জোতগ্রামের চেকপোস্টে ভাঙচুর। —নিজস্ব চিত্র।
চেক পোস্ট দেখেই গতি বাড়িয়ে দিয়েছিল ট্রাকটি। বারবার থামতে বলা সত্ত্বেও টোল দেওয়া এড়িয়ে লোহার ডিভাইডারে ধাক্কা দিয়ে এগিয়ে যায়। গাড়ি নিয়ে তাড়া করেন চেক পোস্টে পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা। নিমেষে একটি মোটরবাইককে ধাক্কা মেরে বেরিয়ে যায় ট্রাকটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মোটরবাইকের চালকের। পরে উত্তেজিত এলাকার মানুষজন ভাঙচুর চালায় দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপরে জোতগ্রামের ওই চেকপোস্টে। ভাঙচুর করা হয় একটি বাসও।
পরে এসডিপিও (বর্ধমান সদর) সৌমিক সেনগুপ্ত পুলিশ বাহিনি নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। অভিযোগ, পুলিশকেও তাড়া করেন এলাকার একাংশ বাসিন্দা। আধ ঘণ্টা মতো অবরোধ চলে জাতীয় সড়কের ওই অংশে। পরে পুলিশ লাঠি চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের তুলে দেয়। পুলিশের দাবি, ট্রাকটি দ্রুত গতিতে রাস্তার উল্টে দিক দিয়ে আসছিল। মোটরবাইকটি একেবারে সামনে এসে যাওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটে। চেকপোস্টের কর্মীদের অবশ্য দেখা মেলেনি। তাঁরা আতঙ্কে আগেই পালিয়ে যান। ফোনে পাওয়া যায়নি আরটিওকেও।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দ্রুত গতিতে যাওয়া ট্রাকের ধাক্কায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে ওই রাস্তায়। পরিবহণ দফতরের তরফেও নিয়মিত নজরদারি চালানো হয় না। যদিও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেআইনি বালিবোঝাই ট্রাক, লরির যাতায়াতে আশপাশের গ্রামের একাংশ বাসিন্দার ইন্ধন রয়েছে। এ দিনও পরিবহণ দফতরের তাড়া করা নিয়েই গোলমাল বাধে। সেই ক্ষোভেই ভাঙচুর চালানো হয়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, চেকপোস্টের ভেতরে সব কিছু লন্ডভন্ড। সমস্ত জানালার কাচ, কম্পিউটার, ফ্যান ভাঙচুর করা হয়েছে। এমনকী, ওই রাস্তা দিয়ে আসা বড়শূলগামী একটি বাস থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে বাসটিও ভাঙচুর করা হয়। বাস যাত্রী, বড়শূলের বাসিন্দা শেখ শওকত বলেন, ‘‘দূর থেকেই মনে হচ্ছিল গোলমাল চলছে। কাছে আসতে বাস থামিয়ে আমাদের নেমে যেতে বলেন স্থানীয় লোকজন। শুরু হয় বাস ভাঙচুর।’’ আর এক যাত্রী নিতাই মাঝিরও দাবি, ‘‘ট্রাকটি হঠাৎ করে গতি বাড়িয়ে দেওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রাকটি চেকপোস্ট পেরিয়ে যাওয়ার সময় জাতীয় সড়কের ধারের একটি গলি থেকে ওই মোটরবাইকটি নিয়ে দু’জন বেরোয়। আচমকা ধাক্কায় টাল সামলাতে না পেরে পাশের নয়ানজুলিতে পড়ে যায় মোটরবাইকটি। একটু এগিয়েই নিয়ন্ত্রণ হারায় ট্রাকটি। সেটিও ওই নয়ানজুলিতে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত ওই মোটরবাইক আরোহীর পরিচয় রাত পর্যন্ত জানা যায়নি। আর এক আরোহীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তবে ট্রাকটির চালক, খালাসির কোনও খোঁজ মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy