্বরতলার বাসিন্দা, ওই শিক্ষক রবীন মজুমদারই দায়ী। রাতেই ওই শিক্ষককে গ্রেফতারের দাবিতে বাস-লরির টায়ার জ্বালিয়ে মেমারি-কাটোয়া রোড অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সোমবার গভীর রাতে হুগলির গুড়াপের হাসানপুর থেকে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার পরে অবরোধ ওঠে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে মেমারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ মেলে নিজের বাড়িতেই। অভিযোগ, খবর পাওয়ার পরেই পালিয়ে হুগলির হাসানপুরের এক আত্মীয়ের বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন ধৃত। গুড়াপ থানার পুলিশের সাহায্যে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

এ দিন আদালতে যাওয়ার পথে অভিযুক্তের যদিও দাবি, “আমাদের মধ্যে মামা-ভাগ্নির সম্পর্ক ছিল। জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল বলে ওই ছাত্রী আপত্তি জানিয়েছিল। আমি ওর পরিবারকে স্নাতক হওয়ার পর বিয়ে দেওয়ার জন্য বলেছিলাম। সে কথা মানতে নারাজ ছিল পরিবার। আর সে কারণেই আত্মঘাতী হল মেয়েটি।’’ ওই শিক্ষকের আরও দাবি, ‘‘আমি বিয়েতে বাধা দিয়েছিলাম বলে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হল।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত বিবাহিত। তাঁদের একটি সন্তানও রয়েছে। বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে ওই দম্পতির মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত বলেও জানা গিয়েছে।

আংশিক সময়ের ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মেমারি থানায় একগুচ্ছ অভিযোগ রয়েছে। এলাকায় তৃণমূলের নেতা বলেও পরিচিত রয়েছে অভিযুক্তের। পুলিশ জানিয়েছে, মেমারি কলেজের শিক্ষাকর্মী তথা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মেমারি ১ ব্লকের সভাপতি মুকেশ শর্মার সঙ্গী অভিযুক্ত রবীন মজুমদার। তাঁর বিরুদ্ধেও মেমারি থানায় কলেজের শিক্ষকরা এ বছরের ৩১ মে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। কলেজে ইউনিট টেস্ট চলাকালীন প্রশ্ন চুরিরও অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস চক্রবর্তীর রিপোর্টের ভিত্তিতে কলেজের প্রশাসক, মহকুমাশাসক (বর্ধমান দক্ষিণ) তাঁকে ‘সাসপেন্ড’ করেন। পরে বেতনও বন্ধ করে দেওয়া হয়। অধ্যক্ষ বলেন, “এক ছাত্রীর অভিযোগ-সহ ১৬টি বিষয়ের উপর কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও উত্তর আসেনি।’’

রবীনবাবু ধরা পড়ার পরে অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূলের একাংশ। দলীয় সূত্রে জানা যায়, মেমারি শহরের পুরপ্রধানের ওয়ার্ডের বাসিন্দা হলেও রবীন পুরপ্রধানের অনুগামী ছিলেন না। তাঁকে দেখা যেত উপপুরপ্রধান সুপ্রিয় সামন্ত, মেমারি ১ ব্লক সভাপতি মধুসূদন ভট্টাচার্য ও বিধায়ক নার্গিস বেগমের সঙ্গে। তবে ধরা পড়ার পরেই তিন জনই তাঁর সঙ্গে এড়ানোর চেষ্টা করেছেন। উপপুরপ্রধান বলেন, “আমি কে? আমার সঙ্গে লোক থাকবে!” মধুসূদনবাবু বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে।’’ আর বিধায়ক বলেন, “অনেকই আসেন। ছবি তোলেন। কে কোথায় কী করবে তার ঠিকা কী আমি নিয়ে রেখেছি?”

Rape Suicide Teacher Arrested
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy