Advertisement
E-Paper

নদীতে ঝাঁপ মহিলার, বাঁচালেন শিক্ষক

কাটোয়ার চুড়পুনি প্রাথমিক বিদ্যালের শিক্ষক কৌশিকবাবুর বাড়ি শহরের কাছারিপাড়ায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৭ ০২:১০
শিক্ষক কৌশিক দে। —নিজস্ব চিত্র।

শিক্ষক কৌশিক দে। —নিজস্ব চিত্র।

মাঝনদীতে পৌঁছতেই নৌকা থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন মহিলা। সেই সময়ে স্নানে নেমেছিলেন এক শিক্ষক। মঙ্গলবার সকালে কাটোয়ার শাঁখাই ঘাটে চেঁচামেচি শুনে সাঁতরে গিয়ে মহিলাকে উদ্ধার করলেন কৌশিক দে নামে প্রাথমিক স্কুলের ওই শিক্ষক। কাটোয়ায় মাস দুয়েকের মধ্যে এ ভাবে নৌকা থেকে ঝাঁপ দেওয়ার ঘটনা ঘটল তিন বার, যা নিয়ে চিন্তায় মাঝিরা।

কাটোয়ার চুড়পুনি প্রাথমিক বিদ্যালের শিক্ষক কৌশিকবাবুর বাড়ি শহরের কাছারিপাড়ায়। তিনি জানান, প্রতিদিনই ভোরে ভাগীরথীতে স্নানে আসেন তিনি। এ দিনও জনা পনেরো সঙ্গীকে নিয়ে সকাল ৬টা নাগাদ শাঁখাই ঘাটে যান। তেল মেখে স্নান করতে নামার পরেই মাঝনদীতে কাটোয়া থেকে শাঁখাইগামী নৌকার মাঝিদের চিৎকার কানে আসে। বুঝতে পারেন, কেউ জলে ঝাঁপ দিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাড় থেকে ‘লাইফ সেভিং রিং’ নিয়ে সাঁতরে মাঝগঙ্গায় পৌঁছে যান কৌশিকবাবু। রিংটি ছুঁড়ে দেন বছর পঁয়ত্রিশের মালতী রায়ের দিকে। কিন্তু মালতীদেবী সেটি ধরতে চাননি বলে দাবি কৌশিকবাবুর। তিনি নিজেই রিং-এ মহিলার চুল ধরে তাঁকে নৌকায় তোলেন।

ঘাটে ফিরে একটি দোকান থেকে গরম দুধ, চা খাওয়ানো হয় মালতীদেবীকে। কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘প্রথমে তিনি নাম-ঠিকানা বলতে চাইছিলেন না। জোরাজুরি করার পরে তা বলেন।’’ পানুহাট পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা মালতীদেবীকে কাটোয়া থানায় পৌঁছে দেন কৌশিকবাবু ও তাঁর বন্ধু সুনীলেন্দু বাগচি। কাটোয়া হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে দুপুরে ছেড়ে দেওয়া হয় মহিলাকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তাঁত বুনে সংসার চালান মালতীদেবী। তাঁর স্বামী, মণ্ডলহাটের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ রায় কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। পরিবার সূত্রে জানা যায়, দিন সাতেক আগে স্বামী বাড়ি ফেরার পর থেকে অশান্তি হচ্ছিল বাড়িতে। এ দিন সকালে চুঁচুড়ায় আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরোন মালতীদেবী। এ দিন বাড়ির দাওয়ায় বসে তিনি বলেন, ‘‘বাঁচতে চাইনি। কিন্তু কৌশিকবাবু নতুন জীবন দিলেন। ওঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’’

নদীতে ডুবন্ত মানুষকে বাঁচানো এই প্রথম নয় কৌশিকবাবুর কাছে। বছর দুয়েক আগে ওই ঘাটেই সাঁতার শিখতে গিয়ে ডুবতে বসেছিলেন এক যুবক। তাঁকে উদ্ধার করেন ওই শিক্ষক। মাসখানেক আগেও এই ঘাটে গঙ্গার জল কতটা বেড়েছে তা দেখতে গিয়ে নৌকা থেকে পড়ে যায় পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্র। তাকেও টেনে তোলেন কৌশিকবাবুই। তাঁর বন্ধু উত্তম দাস, সুরজিৎ মুখোপাধ্যায়েরা এ দিন বলেন, ‘‘ওঁর প্রাণ বাঁচানোর তাগিদ আমাদেরও অনুপ্রাণিত করে।’’

Life Saved Suicide Kaushik Dey Teacher
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy