Advertisement
E-Paper

জামিনদার নেই, জেলেই তিন নির্দোষ

দুর্গাপুর এক্সপ্রেস হয়ে বাড়ির ফেরার সময় বর্ধমান শহরের গোদার কাছে চার জন মোটরবাইক আরোহী তাঁদের আটকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে, মারধর করে টাকা নিয়ে চম্পট দেয়। পুলিশ তদন্তে নেমে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ধৃতরা যুক্ত আছেন বলে জানতে পারেন। তাঁদের গ্রেফতারও করা হয়।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৮ ০১:৩৩
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

জামিনদার নেই, তাই জেলেই ‘বন্দি’ পুলিশের খাতায় নির্দোষ তিন যুবক। গত এক বছর ধরে তাঁদের ঠিকানা, বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার।

বিনা বিচারে আটকে থাকা ওই তিন জন হলেন খণ্ডঘোষের লালচাঁদ মল্লিক, তপন মান্ডি আর রায়নার বেলসরের শেখ কুতুবউদ্দিন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধান ব্যবসায়ী শেখ গোলাম রসুল ২০১৬ সালের ১৬ অগস্ট ওই তিন জনের বিরুদ্ধে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, রায়নার বাঁকুড়া মোড়ে একটি চালকলে ধান বিক্রি করে ১ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা নিয়ে ট্রাক্টরে মঙ্গলকোটের বরাগড়ে ফিরছিলেন তাঁর দুই কর্মী গণেশ থান্ডার ও পলাশ মাঝি। দুর্গাপুর এক্সপ্রেস হয়ে বাড়ির ফেরার সময় বর্ধমান শহরের গোদার কাছে চার জন মোটরবাইক আরোহী তাঁদের আটকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে, মারধর করে টাকা নিয়ে চম্পট দেয়। পুলিশ তদন্তে নেমে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ধৃতরা যুক্ত আছেন বলে জানতে পারেন। তাঁদের গ্রেফতারও করা হয়। তবে বছর খানেক ধরে তদন্ত করার পরেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও প্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি। আদালতে নির্দেশে জেল হাজতে থাকাকালীন দোষীদের চিহ্নিত করতে টিআই প্যারেড করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। কিন্তু অভিযোগকারী বা তাঁর দুই কর্মচারী অভিযুক্তদের সনাক্ত করতে পারেননি। গত বছর ১৪ জুলাই তদন্তকারী অফিসার ‘ফাইনাল রিপোর্ট’ পেশ করে জানান, অভিযুক্তরা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত ছিল না। ওই রিপোর্ট পাওয়ার পরে অভিযোগকারীর মতামত চেয়ে আদালত চিঠি দেয়। অভিযোগকারীর কোনও উত্তর অবশ্য আদালতে জমা পড়েনি।

আইনজীবীরা জানান, ওই রিপোর্ট পাওয়ার পরেই বিচারক ওই তিন জনকে জামিন দেন। কিন্তু তাঁদের হয়ে কোনও আইনজীবী বা ল’ক্লার্ক জামিনদার হতে চাননি। বর্ধমান আদালতের আইনজীবী হরদীপ সিংহ অহলুওয়ালিয়ার দাবি, “প্রথম থেকেই ওই তিন জনের কোনও ব্যক্তিগত আইনজীবী ছিল না। আইনি সহায়তা কেন্দ্র থেকে তাঁদের জন্য আইনজীবী দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নিয়মের বেড়াজালে আইনি সহায়তা কেন্দ্র সবসময় জামিনদার হতে চায় না। ফলে অনেক নির্দোষই বিনা বিচারে আটকে থাকেন।’’ আইনজীবীদের দাবি, এই তিন জনকে প্রথমে পাঁচ হাজার টাকার বন্ডে জামিন দেন বিচারক। ওই টাকার একটা নির্দিষ্ট অংশ আদালতে জমা দিয়ে জামিনের বন্ড নিতে হয় জামিনদারকে। কিন্তু টাকা কে দেবে বা জামিন হওয়ার পর অভিযুক্তরা নির্দিষ্ট সময়ে আদালতে হাজির না হলে সে দায় কে নেবে, এ সব ভেবে আইনি সহায়তা কেন্দ্রের কেউ জামিনদার হতে চাননি।

মঙ্গলবার আদালতে ওই তিন জনের সমস্যার কথা বিচারকের কানে যায়। সরকারি আইনজীবী নারদকুমার ভুঁইঞা আদালতকে জানান, পুরোটা শুনে বিচারক ওই তিন জনকে ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে আইনি সহায়তা কেন্দ্রকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সিজেএম রতনকুমার গুপ্ত।

Jail Innocent Gurantor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy