Advertisement
E-Paper

ভোট মিটলেও টানা ভাঙচুর, মারের নালিশ

এলাকায় আসামাজিক কাজকর্ম চলছে। তার প্রতিবাদ করেছিলেন একটি ক্লাবের সম্পাদক। বিরোধীদের অভিযোগ তারপরেই শাসক দলের লোকজন হামলা চালায় এলাকায়। ভাঙচুর চালানো হয় ক্লাবেও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০১:৫৬
হামলার বিরুদ্ধে বামেদের প্রতিবাদ সভা। —নিজস্ব চিত্র।

হামলার বিরুদ্ধে বামেদের প্রতিবাদ সভা। —নিজস্ব চিত্র।

এলাকায় আসামাজিক কাজকর্ম চলছে। তার প্রতিবাদ করেছিলেন একটি ক্লাবের সম্পাদক। বিরোধীদের অভিযোগ তারপরেই শাসক দলের লোকজন হামলা চালায় এলাকায়। ভাঙচুর চালানো হয় ক্লাবেও। বাড়ি বাড়ি চড়াও হয়ে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে ধাত্রীগ্রাম স্টেশন লাগোয়া এলাকার ঘটনা। পূর্বস্থলী দক্ষিণের কংগ্রেস প্রার্থীর অভিযোগ, মারধর করা হয়েছে তাঁদের দু’জন সমর্থককেও।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধাত্রীগ্রাম স্টেশন লাগোয়া এলাকায় পেশায় রাজমিস্ত্রী রাজু মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির বাঁশের মাচা রয়েছে। সন্ধ্যা নামলেই সেখানে বিভিন্ন অসমাজিক কাজকর্মের আসর বসে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের একাংশের। ঘটনার সূত্রপাত শনিবার সন্ধ্যায়। ওই সন্ধ্যায় ফের শুরু হয় মদ্যপদের উৎপাত। লাগোয়া একটি ক্লাবের সম্পাদক দীপঙ্কর মিস্ত্রী নামে এক ব্যক্তি রাজুবাবুকে মাচা বন্ধ করার জন্য বলেন। কিন্তু তাতে রাজি হননি রাজুবাবু। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এরপরেই ওই রাজমিস্ত্রীর সঙ্গে বচসা শুরু হয় ক্লাব সদস্যদের। ইতিমধ্যে এলাকায় চলে আসে রাজুবাবুর বন্ধু পিন্টু মণ্ডল। পিন্টু এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল হিসেবেই পরিচিত। পিন্টুর অভিযোগ, ‘‘ওই ক্লাবের এক সদস্য আমাকে মারধর করে।’’ এরপরই পিন্টু লাগোয়া একটি তৃণমূল কার্যালয়ে চলে যান। তারপর তাঁকে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী অভিজিৎ ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ওই সন্ধ্যায় আচমকা শাসক দলের লোকজন সগলবলে হামলা চালায়। ২৫-৩০ জনের একটি দল ক্লাবেও ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। গোটা ঘটনায় দু’জন সমর্থক জখম হয়েছেন বলে কংগ্রেস প্রার্থীর দাবি। লাগোয়া স্বরাজপুর এলাকায় বিভিন্ন বাড়িতে এলোপাথাড়ি লাথি মেরে ভয় দেখানোরও অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কংগ্রেস প্রার্থীর অভিযোগ, ‘‘পরিকল্পিত ভাবেই হামলা ও ভীতি প্রদর্শনের রাস্তায় নেমেছে তৃণমূল।’’

রবিবার বাম-কংগ্রেস জোটের দল ওই এলাকায় যাওয়ার পরিকল্পনা করে। কিন্তু এলাকায় উত্তেজনা থাকায় প্রতিনিধি দলটিকে এলাকায় যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। আজ, সোমবার প্রতিনিধি দলটি মহকুমাশাসকের কাছে এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাবে বলে জানা গিয়েছে। ভোটের দিন কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে এজেন্টের দায়িত্ব সামলান স্বরাজপুর এলাকার বাসিন্দা কংস সরকার। তাঁর দাবি, ‘‘এই ঘটনার পর থেকে এলাকার অনেকেই আতঙ্কে রয়েছেন।’’ যদিও ব্লক তৃণমূল সভাপতি উমাশঙ্কর সিংহরায় দাবি, ‘‘একটি অরাজনৈতিক ঘটনায় আমাদের এক কর্মী জখম হয়েছেন।’’ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

গোলমালের খবর মিলেছে কেতুগ্রামের পালিটা বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকায় হাতুড়ে ডাক্তার সৈয়দ হামিদুল খালেক দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসা করছেন। হামিদুল জানান, তিনি ভোটের দিন সিপিএমের বুথ এজেন্টের দায়িত্ব সামলেছিলেন। সেই আক্রোশেই তৃণমূলের লোকজন ১৯ মে পর্যন্ত চেম্বার খোলা যাবে না বলে ফতোয়া জারি করেছেন বলে অভিযোগ হামিদুলের।

শাসকদলের ফতোয়ার চোটে বেশ কয়েকটি দোকানেরও ঝাপ বন্ধ করতে হয় বলে জানান বেশ কয়েকজন বাসিন্দা। যেমন, নিশার আলি। তিনি ভোটের আগে সোশ্যাল মিডিয়াই বিরোধীদের সমর্থনে প্রচার চালিয়েছিলেন। তাঁর একটি কম্পিউটারের দোকান রয়েছে। ছোট্ট চায়ের দোকন রয়েছে সানোয়ার মল্লিকের। সিপিএমের লোকজন দোকানের রোয়াকে বসে খানিক গল্প-গুজব করেছিল। সেই ‘আক্রোশে’ ভোটের পর থেকেই শাসক দলের নেতা-কর্মীদের হুমকির জেরে দোকান খোলা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ সানোয়ারের। যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।

যদিও মহকুমা প্রশাসনের দাবি, অভিযোগ মেলার পরেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত স্বাভাবিক।

tmc cpim election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy