প্রতীকী ছবি।
তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠক। তাতে ডাক মেলেনি দলের শিক্ষক সংগঠনের নেতা-নেত্রীদের। বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সংগঠনের শতাধিক সদস্য তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি, সরব হয়েছেন তৃণমূলের শিক্ষক নেতারাও।
সম্প্রতি তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব পশ্চিম বর্ধমানে নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার সেই কমিটিরই বৈঠক হয় আসানসোলে তৃণমূলের জেলা কার্যালয়ে। সেখানে দলের ছাত্র, যুব মহিলা, শ্রমিক সংগঠনের জেলা নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু ডাক মেলেনি শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের। এর পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শিক্ষক সংগঠনের কোনও সদস্য মন্তব্য করেন, ‘এই ঘটনায় দুঃখ ও হতাশা বেড়েছে’। এক জন পোস্ট করেন, ‘শিক্ষকদের এ ভাবে দূরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে কেন!’ অনেকে আবার এ-ও লিখেছেন, ‘এই অপমানের প্রেক্ষিতে এ বার আমাদের ক্ষমতাও দেখাতে হবে।’
‘পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি’র জেলা সভাপতি রাজীব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দলের মিছিল-মিটিংয়ে আমরা প্রথম সারিতে থাকি। বাড়ি-বাড়ি ঘুরে দলের প্রচার করি। অথচ, জেলার বৈঠকে আমরাই ব্রাত্য।’’ শিক্ষক সংগঠনের নেতৃত্বের একাংশের দাবি, জনমানসে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ‘আলাদা’ গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। দলের নেতারা শিক্ষকদের সামনের সারিতে রেখে ‘সুফল’ ঘরে তোলেন। রাজীববাবুর সংযোজন: ‘‘এ বার শিক্ষকদের অপমানের জবাব দেওয়ার সময় এসেছে।’’ ‘পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি’র জেলা সভাপতি হিমাদ্রিশেখর পাত্রও বলেন, ‘‘দলের সমস্ত শাখা সংগঠনের জেলা নেতৃত্বকে ডাক হয়েছে। শিক্ষক হিসেবে আমরা অপমানিত।’’
দুই শিক্ষক সংগঠনের হিসেব অনুযায়ী, তাঁদের সদস্য সংখ্যা প্রায় সাড়ে সাত হাজার। এই শিক্ষকেরা তৃণমূলের যে কোনও কর্মসূচি, ভোট-প্রচারে প্রথম সারিতেই থাকেন। তা হলে বিধানসভা ভোটের আগে বৈঠকে শিক্ষকদের ডাকা হল না কেন, কেনই বা তাঁদের প্রকাশ্যে এমন ক্ষোভপ্রকাশ, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে জেলার রাজনীতিতে। এর নেপথ্যে তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য নেতা অশোক রুদ্রকে আসানসোল পুর-প্রশাসকমণ্ডলী থেকে সরিয়ে দেওয়ার কোনও যোগসূত্র আছে কি না, জল্পনা রয়েছে তা নিয়েও। ঘটনাচক্রে, অশোকবাবুকে প্রশাসকমণ্ডলী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরে, তার প্রতিবাদে আসানসোলের রাস্তায় প্রায় এক হাজার শিক্ষককে মিছিল করতে দেখা যায়। সে ঘটনা তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব আদৌ ‘সুনজরে’ দেখেছিলেন কি না, তা নিয়েও চর্চা রয়েছে দলের অন্দরে। যদিও অশোকবাবু বলেন, ‘‘এ সব জল্পনা ঠিক নয়। শিক্ষকেরা নিজেদের মতো করে প্রতিবাদ করেছেন।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক জেলা নেতার দাবি, ‘‘শিক্ষকদের আমন্ত্রণ না জানানোটা ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’।’’ দলের জেলা সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায় শুধু বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। আগামী বৈঠকে শিক্ষকদের নিশ্চয় ডাকা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy