Advertisement
০৩ মে ২০২৪
বিতর্কে শিক্ষক

ছাত্রদের দিয়ে শৌচালয় সাফাই

স্কুলে শৌচালয় রয়েছে, কিন্তু তা পড়ুয়াদের ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ। বরং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে সেই শৌচালয় পড়ুয়াদেরই পরিস্কার করতে হয়!

এই ছবি নিয়েই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।

এই ছবি নিয়েই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়না শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৬ ০১:১২
Share: Save:

স্কুলে শৌচালয় রয়েছে, কিন্তু তা পড়ুয়াদের ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ। বরং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে সেই শৌচালয় পড়ুয়াদেরই পরিস্কার করতে হয়! বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি সামনে আসতেই বিতর্কের মুখে পড়েছেন রায়নার বেঁন্দুয়া প্রাথমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিলীপকুমার মুখোপাধ্যায়।

ঘটনার কথা শুনেই বর্ধমান সদরের মহকুমাশাসক (দক্ষিণ) অনির্বাণ কোলে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এমন কাজের জন্য দিলীপবাবু অবশ্য ক্ষমা চেয়ে রায়না ১ বিডিও-র কাছে মুচলেকা দিয়েছেন। অনির্বাণবাবু বলেন, “এক জন শিক্ষকের এমন অন্যায় মেনে নেওয়া যায় না। তাঁকে কারণ দর্শানোর চিঠি দিতে বলা হয়েছে।”

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ দিন বেলা পৌনে ১১টা নাগাদ প্রধান শিক্ষক বেশ কিছু ছাত্রকে স্কুলের শৌচালয় পরিস্কার করার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ না শুনে দু’জন ছাত্র বাড়ি চলে যায়, আর দু’জন ক্লাসে ঢুকে যায়। কিন্তু তৃতীয় শ্রেণির তিন ছাত্র বাপ্পা দাস, রাণা রায় ও নিমাই অধিকারী প্রধান শিক্ষকের নির্দেশ মতোই পরিস্কারে হাত লাগায়।

সোশ্যাল মিডিয়ার ছবিতে দেখা গিয়েছে, কেউ লাঠি হাতে, কেউবা ঝাঁটা হাতে শৌচালয় সাফাই করছে। এ দিন তাদের দু’টি শৌচালয় পরিস্কার করতে হয়। তদন্তকারী দলের কাছে ওই পড়ুয়ারা জানায়, প্রধান শিক্ষক বা অন্য শিক্ষকেরা প্রায়ই তাদের দিয়ে এমন কাজে কার্যত বাধ্য করায়। এক ছাত্রের কথায়, ‘‘আমরা কলতলা গিয়েছিলাম। সেই সময় প্রধান শিক্ষক আমাদের ৭-৮ জনকে বলে শৌচালয় পরিস্কার করতে হবে। বাকিরা স্যারের নির্দেশ না মেনে পালিয়ে যায়। আর আমরা কথা মতো কাজ করি।’’

এমন ঘটনায় অভিভাবকেরা রীতিমতো ক্ষুব্ধ। এঁদের অনেকের কথায়, “শুধু শৌচালয় পরিস্কার করানো নয়, স্যারদের মাথায় পাখা করানোরও নজির রয়েছে এই স্কুলে। বারবার বলেও কাজ হয়নি। বেশি বললে শিক্ষকরা উল্টে আমাদেরই ধমকায়। সে জন্য আমরাও আর সাহস করতে পারিনি।”

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিলীপকুমার মুখোপাধ্যায় অবশ্য এমন কাজের জন্যে ক্ষমাপ্রার্থী। তিনি বলছেন, ‘‘সে কথা বিডিওকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।” তিনি মুচলেকায় দু’জন ছাত্রকে দিয়ে শৌচাগার পরিস্কার করানো কথা জানিয়েছেন।

বর্ধমান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি অচিন্ত্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শৌচালয়টি শিক্ষকেরাই ব্যবহার করছিলেন। প়ড়ুয়ারা সেটি ব্যবহার করতে পারত না। জেলা স্কুল পরিদর্শককে (ডিআই) বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্টে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষকের শাস্তি অনিবার্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Toilet Student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE