—নিজস্ব চিত্র।
ফুলবানুর হাতে গুড়ের তেমন স্বাদ খোলতাই হত না। তাই মাজুবির কাছে আবার ফিরে গিয়েছিলেন সওদাগর ছবির নায়ক। এবার কিন্তু হাতের জাদু নয়, আবহাওয়াই খলনায়ক শিউলিদের কাছে। খেজুরগুড়ে সেই স্বাদ মিলছে না এ বার। তাই বাজারেও মন্দা। উৎপাদনও কম। বাজারে যে গুড়ের রসগোল্লা বা মিষ্টি এসেছে, তার বেশিরভাগেই কৃত্রিম স্বাদ আর গন্ধ। আসল গুড়ের স্বাদ তাই ভুলে যেতে বসেছে গ্রামবাংলা।
পূর্ববর্ধমানের আউশগ্রামের শিউলি বা পাসি সুলতান জানান, এ বার রসে তেমন জুত নেই। প্রথম কাট কোনও রকম হলেও দ্বিতীয় কাটের তেমন স্বাদ নেই। গন্ধও নেই আগের মতো। এর কারণ হিসাবে শিউলিদের মত হল, ডিসেম্বর পড়ে গেলেও এ বার শীত তেমন নেই। তাই রসের জুত নেই। সাদা হয়ে যাচ্ছে রস। তিনি জানান, আজ থেকে ৪০ বছর আগেও রস কাটতে এসে নানার সঙ্গে দু’বার করে আগুন পোহাতে হত। এ বার সে বালাই নেই। ক্রেতারাও তাই বলছেন, ‘‘এ কেমন গুড়? স্বাদ গন্ধ কোথায় গেল?’’ তাঁদের চিন্তা, নদিয়া থেকে এসে ১২০০ গাছ লিজ নিয়েছেন। দিতে হবে ১ লাখ টাকা। এখন টাকা তুলবেন কী ভাবে, লাভই বা কী হবে, তা নিয়েই চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা।
অন্য দিকে, রসের সমঝদার দেবকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলির ডানকুনি থেকে রস আর খেজুর গুড় কিনতে এসেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘শীতের অন্যতম অনুষঙ্গ এই খেজুর গুড়। পাটালি আর একটু ভাল নলেনের টানে এখানে আসা। কিন্তু এ বার সেই মজা নেই।’’ আসলে ‘ভিলেন’ ঠান্ডা। তবে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ। পূর্ব বর্ধমান জেলা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গে হালকা আবার, কোথাও মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে। নিম্নচাপ সরলে জমিয়ে উত্তুরে বাতাস বইবে, জাঁকিয়ে শীত পড়বে, আপাতত এই আশায় বাঁচছেন শিউলিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy