বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না বাদশার। এ বার শহরের পর্যবেক্ষক তথা বর্ধমান পুরসভার অন্যতম পুরপিতা পরিষদের সদস্য খোকন দাসের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বিতর্কের মুখে পড়লেন তিনি। পাল্টা কাউন্সিলর বাদশার কাজকর্ম নিয়ে দলের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসের কাছে ক্ষোভ জানিয়েছেন খোকনবাবুও। জানা গিয়েছে, মন্তেশ্বরে উপ-নির্বাচন মেটার পরে জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেবেন অরূপবাবু।
রবিবার বাবুরবাগ সিএমএস স্কুলের মাঠে সপার্ষদ বসেছিলেন শহরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শেখ বসির আহমেদ ওরফে বাদশা। সেখানেই দলের আর এক কাউন্সিলর খোকনবাবুকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘‘এক অন্ধ দম্পতিকে পানীয় জল নিতে দেবে না বলে দুই পড়শির মধ্যে হাতাহাতি চলছিল। খবর পেয়ে পুরসভা থেকে এসে জখম মহিলাকে হাসপাতালে পাঠালাম। তারপরেও আমার নাম জড়িয়ে দেওয়া হল।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘এ কাজ কে করছে, কেন করছে ,আমি সব জানি। তাঁদের বলতে চাই, যতদিন কাউন্সিলর থাকব, ততদিন ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে একটাই নাম থাকবে—বাদশা।” ওই অন্ধ দম্পতিও অভিযোগ করেছেন এ দিন। বাদশার আরও দাবি, ‘‘খোকন দাস বর্ধমানের প্রতিটি জায়গায় গোষ্ঠীবাজি করছেন। আমার ওয়ার্ডে কোনও গোষ্ঠী নেই। এক জনের মদতে গোষ্ঠী করার চেষ্টা চলছিল, কিন্তু মানুষ তোলাবাজির অভিযোগে তাঁকে এলাকা ছাড়া করেছেন। ওই জন্যই আমাকে মিথ্যা অভিযোগে বারবার ফাঁসানো হচ্ছে।’’ খোকন দাসদের বিরুদ্ধে কাঞ্চননগর রথতলা এলাকায় এক চিকিৎসকের বাড়িতে হামলায় মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বলেও দাবি তাঁর।
যদিও বিষয়টি নিয়ে খোকনবাবু বলেন, “ও নিজের ওয়ার্ডে মারপিট করবে, গোলমাল পাকাবে, মহিলাদের মারধর করবে, তারপর বলবে খোকন দাস করিয়েছে। যত্ত সব চালাকি! দলকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।”
কাউন্সিলর হওয়ার পর থেকেই বারেবারে বিতর্কে জড়িয়েছেন বাদশা। কখনও রাজ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তারকেশ্বর মণ্ডলকে চড় মারার ঘটনায়, কখনও বা স্কুলের জমি দখল, বেআইনি নির্মাণে মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার একটি মামলায় আগাম জামিন নেওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই এক মহিলাকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। যদিও বর্ধমান থানা এখনও ওই ঘটনায় কাউন্সিলরের যোগ রয়েছে কি না তা খুঁজে পায়নি বলে তিনি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, অথচ তাঁর নেতৃত্বে হামলায় থাকা দু’জন মহিলাকে গ্রেফতার করা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বাদশার যদিও দাবি, ‘‘পুলিশ তদন্ত করে আমার দোষ পেলে গ্রেফতার করবে।”
শনিবার মন্তেশ্বরে বিধানসভা উপনির্বাচনে কর্মীসভা সেরে জৌগ্রামের কাছে একটি হোটেলে দাঁড়িয়েছিলেন অরূপ বিশ্বাস। দলীয় সূত্রে জানা যায়, বর্ধমানের কয়েকজন নেতার সামনেই বাদশার কর্মকান্ড নিয়ে অভিযোগ করেন খোকন দাস। অরূপবাবুকে তিনি বলেন, ‘বাদশার জন্য শহরের একটা অংশের কাছে দলের বদনাম হচ্ছে।’ জানা যায়, অরূপবাবু ওই নেতাদের সামনেই স্বপন দেবনাথকে বিষয়টি দেখে রিপোর্ট দেওয়ার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy