Advertisement
E-Paper

শৃঙ্খলা, পদ নিয়ে নীতি মানার নির্দেশ তৃণমূলে

বিজয়া সম্মিলনী ঘিরে একাধিক ব্লক, শহরে তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে এসেছে। দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। যা নিয়ে নেতৃত্বকে প্রশ্নের মুখেও পড়তে হচ্ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২২ ০৮:০১
চলছে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র

চলছে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র

দলে ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি মেনে চলতে হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সে কারণে রাজ্যের কয়েক জন মন্ত্রী সাংগঠনিক পদও হারিয়েছিলেন। পুজোর আগে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ব্লকের সভাপতিদের নামের তালিকা প্রকাশের পরে দেখা যায়, সব ক্ষেত্রে সে নীতি মানা হয়নি। বৃহস্পতিবার কাটোয়ার রবীন্দ্র ভবনে দলের জেলা স্তরের বৈঠকে ওই নীতি কার্যকরের উপরে জোর দিলেন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। দল সূত্রের খবর, এ দিন বৈঠকে জেলা সভাপতি নির্দেশ দেন, দলীয় নীতি অমান্য করে যাঁরা এখনও সরকারি ও দল, দু’টি ক্ষেত্রেই পদে রয়েছেন, তাঁদের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। একই সঙ্গে তিনি ব্লক কমিটি, জেলা কমিটি গঠন থেকে দলীয় অনুশাসন মেনে চলার বিষয়ে নির্দেশ দেন।

বৈঠক শেষে জেলা সভাপতি বলেন, “সবাইকে দলের নির্দেশ, অনুশাসন ও শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে, সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি স্তরে পদাধিকারীর উপরে দলের উপরতলার নজর রয়েছে, সেটাও স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ বৈঠকে প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে, দলের মহিলা সংগঠন পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রামে-গ্রামে যাওয়ার যে কর্মসূচি নিয়েছে, তার উপযুক্ত সমন্বয়ের জন্য ব্লক নেতৃত্বকে দায়িত্ব নিতে হবে। আবার মহিলা সংগঠনের মতো তৃণমূলের যুব সংগঠন ও শ্রমিক সংগঠনকেও পঞ্চায়েত ভোট সামনে রেখে জনসংযোগে নামার উপরে জোর দিতে বলা হয়েছে।

ব্লক ও শহরের সভাপতি ঘোষণার পরে মাসখানেক কেটে গেলেও, সেগুলির কমিটি এখনও গঠন হয়নি। জেলা সভাপতি এ দিন নির্দেশ দেন, সপ্তাহখানেকের মধ্যে ব্লক ও শহর কমিটি গঠন করে জমা দিতে হবে। রাজ্য কমিটির অনুমোদনের পরে তা কার্যকর হবে। তার পরে পঞ্চায়েত ধরে অঞ্চল কমিটি গঠন করা হবে। সে ক্ষেত্রেও ব্লকের সভাপতিরা যাতে নিজেদের ইচ্ছেমতো কমিটি গঠন না করেন, সে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, অঞ্চল কমিটি গঠনের জন্য জেলা কমিটির অনুমোদন প্রয়োজন। জেলা কমিটি গঠনের উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। সে জন্য প্রতিটি ব্লক থেকে দু’জন করে প্রতিনিধির নাম দেওয়ার কথা বলেন জেলা সভাপতি।

বিজয়া সম্মিলনী ঘিরে একাধিক ব্লক, শহরে তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে এসেছে। দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। যা নিয়ে নেতৃত্বকে প্রশ্নের মুখেও পড়তে হচ্ছিল। দলের একাংশের দাবি, এ দিন সভায় রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী তাঁর পছন্দের লোককে মন্তেশ্বরে ব্লক সভাপতি না করা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। এমনকী, তাঁর আপত্তি নিয়েও দল কিছু জানায়নি বলে আক্ষেপ করেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিন জেলা সভাপতি সাফ জানান, দলকে শৃঙ্খলাবদ্ধ ভাবে চলতে হবে, অনুশাসন মানতে। ব্লক সভাপতি ঘোষণা হয়ে গিয়েছে, এ নিয়ে আর কোনও বিভ্রান্ত হওয়ার জায়গা নেই। সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে।

তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, ২৩টি ব্লকের মধ্যে আটটি ও ছ’টি পুরসভার মধ্যে চারটিতে সভাপতি বদল করা হয়েছে। বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার (বিডিএ) চেয়ারম্যান কাকলি তা গুপ্ত, জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খানের মতো বেশ কয়েক জনকে ফের ব্লক সভাপতি করেছে দল। এ ছাড়া, কয়েক জন প্রধান দলের দায়িত্বে রয়েছেন। তাতে ‘এক পদ এক ব্যক্তি’ নিয়ম মানা হয়নি বলে দলের একাংশ অভিযোগ তুলেছে। সেই নীতি মানার ক্ষেত্রে দল কঠোর, এ দিন জেলা সভাপতি তা দাবি করেছেন। মেহেমুদ বলেন, “দল নির্দেশ দিয়েছে। সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’’ কাকলির দাবি, “আমার ক্ষেত্রে ওই নিয়ম প্রযোজ্য কি না, দলের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।’’ বর্ধমান ২ ব্লক সভাপতি পরমেশ্বর কোনারের বক্তব্য, “দলের নীতি মেনে আমি পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে শুক্রবারই পদত্যাগ করব।’’

Bardhaman TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy