দশমীতে দেবী রওনা দিলেন কৈলাসের উদ্দেশে। সেই সঙ্গে ছুটি পেল প্রদীপের ভূতেরাও। প্রদীপের জিন হয় শোনা গেলেও এই প্রদীপের ভূতেরা কিন্তু বাংলার। ব্রহ্মদৈত্য, শাকচুন্নি, কারিয়া পিরেত-সহ বিভিন্ন প্রকারের ভূতেদের ‘ডিউটি’ ছিল পুজোতে। ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের বই থেকে সেই সব ভূতেরা নেমে এসেছিল গোলাহাট প্রগতি সংঘের মণ্ডপে। এই পুজোর আয়োজক হিসাবে পরিচিত কাউন্সিলর তথা বর্ধমান পুরসভার জঞ্জাল বিভাগের এমসিআইসি প্রদীপ রহমান। তাঁর পুজোর ভূত বলেই স্থানীয়েরা মজা করে নাম দিয়েছেন ‘প্রদীপের ভূত’।
শুধু দেবী নয় ভূত দেখতেও ভিড় জমিয়েছিলেন দর্শনার্থীরা। তাঁদের বিনোদন দিতে শ্যাওড়া গাছ থেকে নেমে এসে ‘নেত্য’ও করেছিল অশরীরীরা। তা দেখে শিহরিত হয়েছিলেন দর্শনার্থীরা। এক-দু’জন অবশ্য অসুস্থ হয়েও পড়েছিলেন। পুজো কমিটির তৎপরতায় সঙ্গে সঙ্গে নেওয়া হয়েছিল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। এই প্রসঙ্গে আয়োজক প্রদীপ জানিয়েছেন, ভূতের ভয় পাওয়ানো উদ্দেশ্য ছিল না। বোঝাতে চাওয়া হয়েছিল ভূত বলে আসলে কিছুই নেই। সবই সাজানো।
প্রগতি সংঘের মণ্ডপের প্রতিমা। —নিজস্ব চিত্র।
স্থানীয় নেতা এলাকায় ‘সর্ব ধর্ম সমন্বয়’-এ বিশ্বাসী বলেই পরিচিত। তিনি যেমন কবরস্থানের উন্নতি করেছেন তেমনই তৈরি করিয়েছেন একাধিক শিব ও কালী মন্দির। বাঁকা নদীর ধারে শিবের মূর্তি বসিয়েছেন তিনি। সেখানে প্রতি সোমবার আরতির বিশেষ ব্যবস্থা আছে। জানা গিয়েছে, বসানো হবে গৌতম বুদ্ধের মূর্তিও। ‘সম্প্রীতির আলো’ দিয়েই প্রদীপ চান ‘ভেদাভেদের অন্ধকার’ দূর করতে।
আরও পড়ুন:
মাত্র দু’হাজার টাকার বিনিময়ে বিয়েবাড়ির জন্য হল ঘর ভাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে প্রদীপের দফতর। তবে আর্থিক ভাবে দুঃস্থদেরকে কোনও টাকা দিতে হয় না। স্থানীয়দের প্রিয় সেই প্রদীপই দেবীর সঙ্গে এনেছিলেন ভূত। দেবী বাপের বাড়ি থেকে রওনা দিতেই ছুটি পেল সেই ভূতেরা।