Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

‘বিক্ষুব্ধ’ বলেই মিথ্যা মামলা, নালিশ দুর্গাপুরে

তবে আচমকা কেন এমন ‘ষড়যন্ত্র’-এর অভিযোগ? অরবিন্দবাবুর অনুগামীদের দাবি, শাসক দলের নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে ওই কাউন্সিলরের দীর্ঘ দিন ধরেই সাপে-নেউলে সম্পর্ক। এমনকী এক বার প্রকাশ্যেই অরবিন্দবাবু জানিয়ে দিয়েছিলেন, দলে দুর্গাপুরের বাইরের নেতাদের ‘খবরদারি’ তিনি কোনও ভাবেই মেনে নেবেন না।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৭ ১১:০০
Share: Save:

এই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ থাকলেও পুলিশ-প্রশাসন এক সময় পদক্ষেপ করেনি। কিন্তু দুর্গাপুর পুরভোটের আগে সেই তৃণমূল ‘কাউন্সিলর’ অরবিন্দ নন্দীই এখন ‘বিক্ষুব্ধ’। নির্দল হিসেবে মনোনয়নপত্রও জমা দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী ও কয়েক জন অনুগামী। সেই ‘রোষে’ই তাঁকে তৃণমূল মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করলেন অরবিন্দবাবু।

সোমবার সন্ধ্যায় অরবিন্দবাবু অভিযোগ করেন, ওই দিন দুপুরে কোকআভেন, অন্ডাল ও পাণ্ডবেশ্বর থানা থেকে তাঁকে ফোন করে ডেকে পাঠানো হয়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে। শহরের বহু মানুষ রয়েছেন আমার সঙ্গে। তাই আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে তৃণমূল।’’ ওই দিন সন্ধ্যা থেকেই পুলিশের নাগাল এড়াতে অরবিন্দবাবু বেপাত্তা বলে দাবি তাঁর অনুগামীদের।

তবে আচমকা কেন এমন ‘ষড়যন্ত্র’-এর অভিযোগ? অরবিন্দবাবুর অনুগামীদের দাবি, শাসক দলের নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে ওই কাউন্সিলরের দীর্ঘ দিন ধরেই সাপে-নেউলে সম্পর্ক। এমনকী এক বার প্রকাশ্যেই অরবিন্দবাবু জানিয়ে দিয়েছিলেন, দলে দুর্গাপুরের বাইরের নেতাদের ‘খবরদারি’ তিনি কোনও ভাবেই মেনে নেবেন না।

তৃণমূল সূত্রের খবর, দুর্গাপুর পুরভোটে দলের তরফে অন্যতম প্রধান দায়িত্বে রয়েছেন আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তিনি জানিয়েছিলেন, তৃণমূলের কোনও নেতা ‘নির্দল’ হিসেবে দাঁড়াবেন না।

কিন্তু বেঁকে বসেন ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর অরবিন্দবাবু। কেন? তৃণমূল সূত্রে খবর, ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডটি ‘মহিলা’ সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় অরবিন্দবাবু চেয়েছিলেন, তাঁর স্ত্রী’কেই প্রার্থী করুক দল। কিন্তু তা হবে না আঁচ করেই, তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের কয়েক ঘণ্টা আগে ‘নির্দল’ হিসেবে স্ত্রী’র নামে মনোনয়ন তুলেছিলেন ওই কাউন্সিলর। একই পথে হেঁটে মনোনয়নপত্র তোলেন তৃণমূলে অরবিন্দবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত আরও কয়েক জন টিকিট না পাওয়া কাউন্সিলর।

এর পরেই শাসক দল নানা ভাবে ‘চক্রান্ত’ করে তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ অরবিন্দবাবুর। প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের পুরভোটে তৃণমূল টিকিট না দেওয়ায় ‘নির্দল’ হিসেবে দাঁড়িয়ে জেতেন অরবিন্দবাবু। পরে অবশ্য তৃণমূলে যোগ দেন। তার পরে একাধিকবার কারখানা মালিকদের সঙ্গে বিবাদ, মারধর, গোষ্ঠীকোন্দলকে কেন্দ্র করে গোলমাল-সহ নানা বিষয়ে অভিযোগ উঠেছিল ওই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। যদিও বিরোধীরা তখন অভিযোগ করে, শাসক দলের কাউন্সিলর হওয়াতেই পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি কখনও।

তবে অরবিন্দবাবুর অভিযোগ প্রসঙ্গে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি (দুর্গাপুর) উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই।’’ আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তার অবশ্য দাবি, ওই তিন থানায় অরবিন্দবাবুর বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা ও তোলাবাজির অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তাই তদন্তের জন্যই তাঁকে ডাকা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Councillor কাউন্সিলর
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE