Advertisement
০৪ মে ২০২৪

মেমারিতে হাতাহাতি তৃণমূলেই

শেষ দিকে বিডিও-র সামনে তৃণমূলের বহিরাগতরা নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে।

ব্লক অফিস চত্বরে লাঠি হাতে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। ইনসেটে, বিনয় কোঙারের মেয়ের বাড়িতে হামলায় ভেঙেছে কাচ। নিজস্ব চিত্র

ব্লক অফিস চত্বরে লাঠি হাতে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। ইনসেটে, বিনয় কোঙারের মেয়ের বাড়িতে হামলায় ভেঙেছে কাচ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেমারি শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৮ ০১:০৫
Share: Save:

মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় মেমারি ১ ব্লক অফিস শান্ত ছিল। একমাত্র এই ব্লকেই কোনও বাধা ছাড়া পঞ্চায়েতের সব আসনে প্রার্থী দিয়েছিল বিরোধীরা। কিন্তু স্ক্রুটিনির দিন লাঠি-উইকেট-হকির স্টিক হাতে তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের দাপটে ব্লক অফিসে ঢুকতেই পারল না বিরোধীরা। সিপিএমের অভিযোগ, প্রথম দফায় ব্লক দফতরে ঢুকতে দেয়নি তৃণমূল। পরে দলের প্রয়াত নেতা বিনয় কোঙারের মেয়ের বাড়িতে হামলা চালায় ওই দুষ্কৃতীরা। শেষ দিকে বিডিও-র সামনে তৃণমূলের বহিরাগতরা নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে।

জেলা প্রশাসনের হিসেবে, মেমারি ১ ব্লকের ২০৭টি আসনেই বিরোধীরা প্রার্থী দিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির ৩১টি আসনের মধ্যে ৩০টি আসনেও বিরোধীরা বিনা বাধায় ব্লক দফতরে গিয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছে। তাহলে স্ক্রুটিনির দিন এমন ছবি কেন? তৃণমূলের একাংশের দাবি, ওই ব্লকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্য কোন পক্ষ ব্লক দফতরে গিয়ে ‘পাহারা’দেবে তা ঠিক করতে পারেনি তৃণমূল। আবার ঐকমত্য হয়েও ‘পাহারা’ দেওয়ার কথা হলেও কেউ ব্লক অফিসে পা রাখেনি। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় জোটেনি। স্ক্রুটিনির দিনে তাই তৃণমূলের দু’গোষ্ঠীই ব্লক অফিসের বাইরে ও ভিতরে জমায়েত করেছিল।

তৃণমূলের এক নেতা বলেন, “দু’পক্ষই বহিরাগতদের নিয়ে এসেছিল। কেউ কাউকে চেনে না। বিডিও-র সামনেই বিরোধী দল বলে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। পরে গোষ্ঠীর নেতারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।”

তবে এই ঘটনার অনেক আগে, সকাল ৯টা থেকেই ব্লক দফতরের বাইরে লোকজন জড়ো হয়েছিল। বেশির ভাগ লোকের হাতেই ছিল লাঠি-কাঠ-হকির স্টিক ও উইকেট। ওই সব লোকেরা ট্রেন-ম্যাটাডর-পিক আপ ভ্যানে করে মেমারিতে এসেছিল। সিপিএমের অভিযোগ, ব্লক দফতরে ঢোকার সময় নিমো ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান কৃষ্ণেন্দু প্রধান-সহ বেশ কয়েকজনকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয় তৃণমূল। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সনৎ সিংহের অভিযোগ, “আমাদের দলের প্রয়াত নেতা বিনয় কোঙারের বাড়িতেও হামলা চালায় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। তাঁর বাড়ির কাঁচের জানলা ভেঙে গিয়েছে। ওই বাড়ি থেকে আমাদের মনোনয়নগুলি তৈরি হয়েছিল বলেই এই হামলা।”

যদিও সে কথা মানতে চাননি ওই ব্লকের তৃণমূলের বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ নিত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, “বিজেপি ব্লক দফতরের কাছে সশস্ত্র জমায়েত করেছিল। আমাদের এক নেতাকে মারধরও করে। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে কেউ কেউ ইট ছুঁড়েছিল। তাতেই সম্ভবত কাঁচের জানলা ভেঙে গিয়েছে।” বিজেপির নেতা সন্দীপ নন্দীর মন্তব্য, “আমরা সশস্ত্র জমায়েত করেছিলাম, আর পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখেছে! এর চেয়ে হাস্যকর কিছু হয়!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE