Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

দীপাবলিতেও ঘর আঁধারেই

শ্রীখণ্ড হল্ট স্টেশন থেকে বাউড়া যাওয়ার পথে বাঁ দিকে চূড়পুনির ঠাকরুনতলা পাড়। গ্রাম থেকে বেশ খানিকটা দূরে ছোট্ট পাড়ায় বাস করেন ২০ ঘর আদিবাসী ও তফসিলি সম্প্রদায়ের মানুষ।

লম্ফ জ্বালিয়ে পড়াশোনা, কাটোয়ার চুড়পুনিতে। নিজস্ব চিত্র

লম্ফ জ্বালিয়ে পড়াশোনা, কাটোয়ার চুড়পুনিতে। নিজস্ব চিত্র

সুচন্দ্রা দে
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৩৩
Share: Save:

দুয়ারে দীপাবলি, অথচ ঘরের আঁধার কাটেনি তাঁদের।

শ্রীখণ্ড হল্ট স্টেশন থেকে বাউড়া যাওয়ার পথে বাঁ দিকে চূড়পুনির ঠাকরুনতলা পাড়। গ্রাম থেকে বেশ খানিকটা দূরে ছোট্ট পাড়ায় বাস করেন ২০ ঘর আদিবাসী ও তফসিলি সম্প্রদায়ের মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, বহু বার আবেদন জানিয়েও বিদ্যুৎ সংযোগ মেলেনি। এমনকি, মহকুমাশাসকের দফতরে বিক্ষোভ জানিয়েও লাভ হয়নি।

বড় রাস্তা থেকে গ্রামে ঢোকার কোনও রাস্তা নেই। বৃষ্টির জমা জল-কাদা পেরিয়ে পৌঁছতে হয় ওই ঘরগুলিতে। সুকিম কিস্কু, রিনা কিস্কুরা জানান, বছর পাঁচেক আগে গাঙ্গুলিডাঙা থেকে এসে এই পাড়ায় ঘর বাঁধেন তাঁরা। বর্ধমান-কাটোয়া রেললাইনের ধারের খেতজমিতে মজুরি করেন তাঁদের বেশির ভাগ। ধীরে ধীরে জমি কিনে মাটির ঘর বাঁধলেও পাড়ায় বিদ্যুতের সংযোগ আসেনি, দাবি তাঁদের। সোম মুর্মু, প্রিয়াঙ্কা মুর্মুরা বলেন, ‘‘বিকেলের পর থেকে ছেলেমেয়েরা পড়তে বসতে পারে না। মাঠের মাঝে ঘর হওয়ায় অন্ধকারে চলাফেরায় অসুবিধা হয়। পোকামাকড়, সাপের উপদ্রবও হয়।’’ ব্যাটারির আলো বা মোবাইল চার্জ করতে হলেও চূড়পুনি বাসস্ট্যান্ডের দোকানই ভরসা তাঁদের। স্কুল পড়ুয়া রোঞ্জিনা মুর্মু, মারিয়া মুর্মুরা বলে, ‘‘কালীপুজোয় সবাই আনন্দ করে ঘরে মোমবাতি, প্রদীপ জ্বালায়। আমাদের রোজই মোমবাতি বা লম্ফই ভরসা।’’

কিন্তু বারবার আবেদন সত্ত্বেও বিদ্যুৎ সংযোগ মিলছে না কেন?

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বিদ্যুতের খুঁটি বসানো নিয়ে মাধবী দে নামে চূড়পুনির এক বাসিন্দার সঙ্গে আর এক বাসিন্দা চিন্ময় চন্দ্রের জমি সংক্রান্ত একটি বিবাদ ছিল। এ বছরের ১৩ মার্চ কাটোয়া আদালতে মামলাও দায়ের হয়। পরে মামলা মিটে গেলে ওই জমিতে বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতায় ‘নো অবজেকশন’ দেন মাধবী দেবী। সেই নথি কাটোয়া মহকুমাশাসকের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা রঞ্জিত মুর্মু, রেশমি কিস্কুরা জানান, বাউড়া যাওয়ার রাস্তায় সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতাও হয়েছে।

কোশিগ্রামের প্রধান মাফুজা খাতুন বিবি বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষকে পুরো বিষয়টা জানিয়েছি। বিদ্যুৎ দফতরেও বলা হয়েছে।’’ বিদ্যুৎ দফতরের দাবি, কালীপুজোর পরেই কাজ শুরু করা হবে ওই এলাকায়। যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ সংযোগের আশ্বাস দেন মহকুমাশাসক সৌমেন পালও।

দীপাবলিতে না হলেও আঁধার মিটবে, এটাই আশা তাঁদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Diwali Kali Puja 2019 Electricity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE