Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

আরও চাষিকে প্রকল্পে জুড়তে পাল্টাবে নিয়ম

চাষের জন্য যাতে অর্থের অসুবিধা না হয়, সে জন্য রাজ্যে কিসান ক্রেডিট কার্ডের (‌‌কেসিসি) উপভোক্তা সংখ্যা আরও ২০ লক্ষ বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার।

জমিতে জল জমে চাষে ক্ষতির অভিযোগ উঠছে। নিজস্ব চিত্র

জমিতে জল জমে চাষে ক্ষতির অভিযোগ উঠছে। নিজস্ব চিত্র

কেদারনাথ ভট্টাচার্য
কালনা শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২০ ০৩:০০
Share: Save:

চাষের জন্য যাতে অর্থের অসুবিধা না হয়, সে জন্য রাজ্যে কিসান ক্রেডিট কার্ডের (‌‌কেসিসি) উপভোক্তা সংখ্যা আরও ২০ লক্ষ বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার। তিনি জানান, রাজ্য স্তরের বিভিন্ন আধিকারিকদের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। ৩০ জুনের মধ্যে লক্ষ্যপূরণের চেষ্টা চলছে। পূর্ব বর্ধমানে আরও ১ লক্ষ ৯০ হাজার চাষিকে এই প্রকল্পে নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে বলে জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

কিসান ক্রেডিট কার্ড থাকলে চাষিরা বছরে মাত্র সাত শতাংশ সুদের হারে ঋণ পেয়ে থাকেন। সময়ে ঋণ শোধ করতে পারলে আরও ৩ শতাংশ সুদ ছাড় মেলে। কৃষি-কর্তারা জানান, শুধু সহজ শর্তে ঋণই নয়, ‘কেসিসি’-র মাধ্যমে ঋণ নিলে ফসল শস্যবিমার আওতায় চলে আসে। ফলে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে চাষিদের ক্ষতিপূরণ নিয়ে ভাবতে হয় না। তবে ‘কেসিসি’-র আওতায় আসতে এত দিন চাষিদের নিজেদের নামে জমির পরচা থাকতে হত। তা না থাকায় বহু চাষি অন্তর্ভুক্ত হতে পারতেন না। সমস্যা আরও বেশি ছিল ভাগচাষি, চুক্তি-চাষিদের ক্ষেত্রে। চাষের মূলধন জোগাড় করতে তাঁদের অনেককেই দৌড়তে হত মহাজনদের কাছে।

শুক্রবার প্রদীপবাবু পূর্ব বর্ধমানে একটি বৈঠক করেন। সেখানে ছিলেন জেলা কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় এবং মহকুমা ও ব্লক পর্যায়ের কৃষি আধিকারিকেরা। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, জেলায় কোন ব্লকে, কত কিসান ক্রেডিট কার্ডের উপভোক্তা বাড়ানোর চেষ্টা করা হবে। এ ব্যাপারে প্রতিটি ব্লকে ব্যাঙ্কের বিভিন্ন শাখাকে লক্ষ্যমাত্রাও ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাঙ্কগুলিই শিবির করে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করবে। শিবিরে পরিকাঠামো দিয়ে সাহায্য করবে ব্লক প্রশাসন। শিবিরে হাজির থাকবেন কৃষি দফতর, ভূমি ও ভূমি সংস্থার দফতরের প্রতিনিধিরা।

কৃষি-কর্তারা জানান, কিসান ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে আগে চাষির নামে পরচা থাকতেই হত। নতুন নিয়মে, ব্লক কৃষি আধিকারিক কোনও চাষি কতটা জমিতে চাষ করতে চলেছেন, সে সংক্রান্ত নির্দিষ্ট শংসাপত্র দিলেই তিনি ‘কেসিসি’-তে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। জগন্নাথবাবু বলেন, ‘‘এখন কেসিসি-র সুবিধা পান জেলার প্রায় ৪ লক্ষ ৩২ হাজার চাষি। আরও ১ লক্ষ ৯০ হাজার চাষিকে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য রয়েছে।’’

প্রদীপবাবু জানান, গত রবি মরসুমে ৪০ লক্ষ চাষি নিখরচায় ‘বাংলা ফসলবিমা যোজনা’র সুযোগ নিতে পেরেছিলেন। তবে পরিসংখ্যান নিয়ে দেখা গিয়েছে, প্রায় ২৬ লক্ষ চাষি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেননি। তাঁদের যাতে সহজ শর্তে ঋণ পেতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য কেসিসি উপভোক্তার সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। জেলার এক কৃষি-কর্তার কথায়, ‘‘বাংলা ফসলবিমা যোজনা প্রকল্পে অঋণী চাষিদের আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। মুলত তাঁদের কেসিসি-র আওতায় আনার উদ্যোগ শুরু হয়েছে, যাতে ঋণ পেতে অসুবিধা না হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Farmer Insurance Net Banking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE